ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় রাজধানীর নীলক্ষেত ফাঁড়ির সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলায় তাদের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে আজ বিকেল সাড়ে চারটায় দেখা করতে চেয়েছিলেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। গতকাল সোমবার ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এ কথা বলার পরপরই শিক্ষার্থীদের সমস্যা-সংকট সমাধানে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ। পাশাপাশি তারা ছাত্রদলকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। ঘোষণা অনুযায়ী, আজ বিকেলে ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বিকেল ৪টা ২৮ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে ঢুকছিলেন সংগঠনের ৩০ থেকে ৩৫ নেতা-কর্মী। এ সময় স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে যান। ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গে তাঁর ধাক্কাধাক্কি ও তর্কাতর্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে উপাচার্যের জন্য ছাত্রদলের আনা ফুলের তোড়া ভেঙে ফেলেন ওই কর্মী। পরে এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল নেতা-কর্মী দৌড়ে এসে লাঠিসোঁটা ও স্টাম্প দিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের পেটাতে শুরু করেন। আরেকটি অংশ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করে। এতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চলে যাওয়ার পর নীলক্ষেত মোড়ে আসেন কবি জসীম উদদীন হল শাখা ছাত্রলীগ ও বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার পর এ দুই হলের নেতা-কর্মী ও এ এফ রহমান হলের নেতা-কর্মীরা নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ১৫ মিনিটের মতো ছাত্রদলবিরোধী স্লোগান দেওয়ার পর তাঁরা ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান।
ছাত্রলীগের এ হামলাকে ন্যক্কারজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
তবে ছাত্রদলের ওপর হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ছাত্রলীগের সব নেতা-কর্মীর মনোযোগ ছিল শিক্ষার্থীদের সমস্যা-সংকট সমাধানে প্রশাসনের সঙ্গে দর-কষাকষির দিকে। ছাত্রদলের সঙ্গে কিছু ঘটে থাকলে তা তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ।’