‘ফ্যাসিবাদী বয়ান নির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা: একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। আজ রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে
‘ফ্যাসিবাদী বয়ান নির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা: একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। আজ রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে

গণমাধ্যম নতুন বয়ানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ ফেরানোর চেষ্টা করছে: মাহমুদুর রহমান

গণমাধ্যম এখন নতুন বয়ানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ ফেরানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেছেন, তারা (গণমাধ্যম) দেখানোর চেষ্টা করছে, শেখ হাসিনা খারাপ, তবে শেখ মুজিব ভালো ছিলেন। তারা শেখ মুজিবের একটি কাল্ট চরিত্র (ব্যক্তির প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা) এখনো টিকিয়ে রাখতে চায়।

রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদী বয়ান নির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা: একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন মাহমুদুর রহমান। ‘ডায়ালগ ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত এই সভায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও বক্তব্য দেন।

বক্তব্যে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার সমালোচনা করেন মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দুদিন আগে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম এমন একটি কলাম লিখলেন, যেটার মূল কথা এই যে শেখ মুজিব ভালো, কিন্তু শেখ হাসিনা খারাপ। কিন্তু শেখ মুজিব সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন, তিনি যদি শেখ হাসিনার মতো ১৫ বছর সময় পেতেন, তাহলে আরও ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট হতেন। কাজেই নতুন করে যাঁরা এসব কথা বলার চেষ্টা করছেন, তাঁরা আসলে নতুন করে ফ্যাসিবাদের পথ রচনা করছেন।’

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আগে দেশকে সংগঠিত করতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই। সেখানে জিয়াউর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর ইতিহাস বিকৃত করে মুজিব–বন্দনা শুরু করা হলো এবং শেখ মুজিবের শাসনামলে যে ফ্যাসিবাদের বীজ বপন করা হয়েছিল, তা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালে আমরা দেখলাম।’

ছাত্র–জনতার আন্দোলন ঘিরে কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কিছু গণমাধ্যম শিক্ষার্থীদের দুষ্কৃতকারী বলে একধরনের বয়ান তৈরি করেছিল। পাকিস্তান আমলে যে ভাষায় শিক্ষার্থীদের সাইট (উল্লেখ) করা হতো, ঠিক একই পদ্ধতিতে এই আন্দোলনে কিছু গণমাধ্যম শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারী হিসেবে দেখিয়েছে। মানে শিক্ষার্থীদের যে পাখির মতো মারা হচ্ছে, সেটিকে লেজিটিমাইজ করার একটি বয়ান তৈরি করা হয়েছিল।

গণমাধ্যমের প্রতি গত ১৫ বছরের ভূমিকা নিয়ে নিজস্ব অনুসন্ধান এবং নিজেদের ভুলগুলো চিহ্নিত করার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব। পরিস্থিতির উত্তরণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সাংবাদিকতাকে আমরা যদি ঠিক পথে আনতে চাই, তাহলে সব মত-পথের সাংবাদিকতাকে আমাদের ধারণ করতে হবে। সবাইকে তার জায়গাটুকু দিতে হবে।’

সভায় অন্যান্যের মধ্যে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বক্তব্য দেন।