ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠা অধ্যাপকের স্থায়ী অব্যাহতির দাবিতে ক্লাস বর্জন করে চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে
ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠা অধ্যাপকের স্থায়ী অব্যাহতির দাবিতে ক্লাস বর্জন করে চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে

চবিতে ধর্ষণচেষ্টা: অধ্যাপকের স্থায়ী অব্যাহতির দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপককে স্থায়ী অব্যাহতির দাবিতে আন্দোলন চলছে। আজ মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা জানান, ওই শিক্ষককে স্থায়ী অব্যাহতি না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

আজ বেলা ১১টায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। বেলা দুইটায় এ কর্মসূচি শেষ হবে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে।

রসায়ন বিভাগের দুই ছাত্রী প্রথম আলোকে জানান, ওই অধ্যাপককে তাঁরা আর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে চান না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই অধ্যাপককে অব্যাহতি দিতে হবে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে ফৌজদারি আইনে মামলা করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের এ দাবি না মানা হবে, তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

গত ৩১ জানুয়ারি উপাচার্য শিরীণ আখতারকে চিঠি দিয়ে রসায়ন বিভাগের ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেন এক ছাত্রী। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নামেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এতে যোগ দিচ্ছেন। এর মধ্যে অভিযুক্ত এ অধ্যাপককে তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হেনস্তা, যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণচেষ্টার মতো ঘটনার বিচার হয় সাধারণ দুটি কমিটির মাধ্যমে। একটি অভিযোগ কমিটি, আরেকটি যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেল। কোনো ছাত্রী যখন অভিযোগ দিলে প্রথম তদন্ত অভিযোগ কমিটি করে। এ কমিটি অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নিয়ে যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর নিরোধ সেল প্রতিবেদন যাচাই–বাছাই করে শাস্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করে।

ধর্ষণচেষ্টার এ ঘটনা এখন অভিযোগ কমিটি তদন্ত করছে। জানতে চাইলে অভিযোগ কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের পরিচালক জরিন আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষাৎকার নিয়ে তাঁরা তদন্ত শেষ করেছেন। এখন অধিকতর যাচাই-বাছাই করছেন।

তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন কি না—জানতে চাইলে জরিন আখতার বলেন, প্রতিবেদন শেষ না করা পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন না। বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।