ধানমন্ডিতে সংঘর্ষে নিহত রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ
ধানমন্ডিতে সংঘর্ষে নিহত রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ

কোটা আন্দোলনে নিহত ফারহান

‘এমন জীবন গড়ো, যাতে মৃত্যুর পর মানুষ মনে রাখে’

‘একদিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। এমন জীবন গড়ো, যাতে মৃত্যুর পর মানুষ তোমাকে মনে রাখে।’ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ইন্ট্রোতে রেসিডেনসিয়াল মডেলে কলেজের ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ ইংরেজিতে এ কথা লিখেছিলেন।

ফারহান আজ বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত হয়েছেন। রেসিডেনসিয়াল মডেলে কলেজের ছাত্র ফারহান ফাইয়াজের আত্মীয় নাজিয়া খান। ফারহানের সঙ্গে হাসিখুশি একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘দিস ইজ মাই ফারহান ফাইয়াজ। হি ইজ ডেড নাও। আই ওয়ান্ট জাস্টিস (এই আমার ফারহান আইয়াজ। সে এখন মৃত। আমি ন্যায়বিচার চাই)।’

আজ আরেকটি পোস্টে নাজিয়া খান লিখেছেন, ফারহানের বয়স ১৮ বছরও হয়নি। ফারহানের জন্ম ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৬। সবাইকে প্রতিবাদী হওয়া এবং তাঁর (নাজিয়া) পোস্টটি শেয়ার করা জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নাজিয়া খান।

নাজিয়া খান আজ বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ফারহান তাঁর বোনের ননদের ছেলে। তবে পারিবারিকভাবে সম্পর্ক খুব ভালো। তিনি বলেন, ফারহানের লাশ হাসপাতালে আছে। পরিবারের সদস্যরা সেখানেই আছেন। কেউ এখন কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই।

ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের এইচএসসি ২৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফারহান। কলেজের শিক্ষক তারেক আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দুপুরে ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে ফারহান সানগ্লাস চোখে ছিল। তখনো ছেলেটা তাজা। সেখান থেকে চলে আসার ঘণ্টা দু-এক পরে ছেলেটার লাশ দেখতে হলো।’ আরেক পোস্টে লিখেছেন, ‘... হাসপাতালে লাশটা যখন দেখলাম, পা আর চলছিল না।

ফারহানের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেছেন “টেন মিনিট স্কুল”এর ইংরেজি শিক্ষক মুনিজেরিন শহীদ। লিখেছেন, তাঁর এই শিক্ষার্থী অনেক মেধাবী, আচরণ খুব ভালো ছিল। তার এভাবে মৃত্যু তিনি মেনে নিতে পারছেন না।’

‘টেন মিনিট স্কুল’–এর প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক ফেসবুকে ফারহানের সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট দিয়েছে লিখেছেন, ‘মাই স্টুডেন্ট ইজ ডেড (আমার ছাত্র মারা গেছে।’

ফেসবুকে কাশফিয়া আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, বাক্‌রুদ্ধ! ভাষাহীন! সকালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্র নিহত হলো। এখন নিহত হলো ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের এক ছাত্র। আমার ছেলের দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুজন। ছেলে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে বেরিয়ে গেল সতীর্থদের শেষবার দেখতে। এটা কোনো কথা! খুব সহজেই যার সমাধান হয়ে যেত, তার জন্য এত রক্তপাত! তা–ও আবার এমন তরুণ রক্ত! আর নিতে পারছি না সত্যি। দম বন্ধ হয়ে আসছে।