নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার নির্যাতনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। গতকাল ছড়িয়ে পড়লেও ভিডিওটি এক মাসেরও বেশি সময় আগের।
বুধবার রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে চরজব্বর থানার পুলিশ। এরপর রাতেই অভিযান চালিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত ৯ ব্যক্তিকে আটক করে থানা নিয়ে আসা হয়েছে। এর আগে, গত ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।
নির্যাতিনের শিকার নারী অভিযোগ করে বলেন, ১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামী শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি ভিক্ষা করে সংসার চালাতেন। তাঁর এক মেয়ের হার্টের সমস্যা থাকায় ৫০ হাজার টাকা দরকার ছিল। এ জন্য স্থানীয় কয়েকটি বাজারে ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকা জোগাড় করেন। ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরতে দেরি হলে স্বামী অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ তুলে প্রায় গালমন্দ করতেন। এভাবে পারিবারিক কলহ দেখা দিলে কিছুদিন আগে কাজের সন্ধানে তিনি ঢাকা চলে যান। পরে স্বামীর পরিবারের লোকজনের কথায় এলাকায় ফিরে আসেন।
গৃহবধূ অভিযোগ করে আরও বলেন, গত ১৩ আগস্ট রাতে তিনি শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে যাওয়ার পরপরই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন। এরপর ওই রাতে শ্বশুর, জা, ভাশুরের ছেলে, স্বামী ও তাঁর তাঁর হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালান।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ জানান, তিনি এতিম। তাঁর মা–বাবা, ভাই–বোন কেউ নেই। তাঁর খালাতো ভাইয়েরা তাঁকে লালনপালন করে বিয়ে দেন। খবর পেয়ে তাঁরাই তাঁকে উদ্ধার করে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ওই নারীর স্বামীর মুঠোফোনে কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউছার আলম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, গৃহবধূর হাত-পা বাঁধা একটি ভিডিওচিত্র তিনি পেয়েছেন। খবর হওয়ার পর রাতেই থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ছাড়া রাতে অভিযান চালিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত নয়জনকে আটক করে থানা নিয়ে আসা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।