কোরবানির পশুবাহী যানবাহন রাস্তায় কেউ থামাতে পারবে না। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও থামাতে পারবে না। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলেই কেবল সেই যানবাহন থামানোর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে আজ রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক এক বৈঠকে এটিসহ একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সভার সিদ্ধান্ত জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সড়ক বা মহাসড়ক, নদী-কোথাও কেউ পশুবাহী যানবাহন থামাতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও থামাতে পারবে না। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য থাকলে সেটি ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, যদি কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ঘটে যায়, তাহলে স্থানীয় এসপি বা হাইওয়ের এসপিকে ফোন করলেই তিনি সেটির ব্যবস্থা নেবেন। পশুবাহী নৌযান ও যানবাহন পরিবহনের সময় জোরপূর্বক নির্দিষ্ট কোনো হাটে নিতে যাতে বাধ্য করা না হয়, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য পশুবাহী যানবাহনে ব্যানারে লেখা থাকতে হবে কোন হাটে যাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এবার সারা দেশে ৪ হাজার ৩৯৯টি কোরবানির হাট বসবে। কোরবানির পশুর হাট ঘিরে এবং ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখী মানুষের চলাচলের বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বৈঠকে।
এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড় ও কোরবানির হাটে ওয়াচ টাওয়ার বসানো, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, সড়ক-মহাসড়কে কোনো হাট যাতে না বসে তার ব্যবস্থা এবং কোরবানির পশুর হাটে হাসিলের সাইনবোর্ড দৃশ্যমান রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের পাশাপাশি সাদাপোশাকে গোয়েন্দা বাহিনীও থাকবে। সেখানে জাল নোট শনাক্তকরণ যন্ত্র ও এটিএম বুথ বসানো হবে। বাস, লঞ্চ টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও ফেরিঘাটে গোয়েন্দা সংস্থা সতর্ক অবস্থায় থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ২৪টি স্থান যানজটের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়ক, মহাসড়ক ও শহর এলাকায় যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় হাইওয়ে পুলিশ ও ব্যাটালিয়ন আনসার থাকবে। এ ছাড়া নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে না হয়, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঈদের ছুটির আগেই যাতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১৫ জুন পর্যন্ত বেতন ও উৎসব ভাতা দেওয়া হয়, সে জন্য মালিকপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর যানজট নিরসনে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেবে বলে মালিকপক্ষ সম্মত হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি এক দিন বাড়াতে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশকে যৌক্তিক মনে করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ছুটির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এটি প্রস্তাব। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা।