পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ অকার্যকর করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। আজ সোমবার দুপুরে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় সন্তু লারমা বলেন, পাহাড়ের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে রয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা-ভরসা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করা হয়। কিন্তু সেই পার্বত্য চুক্তি দীর্ঘ ২৭ বছর পরও মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে। দমন-নিপীড়নসহ নানা কারণে পাহাড়ি জনগণ হতাশ ও বিক্ষুব্ধ। তারা অধিকার চায়, মানুষের মতো মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, শরণার্থী পুনর্বাসনবিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান সুদত্ত বিকাশ চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রুæচৌধুরী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যাশৈহ্লা মারমা, চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়, বোমাং সার্কেলর প্রধান সাচিং প্রু চৌধুরী।
সভায় এ ছাড়া বক্তব্য দেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য কংজেরী চৌধুরী, পার্বত্য নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য নুরুল আলম, বম নেতা জোয়াম লিয়ান আমলাই, শিক্ষাবিদ নিরূপা দেওয়ান ও শিশির চাকমা। এর আগে অতিথিরা মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের ২৫ বছর পূর্তি উৎসবের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, পার্বত্য চুক্তিকে বানচাল করতে যড়যন্ত্র চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের এখনো বিধিমালা তৈরি হয়নি। তিনি আরও বলেন, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বিশেষ অধিকার সংরক্ষণে পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ ব্রিটিশ আমল থেকে কার্যকর রয়েছে। তাই কেউ এটিকে ইচ্ছা করলেই বাতিল বা সংশোধন করতে পারে না। এটি বাতিল বা সংশোধন করা হলে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে।
সভার প্রধান অতিথি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, পাহাড়ে সবস্থান নিশ্চিত করতে হলে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তাই রাগ-অভিমান না রেখে উভয় পক্ষকে পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ বাতিল করা এই অঞ্চলের মানুষ মানবে না। এটি যাতে বাতিল না হয়, সে বিষয়ে সোচ্চার থাকতে হবে।
১৯৯৭ সালের সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে ১৯৯৯ সালের ২৭ মে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে।