রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

‘সুখবর’ দিতে পারেনি চীন

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে দীর্ঘদিন ধরেই ‘মধ্যস্থতা’ করছে চীন। তবে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে কোনো ‘সুখবর’ দিতে পারেনি দেশটি। এবার বান্দরবানসংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় থাকা হাজার পাঁচেক রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে চীনের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। এ সময় মন্ত্রী শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অবনতিশীল পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে উৎকণ্ঠা এবং প্রত্যাবাসন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি ঢাকা–বেইজিং সম্পর্ক নিয়েও কথা হয়েছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেছেন, চীনের রাষ্ট্রদূতকে তিনি বলেছেন মিয়ানমার–বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখায় প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা আছে। মিয়ানমার যাতে ওই রোহিঙ্গাদের ভেতরে নিয়ে যায়। কারণ, তারা সেখানে থাকলে একটা ভয় থাকে। তাদের শূন্যরেখায় রাখা যাবে না। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনা দূত আগে বলেছিলেন ‘সুখবর’ দেবেন। কিন্তু আজকের বৈঠকে তিনি কোনো সুখবর দিতে পারেননি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাঁকে (চীনের রাষ্ট্রদূত) বলেছি, আপনি বলেছিলেন, সুখবর দেবেন। জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, তিনি আশা করেছিলেন, কিন্তু এখনো কিছু হয়নি। তিনি শুধু বলেছেন, তারা (মিয়ানমার) এখনো এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে রোহিঙ্গাদের নেওয়ার জন্য, এটাই সুখবর।’

চীনের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রত্যাবাসনের জন্য যে চুক্তি হয়েছে, সে অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি মিয়ানমারের সামরিক সরকার। তারা (মিয়ানমার) রোহিঙ্গাদের ভেরিফিকেশনের (পরিচয় যাচাই) পর ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। মিয়ানমার এখন রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে স্বেচ্ছায় যেতে পারে, সে জন্য তারা রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করার কথা জানিয়েছে।

অবশ্য পরপর দুই দফায় তারিখ ঠিক করার পরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। ফলে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দিহান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রত্যাবাসনের দুই দফা চেষ্টা ভেস্তে যাওয়ায় প্রত্যাবাসনের পরবর্তী দিনক্ষণ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

রাখাইনে সংঘাতের জেরে বাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, চীনকে জানানোর পর পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। মিয়ানমারের দিক থেকে প্রায়ই বোমা আসছিল। সীমান্ত এলাকার লোক আতঙ্কে ছিল। সীমান্ত পরিস্থিতি মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে। পরে চীনের রাষ্ট্রদূতকেও বলা হয়েছে। চীনকে বলার পর বোমাবাজি কমে গেছে।