আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন উপলক্ষে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়
আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন উপলক্ষে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়

আলোচনা সভায় বক্তারা

পরিবার থেকে নারীর মর্যাদা দেওয়া শুরু করতে হবে

পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে এখনো নারীর প্রতি বৈষম্য রয়ে গেছে। বাল্যবিবাহ হচ্ছে। পরিবারে স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন নারী। শ্রমশক্তিতে নারীরা অনেক পিছিয়ে। নারীর সম–অধিকার নিশ্চিত করতে নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। পরিবার থেকে নারীকে মর্যাদা দেওয়া শুরু করতে হবে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস (৮ মার্চ) উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ‘নারীর জন্য বিনিয়োগ করুন: উন্নয়নে গতি আনুন’ প্রতিপাদ্যের ওপর আলোচনা হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক বলেন, নারী সমাজের অন্তর্ভুক্তি গণতন্ত্রকে সুসংহত করে। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। নারীকে বাদ দিয়ে কর্মক্ষম জনগণ তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই নারীর সুরক্ষায় সরকার নানামুখী কার্যক্রম নিয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের হুইপ সানজিদা খানম বলেন, নারীর জন্য সমতার পরিবেশ তৈরি করতে পরিবার ও সমাজে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। নিজেকে প্রগতিশীল দাবি করেন, এমন অনেক পুরুষ নারী দিবসে নারীকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর কথা বলেন। কিন্তু বছরের অন্য সময় নিজের ঘরের নারীর প্রতি সম্মান দেখান না। ঘর থেকে নারীকে সম্মান দেওয়া শুরু করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, নারীকে আত্মবিশ্বাসী ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে কন্যাশিশুর জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। পরিবার থেকেই নারীর জন্য বিনিয়োগ শুরু করতে হবে। সমাজের সম্মিলিত চেষ্টায় নারী এগিয়ে যেতে পারবে। নারীর উন্নয়নের জন্য সরকারের বাজেট বরাদ্দ রয়েছে। তবে অনেক সময় সেসব বাজেট যথাযথভাবে খরচ করা হয় না।

ফেরতও যায়। বরাদ্দ অর্থ যেন নারীর কাজে ব্যয় হয়, সেদিকে তদারকি বাড়াতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, বাংলাদেশের নারীরা এখনো অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে। পরিবারে স্বামীর হাতে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে এবং নারীর অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। নারীর প্রতি প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। নারীর প্রতি গতানুগতিক মানসিকতা বদলাতে গণমাধ্যম বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে কানাডীয় হাইকমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সেলর শিওভান কের। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। সঞ্চালনা করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সেমিনার, মিট দ্য প্রেস ও আন্তর্জাতিক লিয়াজোঁ উপকমিটির আহ্বায়ক এবং আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এপির ব্যুারোপ্রধান জুলহাস আলম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হাসান হাফিজ, যুগ্ম সম্পাদক মো. আশরাফ আলী, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ফরিদ হোসেন, কাজী রওনক হোসেন, শাহনাজ সিদ্দিকী, কল্যাণ সাহা, মোহাম্মদ মোমিন হোসেনসহ কয়েকজন।