রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে গবেষণায়। এতে বলা হয়েছে, ইপিজেডের মাত্র ৩০ শতাংশ জায়গা ব্যবহার করে কমপক্ষে ৩৩৩ মেগাওয়াট অতিরিক্ত সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার সেন্টারে আজ শনিবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে। ‘বাংলাদেশে সোলার নেট মিটারিংয়ের সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নেট মিটারিং ব্যবস্থায় অযৌক্তিক প্রতিবন্ধকতা দূর করে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে হবে। সৌর উপকরণ আমদানির ওপর করের বোঝা কমানোর সুপারিশ করেছে তারা।
শিল্পকারখানার ছাদ ব্যবহার করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা এবং ওই শিল্পের চাহিদা পূরণের পর বাড়তি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘নেট মিটারিং’।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে গত ৭ বছরে মাত্র ১১০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ নেট মিটারিং পদ্ধতিতে যুক্ত হয়েছে, যার ৫৫ শতাংশ এসেছে বাণিজ্যিক ভবনের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সদস্য (বিদ্যুৎ) আবুল খায়ের মোহাম্মদ আমিনুর রহমান বলেন, ইপিজেড এলাকায় নেট মিটারিং বাস্তবায়নের জন্য হুইলিং চার্জের একটি অংশ যদি ইপিজেড কর্তৃপক্ষকে দেওয়া যায়, তাহলে উভয় পক্ষ লাভবান হবে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, তীব্র গ্যাস–সংকটের কারণে অনেক দিন ধরেই নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। তাই বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে হবে। সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নেট মিটারিং নিয়ে ব্যবসায়ীদের অতটা ধারণা নেই। কোনো ইপিজেড এলাকাতেই নেট মিটারিং ব্যবস্থা চালু নেই। এটি করা গেলে বিদ্যুতের ঘাটতি অনেকটা দূর হবে। এটি বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চালু করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ইশতিয়াক বারী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ইপিজেডগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে নেট মিটারিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা গেলে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা বাড়বে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
অনুষ্ঠান শেষে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভসহ ১২টি প্রতিষ্ঠান ও তরুণ সংগঠনের উদ্যোগে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সপ্তাহ (২৬ মে-১ জুন) বিষয়ক কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।