নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য কমিশনকে দলীয়করণের সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করে আমূল সংস্কারের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সর্বজনীন তথ্য অধিকার, তথ্যে প্রবেশগম্যতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংশোধনসহ ১৩ দফা সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি ও সুপারিশ করেছে টিআইবি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অতীতের তথ্য গোপনীয়তার সংস্কৃতি যেন কোনোভাবেই আর চর্চায় ফিরে না আসে। তথ্য অধিকারের সুফল জনগণ যেন বাস্তবিক অর্থেই পায়, সেই আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
সর্বজনীন তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে টিআইবির সুপারিশের মধ্যে রয়েছে বাক্স্বাধীনতা ও ভিন্নমতের অধিকার নিশ্চিতের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন করা; সব আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা দূর করা, বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো কালো আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট জনগণের ওপর ডিজিটাল নজরদারি কাঠামো নিশ্চিহ্ন করা; তথ্য কমিশনকে অধিকতর কার্যকর করার স্বার্থে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যোগ্য ও দলীয় প্রভাবমুক্ত ব্যক্তিদের কমিশনার হিসেবে নিয়োগ প্রদানসহ সংস্থাটি সম্পূর্ণভাবে ঢেলে সাজানো; তথ্য প্রকাশ ও তথ্যে অভিগম্যতার সুবিধার্থে ডিজিটাল মাধ্যম বা সরঞ্জাম ব্যবহার সহজলভ্য ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন; তথ্য অধিকার আইনের পরিপন্থী বিদ্যমান আইন সংস্কার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাতিল করা; নতুন কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকারের মূল চেতনার পরিপন্থী বা আইনটির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো ধারা যাতে সংযোজিত না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা; তথ্য অধিকার আইনে তথ্য প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রভৃতি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার অপচেষ্টার অন্যতম হাতিয়ার ছিল একদিকে বাক্স্বাধীনতা ও ভিন্নমত দমন, অন্যদিকে নিরেট মিথ্যাচার। টিআইবি বিশ্বাস করে, বাক্স্বাধীনতা ও তথ্যের অবাধ অভিগম্যতা নিশ্চিতের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে উদ্যোগী হবে।
আইনি প্রক্রিয়ায় তথ্য চেয়েও হামলা-মামলা, হয়রানি এমনকি জীবনের নিরাপত্তার ঝুঁকির শিকার হওয়াকে স্বাভাবিকতায় পরিণত করা হয়েছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেছেন, গোপনীয়তার সংস্কৃতি বর্জন করে স্বচ্ছতার চর্চা নিশ্চিতের অন্যতম উপায় হিসেবে তথ্য অধিকার আইনের যুগোপযোগী সংস্কার ও দলীয় প্রভাবমুক্ত তথ্য কমিশন গঠনে অনতিবিলম্বে অগ্রসর হতে হবে।