নতুন মার্কিন ভিসা নীতি: ভারত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে

দুটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের পারস্পরিক বার্তা বিনিময় ও দ্বিপক্ষীয় সিদ্ধান্ত আরোপের মধ্যে তৃতীয় কোনো দেশের অবস্থান গ্রহণের প্রশ্ন ওঠে না। কারণ, সেটি নিতান্তই অনধিকার চর্চা বলে সাব্যস্ত হতে পারে। বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে ভারত তাই নীরব। তার ওপর এমন একটা সময়ে এই নীতি ঘোষিত হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র সফরের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী জোর কদমে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। এ সময় কোনোরকম প্রতিক্রিয়ারও তাই প্রশ্ন উঠছে না।

তবে যেহেতু বাংলাদেশ প্রতিবেশী ভারতের ঘনিষ্ঠতম নির্ভরযোগ্য বন্ধু, তাই এই ভিসা নীতির ভালো–মন্দ ও প্রতিক্রিয়া ভারতকে ভাবাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ঘিরে গড়ে ওঠা বিতর্ক ও সেই নিরিখে প্রতিবেশী বন্ধুদেশের সম্ভাব্য রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির ওপর ভারত তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখেছে।

ভারতের ভাবনা ও অস্বস্তির কাঁটা

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন নতুন ভিসা নীতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য পরিষ্কার করে বলেছেন, তাঁরা চান বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হোক। যাঁরা তা হতে দেবেন না, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে যাঁরা কাঁটা বিছাবেন, যুক্তরাষ্ট্র তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা দেবে না। মূল উদ্দেশ্য যেখানে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটানো, সেখানে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের বলার কিছুই থাকে না। আপত্তির তো প্রশ্নই নেই। কেননা যুক্তরাষ্ট্র যা কিছু করেছে ও বলেছে, তা গণতন্ত্রের স্বার্থে, গণতন্ত্রকে প্রকৃত অর্থে সর্বজনীন করে তোলার জন্য। ওই নতুন নীতি বাংলাদেশের কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল, সংগঠন বা মতাদর্শের বিরুদ্ধে, সে কথাও কেউ বলতে পারছে না। ভারতকে তাই আদৌ কিছু যদি বলতে হয়, তা গণতন্ত্রের পক্ষেই বলতে হবে। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে তা বলা সম্ভব নয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের কথায়, ‘ভারত সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে চলেছে।’

ভারতের পক্ষে বিষয়টি অবশ্য কিছুটা অস্বস্তিজনক। এর প্রথম ও প্রধান কারণ সম্পর্ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রায় দেড় দশক ধরে দুই দেশের বন্ধুত্বের বন্ধন ক্রমাগত দৃঢ় হয়েছে। পারস্পরিক নির্ভরতা বেড়েছে। তার প্রতিফলন ঘটেছে ব্যবসা, বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সর্বত্র। এই যে নেপালে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশ যাতে কিনতে পারে, সেই বন্দোবস্তে ভারত রাজি হলো, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে চুক্তি সম্পাদিত হলো, তার কারণও ওই বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা। সম্পর্কের সেই কারণে ২০১৪ ও ২০১৯–এর জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও বন্ধুত্বের হাত ভারত ছাড়েনি। এবার নির্বাচনের প্রাক্কালে নতুন ভিসা নীতির অস্বস্তির কাঁটা খচখচ করছে। কারণ, তা বোঝাচ্ছে, সে দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়ে চলেছে, তা আদর্শ গণতন্ত্রসুলভ নয়। মার্কিনদের দৃষ্টিতে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ না হলে আগের মতো তাকে এবারও মান্যতা দেওয়া কতটা যৌক্তিক ও সম্ভবপর, সেই চিন্তা এখন থেকেই সাউথ ব্লককে ঘিরে ধরতে শুরু করেছে। এক কূটনৈতিক সূত্রের কথায়, ‘চট করে কিছু বলার অবকাশ এ মুহূর্তে নেই। বিষয়টি শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের পক্ষেও গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে সরকার সচেতন।’

চাপে সরকার ও বিরোধী দুই পক্ষই

ঐতিহাসিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্র–বাংলাদেশ সম্পর্ক খুব একটা মাখো–মাখো কোনোকালে ছিল না। শেখ হাসিনার সঙ্গে তো নয়ই। শেখ হাসিনার বরাবরের ধারণা, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের মদদ ছিল। হত্যাকারীদের ঢাল হিসেবেও তারা থেকেছে। সেই ধারণার মতো এটাও বদ্ধমূল গেঁথে গিয়েছে যে মার্কিনরা বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। সে কথা শেখ হাসিনা নিজেই সম্প্রতি খোলামেলা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই নতুন ভিসা নীতি প্রণয়নের তাগিদ যে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা, আওয়ামী লীগ জোরের সঙ্গে তা বলতে পারছে না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি কোনো দল, সংস্থা, সংগঠন, সরকারি বিভাগ, প্রতিষ্ঠান বা নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে নয়। তারা শুধু বলেছে, যাঁরাই নির্বাচনের মতো সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধা দেবেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা হয়ে দাঁড়াবেন, তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা দেওয়া হবে না।

এর ফলে যা ঘটেছে, তা অভূতপূর্ব। ভারত আগ্রহ নিয়ে তা নিরীক্ষণও করছে। বাংলাদেশের শাসক ও বিরোধী—দুই শিবিরই এই সিদ্ধান্তকে তাদের পছন্দ অনুযায়ী ব্যাখ্যা করতে ব্যস্ত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের মতে, ‘তবে যে যেভাবেই ব্যাখ্যা করুক, এই নীতি ঘোষণার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করানোর বিরোধী দাবি কমজোরি হয়ে পড়তে পারে। ভোট বর্জনের যুক্তিও অসাড় হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শান্তিতে করানো তাঁর কর্তব্য। তিনি নিশ্চিতই ওই প্রতিশ্রুতি এর পরেও বারবার দিয়ে যাবেন।’ ওই সূত্রের কথায়, ‘তবে হ্যাঁ, নির্বাচন যে গ্রহণযোগ্য হবে, সে প্রমাণ শেখ হাসিনাকেই দিতে হবে। শুধু দাবি করলেই হবে না। দাবি যে অবিতর্কিত ও বিশ্বাসযোগ্য, তা প্রমাণের দায় তাঁর।’

যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয়তা ও একাধিক প্রশ্ন

নতুন ভিসা নীতি ‘রাজনৈতিক দল ও সরকারনিরপেক্ষ’ হলেও যুক্তরাষ্ট্র যে শেখ হাসিনা প্রশাসনের ওপর রুষ্ট, তার প্রমাণ তারা অনেকভাবে রেখেছে। ২০২১ সালে অল্প দিনের ব্যবধানে দুটি সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছিল। ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব)’ সাতজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তারা। পাশাপাশি বিশ্ব গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলনে পৃথিবীর ১১০টি গণতান্ত্রিক দেশকে আমন্ত্রণ জানালেও সেই তালিকায় তারা বাংলাদেশকে রাখেনি। অথচ পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী সরাসরি এই প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে যারা এত চিন্তিত, তারা কেন পাকিস্তানকে নিয়ে নীরব?’ এই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘যেকোনো কারণেই হোক যুক্তরাষ্ট্রের মনে এমন একটা ধারণা সম্ভবত গেড়ে বসেছে যে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ভোট হলে আওয়ামী লীগ হেরে যাবে। তাই তারা নতুন ভিসা নীতিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। এই নীতি হয়ে উঠেছে কূটনৈতিক হাতিয়ার।’

নতুন ভিসা নীতির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে উদ্বেগ ফুটে উঠেছে, শেখ হাসিনার উচিত তা নিরসন করা।
দেব মুখোপাধ্যায়, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার

একই যুক্তি একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত আরেক সাবেক হাইকমিশনার দেব মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরেও কি অনেক অভিযোগ ওঠেনি? উঠেছে। এবং সেগুলো এখনো অমীমাংসিত। মার্কিনরা যা করে সব সময় তা নিরপেক্ষ, অবিতর্কিত ও পক্ষপাতহীন কি? প্রতি ক্ষেত্রে তারা কি এভাবে প্রতিক্রিয়া দেয়, যেভাবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দিল?’ ভারতের প্রসঙ্গ টেনে দেব মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ভারতের গণতন্ত্র, মানবাধিকার কিংবা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সে দেশের বিভিন্ন সংগঠন সরব। কিন্তু ভারতের ক্ষমতা, পারস্পরিক সম্পর্ক ও সমীহের কারণে তাদের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত মৃদু। তারা জানে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যা করা যায় ভারতসহ আরও অনেকের ক্ষেত্রে তা করা যায় না।’ বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে সাবেক এই প্রবীণ কূটনীতিক মনে করেন, ‘নতুন ভিসা নীতির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে উদ্বেগ ফুটে উঠেছে, শেখ হাসিনার উচিত তা নিরসন করা।’

কূটনীতি, বাধ্যবাধকতা ও চীন

দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাংশেরও বিশ্বাস, শেখ হাসিনা তাঁর মতো করে এ অবস্থা থেকে নিশ্চয় বেরিয়ে আসবেন। এ মহলের এক সূত্রের কথায়, ‘কূটনীতির গতিশীলতা সব সময় এক রকম থাকে না। সম্পর্কে চড়াই–উতরাই থাকে। প্রাধান্য পায় পারস্পরিক স্বার্থ।’ ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের পূর্বতন হাইকমিশনার বীণা সিক্রি এই কথাই অন্যভাবে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশেরই দুজনকে প্রয়োজন। বাংলাদেশ জানে, তার রপ্তানির মূল অভিমুখ যুক্তরাষ্ট্র। তৈরি জামাকাপড়ের রপ্তানিতে তারা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। আমেরিকার সঙ্গে চমৎকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক খারাপ করে বাজার হারাতে মোটেই তারা আগ্রহী হবে না। বিশেষ করে ২০২৬ সাল থেকে মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে যখন তাদের প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে।’ তিনি বলেছেন, ‘এটাও মনে রাখতে হবে, চীনের ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ সম্প্রতি ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সন্তুষ্টির।’ বীণা বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, দুই দেশই এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো মজবুত। কূটনৈতিক দক্ষতাও যথেষ্ট। দুই দেশের মধ্যে বাক্যালাপও চলছে অবিরাম। কেউই চাইবে না নির্বাচনের প্রশ্নে সম্পর্ক তলানিতে নিয়ে যেতে।’

যুক্তরাষ্ট্রও কি চাইবে বাংলাদেশকে এতটা কোণঠাসা করতে, যাতে তাদের ওপর চীনের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়? এদিকে ভারতের দৃষ্টি বিশেষভাবে নিবদ্ধ। ভারত নিশ্চিতভাবেই চায় না, যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু করুক, যাতে চীনকে নিয়ে সাউথ ব্লককে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হয়। সরকারিভাবে কেউ কবুল না করলেও জনপ্রিয় বিশ্বাস, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার শেষ ওয়াশিংটন সফরে এই নীতি নিয়ে ভারত–যুক্তরাষ্ট্র মতবিনিময় হয়েছে। সব কুল যাতে রক্ষা হয়, সে জন্য ভারত তার মতো চেষ্টা করে যাচ্ছে।

নীতি প্রণয়ন সহজ, রূপায়ণ কঠিন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নতুন ভিসা নীতির রূপায়ণে যুক্তরাষ্ট্র কাদের ওপর কীভাবে নির্ভর করবে, সেই প্রশ্ন ও আগ্রহ একই সঙ্গে জাগছে। মনোহর পারিক্কর ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালিসিসের (আইডিএসএ) সিনিয়র ফেলো ও বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ স্মৃতি পট্টনায়ক মনে করছেন, ‘এই নীতি বাংলাদেশকে সতর্ক ও সাবধানী করে তুলবে। কারণ, তারা মোটেই চাইবে না যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুদেশগুলোও এই নীতি গ্রহণ করুক। কাজেই শুধু সরকার নয়, বিরোধী পক্ষকেও এই নীতি বেহিসাবি হতে দেবে না। নির্বাচন নিয়ে বিরোধী মহল যা যা করেছে, তা কিন্তু মোটেই গণতন্ত্রের সহায়ক নয়।’

বাংলাদেশ পর্যবেক্ষক ও জিন্দাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত মনে করছেন, ‘বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র এই চাপ রেখে যাবে। ভারতের ধারণাও মনে হয় তা–ই। তবে ভারত নিশ্চিত হতে চায়, চীন যাতে প্রয়োজনের বেশি গুরুত্ব না পায়। এই আখ্যানে চীনই ভারতের প্রধান উদ্বেগ।’ শ্রীরাধার মতে, ‘এই চাপ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে কিছুটা শুদ্ধ করে তুললে তাতে শেখ হাসিনাও সমালোচনা থেকে রেহাই পাবেন। কিছুটা বদল তাঁকে করতেই হবে। তাঁর বোঝা প্রয়োজন, সন্ত্রাসের মোকাবিলা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দৃঢ় করা ভিন্ন বিষয়।’ শ্রীরাধা বলেন, ‘এই নীতি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু একই সঙ্গে মনে করি, শেখ হাসিনাকে ঠিক করতে হবে সমালোচনা দূর করে তিনি কীভাবে চলবেন।’

ভারতীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়েছিল। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে সেনা পাঠানোর জন্য শর্ত ও অবশ্যকর্তব্যগুলো মনে করিয়ে দিয়েছিল। তাতে কাজ হয়েছে। ‘র‌্যাব’–এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকে গুম–খুনের ‘রাষ্ট্রনীতি’ ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগও কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পাওয়ার ভয় কি বাংলাদেশের নির্বাচনী আবহ শুধরে দেবে? ভারত আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে।