কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করছেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মী। পুরান ঢাকার নর্থ সাউথ রোড
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করছেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মী। পুরান ঢাকার নর্থ সাউথ রোড

রাজধানী

দুই সিটিতে ৪৪ হাজার টন কোরবানির বর্জ্য অপসারণ

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে ৪৪ হাজার ৬১ টন কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত তিন দিনে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হয়। এ তথ্য দিয়েছে দুই সিটির জনসংযোগ বিভাগ।

এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃপক্ষ ৫ হাজার ৩১৯ ট্রিপের মাধ্যমে ২৩ হাজার ৯৫৬ টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিন গতকাল সংস্থাটি ৮৩৭টি ট্রিপের মাধ্যমে ৩ হাজার ২৩৪ টন বর্জ্য অপসারণ করেছে।

এদিকে ৪ হাজার ১৭৭ ট্রিপের মাধ্যমে ২০ হাজার ১০৫ টন কোরবানির বর্জ্য অপসারণের কথা জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে গতকাল তৃতীয় দিনে ১ হাজার ১৪৯টি ট্রিপের মাধ্যমে সংস্থাটি বর্জ্য অপসারণ করেছে ৫ হাজার ৭৭২ টন।

এর আগে ঈদের দিন গত সোমবার পূর্বঘোষিত ছয় ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের দাবি করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ সিটিও জানায়, তাদের ঘোষিত নির্ধারিত সময়ের আগেই বর্জ্য অপসারণের কাজ শেষ হয়েছে। দক্ষিণ সিটির ঘোষণা ছিল ২৪ ঘণ্টার মধ্য বর্জ্য অপসারণের। শেষ করার কথা জানিয়েছে ১০ ঘণ্টার মধ্যেই।

এ বছর কোরবানির বর্জ্য অপসারণ নিয়ে মাঠপর্যায়ে দুই সিটির কর্তৃপক্ষের তৎপরতা ছিল। অতীতের যেকোনো বছরের তুলনায় বর্জ্য অপসারণের কাজে দুই সিটি কর্তৃপক্ষ তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী সফলতাও পেয়েছে। বিচ্ছিন্ন কিছু এলাকা ও অলিগলি ছাড়া মোটাদাগে রাজধানীতে কোরবানির পশুর বর্জ্য জমে থাকেনি।

দিনব্যাপী কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে সশরীর উপস্থিত থেকে বর্জ্য অপসারণ কাজ তদারক করেছেন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম। দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসও দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক এ কাজের তদারক করেছেন।

ঈদের পরদিন মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকার দুই সিটির বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে কোরবানির বর্জ্য জমে পচতে দেখা যায়নি। তবে কিছু কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে অল্প পরিমাণে বর্জ্য ফেলে রাখতে দেখা গেছে। গতকাল বুধবারও দুই সিটির কিছু এলাকায় একই চিত্র দেখা গেছে।

তবে সীমানাসংক্রান্ত অস্পষ্টতার কারণে রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী আবাসিক এলাকায় খালের পাড়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। বনশ্রী আবাসিক এলাকার ব্লক ডি ও ই-এর সংলগ্ন খালের পাশে দুই দিনের কোরবানির বর্জ্য জমে পচতে শুরু করেছিল। এতে দুর্গন্ধের কারণে দুর্ভোগে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা।

শেষে গতকাল সন্ধ্যার মধ্যে ওই অংশের বর্জ্য অপসারণ করে দক্ষিণ সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ। যদিও পরে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়, জিআইএস মানচিত্র অনুযায়ী এলাকাটি ঢাকা উত্তর সিটির আওতাধীন। তবে নগরবাসীর দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ ওই জায়গার বর্জ্য অপসারণ করেছে।

এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে জানানো হয়, বিষয়টি নজরে আসার পর দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগকে অপসারণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘এলাকা কোন সিটি করপোরেশনের আওতাধীন, তা নিয়ে দড়ি টানাটানি না করে ঢাকাবাসীকে স্বস্তি দিতে বনশ্রী খাল পাড়ের সেই বর্জ্য অপসারণ করুন।’

এর আগে ঈদের পরদিন ওই অংশে কোরবানির বর্জ্য জমে থাকার বিষয়টি ঢাকা উত্তর সিটিকে জানানো হয়েছিল। তখন উত্তর সিটি থেকে জানানো হয়, এলাকাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের।