বেনজীরের স্ত্রী-সন্তানেরা বেলা ১টা পর্যন্ত দুদকে হাজির হননি

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ
ছবি: বেনজীরের ফেসবুক থেকে নেওয়া

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও সন্তানেরা আজ সোমবার বেলা ১টা নাগাদ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হননি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক তলব করলে দ্বিতীয় দফা সময় নিয়েও তাঁরা এখন পর্যন্ত হাজির হননি।

দুদক সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, বেনজীরের স্ত্রী জিশান মীর্জা ও দুই মেয়ের আজ দুদকে হাজির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ বেলা ১টা পর্যন্ত তাঁরা দুদকে আসেননি। বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় থাকলেও তাঁরা আসবেন বলে মনে করছে না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

গতকাল ২৩ জুন বেনজীরেরও দুদকে হাজির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনিও হাজির হননি।

২১ জুন দুদকের কাছে লিখিত বক্তব্য পাঠান বেনজীর। দুদক সূত্র বলছে, চিঠিতে সংস্থাটির জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হতে আর সময় চাওয়া হয়নি। এখন দুদক আর বেনজীর পরিবারের কাছে সম্পদের বিবরণী চাইবে না। সংস্থাটির অনুসন্ধানে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের যে বিপুল সম্পদ পাওয়া গেছে, তার ভিত্তিতে শিগগির মামলা করা হবে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল রোববার সংস্থাটির সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, বেনজীরের লিখিত বক্তব্য আমলে নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।

বেনজীর ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ২৮ মে তলব করে দুদক। বেনজীরকে ৬ জুন এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের ৯ জুন দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছিল।

৫ জুন বেনজীর আইনজীবীর মাধ্যমে ১৫ দিন বাড়তি সময় চেয়ে আবেদন করেছিলেন। ৪ জুন দুদকের কমিশনার জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বেনজীর না এলে ধরে নিতে হবে তাঁর কোনো বক্তব্য নেই।

দুদকের অনুসন্ধানে এখন পর্যন্ত বেনজীর ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে ঢাকায় মোট ১২টি ফ্ল্যাট, বিভিন্ন জেলায় ৬৯৭ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও ৩টি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) পাওয়া গেছে। এসব সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের ওই আদেশ আসার আগেই গত ৪ মে বেনজীর আহমেদ দেশ ছাড়েন।

বেনজীর ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও র‍্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র, যাঁদের মধ্যে বেনজীরের নামও ছিল।