অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

জুলাই অভ্যুত্থানকে জঙ্গি, হিন্দুবিরোধীদের ক্ষমতা গ্রহণ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে ভারত: উপদেষ্টা মাহফুজ  

বাংলাদেশে সংঘটিত জুলাই অভ্যুত্থান এবং গণতন্ত্রের জন্য এদেশে ছাত্র–জনতার সংগ্রামকে দ্ব্যর্থহীন চিত্তে ভারতের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘ভারত জুলাই অভ্যুত্থানকে জঙ্গি, হিন্দুবিরোধী ও ইসলামপন্থীদের ক্ষমতা গ্রহণ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আজ বুধবার নিজ ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া একটি পোস্টে মাহফুজ আলম এসব মন্তব্য করেন। ইংরেজিতে লেখা তাঁর পোস্টটি অনুবাদ করে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:  

ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক বিষয়ে

বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান এবং গণতন্ত্রের জন্য এদেশে ছাত্র-জনতার সংগ্রামকে দ্ব্যর্থহীন চিত্তে ভারতের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। এটি দিয়েই শুরু (নতুন সম্পর্কের) করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানকে এড়িয়ে নতুন বাংলাদেশের ভিত (রচনা করা হলে) দুই দেশের সম্পর্কের জন্যই ক্ষতিকর হবে।

বাংলাদেশের মানুষ আগের মতো নয়; তারা এখন ঐক্যবদ্ধ ও গৌরবান্বিত। তারা আমৃত্যু নিজেদের মর্যাদার জন্য লড়াই করবে।
মাহফুজ আলম, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা

এ বাংলায় ইন্দোফিলস (ভারতপ্রেমী) বা ভারতের মিত্ররা ভাবছেন, সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে এবং জুলাই অভ্যুত্থান ও ফ্যাসিস্টের (ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা) নৃশংসতা এড়িয়ে গেলে তাদের কিছুই হবে না। এটি একটি ভুল ধারণা। জনগণ সবকিছু দেখছে!

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জুলাই অভ্যুত্থানকে জঙ্গি, হিন্দুবিরোধী ও ইসলামপন্থীদের ক্ষমতা গ্রহণের মতো কিছু একটা দেখানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের প্রোপাগান্ডা (অপপ্রচার) ও উসকানি ব্যর্থ হচ্ছে।  

প্রায় দীর্ঘ দুই দশক পর কোনো সংশয় ছাড়াই গণতান্ত্রিক অধিকার উপভোগ করছে বাংলাদেশের জনগণ! সত্য উদ্‌ঘাটিত হয়েছে...মিথ্যা অপসারিত হবে। চিরতরে!

ভারতের পঁচাত্তর–পরবর্তী আখ্যান পরিবর্তন ও নতুন বাংলাদেশের বাস্তবতা উপলব্ধি করা উচিত। এটা পঁচাত্তর–পরবর্তী পরিস্থিতি নয়। জুলাই অভ্যুত্থান ছিল একটি গণতান্ত্রিক, প্রজন্মগত ও দায়িত্বশীল সংগ্রাম আর এ সংগ্রাম দীর্ঘদিন ধরে চলবে।

বাংলাদেশের মানুষ আগের মতো নয়; তারা এখন ঐক্যবদ্ধ ও গৌরবান্বিত। তারা আমৃত্যু নিজেদের মর্যাদার জন্য লড়াই করবে।

দিল্লি না ঢাকা—ঢাকা, ঢাকা!

ভারতের ‘৭৫–পরবর্তী আখ্যান পাল্টানো ও নতুন বাংলাদেশের বাস্তবতা উপলব্ধি করা উচিত। এটা ‘৭৫–পরবর্তী পরিস্থিতি নয়। জুলাই অভ্যুত্থান ছিল একটি গণতান্ত্রিক, প্রজন্মগত ও দায়িত্বশীল সংগ্রাম আর এ সংগ্রাম দীর্ঘদিন ধরে চলবে।

স্বদেশ না শাহাদাত!

বাংলাদেশকে একক অঙ্গের মতো ঐক্যবদ্ধ করতে এ দেশের প্রতিটি কোণে এসব স্লোগান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এ ঐক্যবদ্ধ, মর্যাদাপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে তার শত্রু বানানো ভারতের উচিত হবে না।

একাত্তর–পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছিলাম, কিন্তু এবার নয়!

আল্লাহ ভরসা!