নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচারের অভিযোগগুলো সত্য কি না, নাকি সুদখোরের মতো কথাবার্তা, সেটা আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। আমি আদালত থেকে আদালতে যাচ্ছি। আমার কাছে তো কোনো উত্তর নেই।’
মানি লন্ডারিং মামলায় জামিন পাওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর চত্বরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এমন অভিযোগ আনতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তবে বিচারাধীন বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন মন্তব্য করতে পারেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছি, আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আনা হয়েছে অর্থ পাচারের অভিযোগ। আপনারা আমাকে বহুদিন থেকে চিনছেন। এই অপরাধগুলো আমার গায়ে লাগানোর মতো অপরাধ কি না, সেটা আপনারা বিবেচনা করবেন। আগে যে রকম বিবেচনা করেছেন।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক নন। সুদ যদি কেউ নিয়ে থাকেন, গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকেরা নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে, আমি সুদখোর। বহুবার এ কথা বলা হয়েছে, আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি। আমাকে যখন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়া হলো, তখন গ্রামীণ ব্যাংকের ৯৭ শতাংশ সদস্য ছিলেন এর মালিক। সুদ যদি গ্রহণ করে থাকেন, সেটি তাঁরা করেছেন। আমি কর্মচারী মাত্র। আমি গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক ছিলাম না। কাজেই আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে গরিবের রক্তচোষা। আমি এক কোটি গরিব মানুষকে ব্যাংকের মালিক বানিয়েছি। তাদের মালিকানা দিয়েছি। এটা তো সত্য। বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু বানচাল করেছি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকা বন্ধ করেছি। আপনারা সেটি গ্রহণ করেননি।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আজ যে অভিযোগ, সেই একই ধরনের অভিযোগ। আপনাদের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিলাম।’
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ২ জুন দিন ঠিক করেছেন আদালত।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে গত বছরের ৩০ মে মামলাটি করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।