বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের রূপান্তরে ২১ দফা সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সারা দেশের মানুষের সমর্থন নিতে উপজেলা পর্যায়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চালাচ্ছে সংগঠনটি। শিগগিরই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জ্বালানি রূপান্তরের ২১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দেবে ক্যাব।
আজ শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা জানান ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম। ‘জ্বালানি রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে সাহিত্য ও সংস্কৃতিজনদের দায় ও দরদ’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে ক্যাব। সংগঠনটি জানিয়েছে, ২০ নভেম্বর থেকে গণস্বাক্ষর শুরু হয়েছে, এটি ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চালু থাকবে।
এম শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি রপ্তানি ঠেকাতে জীবন দিয়েছে মানুষ। রপ্তানি ঠেকানো গেছে। তার বদলে দেশটা জ্বালানি আমদানির বাজারে পরিণত হয়েছে। শাসকদের মধ্যে দায় ও দরদ কোনোটাই ছিল না। জ্বালানি সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা যায়নি, অলিগার্ক (লুটেরা গোষ্ঠী) তৈরি করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা বলেন, রাজনীতি ছাড়া কোনো শিল্প হয় না। আর জ্বালানি তো মানুষের অধিকারের জায়গা, সেই জায়গা থেকে এটি নিয়ে ভাবতে হবে। সাহিত্যে বিভিন্ন সময় জ্বালানির বিষয়টা এসেছে। এটি নিয়ে লেখক, সংস্কৃতিজনেরা ভাবতে পারে। এটি যেন নিজেদের দায় থেকে আসে। তবে এটি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার মতো বিষয় নয়।
গবেষক ও লেখক গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, মানুষের জ্বালানি ‘খাসলত’ (অভ্যাস) পরিবর্তন করতে হবে। এতে জ্বালানি সাশ্রয় হবে। তরুণদের কাছে বেশি করে যেতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সবুজ জ্বালানি বাড়াতে কাজ করতে হবে, চীন এটি সম্ভব করে দেখিয়েছে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গবেষক ও সাংবাদিক কাজল রশীদ। এতে বলা হয় ইতিহাসের বাঁকবদলে দায় ও দরদ সবকিছুকে এগিয়ে নিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, সেটির বাস্তবায়নে দায় ও দরদ লাগবে। জ্বালানি রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে লেখক, কবি, সাহিত্যিকেরা এগিয়ে আসতে পারে।