চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটার আগে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। শিল্পে ব্যবহৃত অক্সিজেন উৎপাদনের এ কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ২৫ জন।
বিস্ফোরণের পর প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের কর্মকর্তার দেখা মিলেছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় কারখানা প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক আবদুল আলীম। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, বিস্ফোরণে তাঁদের ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপরও আহত ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহযোগিতায় মালিকপক্ষ সর্বাত্মক করছে, করবে। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর যেসব ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা সংস্কার করে দেওয়া হবে।
দেরি করে কারখানা প্রাঙ্গণে উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থাপক আবদুল আলীম বলেন, তিনি অসুস্থ। অসুস্থতার কথা বলে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনও সাংবাদিকদের প্রশ্ন করতে বাধা দেন।
তবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল আলীম বলেন, কী কারণে দুর্ঘটনা, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। অক্সিজেন রিফুয়েলিং প্ল্যান্টে সচরাচর দুর্ঘটনা ঘটে না। কেন ঘটেছে, তা তাঁরাও বুঝতে পারছেন না। তাঁদের ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদপ্তরসহ সব সংস্থার ছাড়পত্র, সনদ নেওয়া ছিল।
২০১৮ সালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে অক্সিজেন প্ল্যান্টটা চালু করা হয় বলে জানান আবদুল আলীম। শ্রমিকদের বিমা করা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মালিকপক্ষ ভালো বলতে পারবে। সাংবাদিকেরা একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকলে আবদুল আলীমের সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে কারখানা থেকে বের করে নিয়ে যান।
কারখানাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। বিস্ফোরণে কারখানার আশপাশের অন্তত এক বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। এমনকি বিস্ফোরণস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূর পর্যন্ত উড়ে যায় লোহার পাত। বিস্ফোরণে লোহার পাত আধা কিলোমিটার দূর পর্যন্ত উড়ে যায়। এ লোহার পাতের আঘাতে দুজন মারা যান। তাঁদের একজন সালাহউদ্দিন, অপরজন সামশুল আলম। সামশুলের বাড়ি জাহানপুরে। ঘটনার সময় তিনি কদমরসুলের একটি দোকানের ভেতরে ছিলেন। লোহার পাত দোকানের টিনের চালা ছিদ্র করে ভেতরে ঢুকে তাঁর মাথায় আঘাত করে। এতে তাঁর মৃত্যু হয়।