তিন ব্যাংকে ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নে দেওয়া স্বতঃপ্রণোদিত রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগ বিষয়ে ওই রুল দেওয়া হয়েছিল।
আপিল বিভাগের গত ৫ ফেব্রুয়ারি দেওয়া এক রায়ের আলোকে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন। হাইকোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত রুল খারিজ চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের ওই রায়ের আলোকে স্বতঃপ্রণোদিত রুল খারিজ চেয়ে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম আবেদনটি করেছিলেন।
এর আগে ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ শিরোনামে ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘ইসলামী ব্যাংকের ৭২৪৬ কোটি টাকা ঋণের তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংক’ শিরোনামে একই বছরের ২৯ নভেম্বর ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে এবং ‘এস আলম গ্রুপ একাই আইবিবিএল থেকে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ঋণ তুলেছে’ শিরোনামে ৩০ নভেম্বর ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউএজে পৃথক প্রতিবেদন ছাপা হয়। এসব প্রতিবেদন নজরে এলে ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ অনুসন্ধান করে চার মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
স্বতঃপ্রণোদিত রুলে সম্প্রতি বিবাদী হিসেবে পক্ষভুক্ত হন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম। আদালতে তাঁর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানি করেন।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, এস আলম গ্রুপের বিদেশে সম্পদ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট এর আগে স্বতঃপ্রণোদিত রুল দিয়েছিলেন। এই রুল আপিল বিভাগ ৫ ফেব্রুয়ারি খারিজ করে রায় দেন। এই রুল এবং তিন ব্যাংকের ঋণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দেওয়া স্বতঃপ্রণোদিত রুল একই ধরনের। আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে স্বতঃপ্রণোদিত রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ থাকছে না। এর ভিত্তিতে অনুসন্ধান করা যাবে না।
অবশ্য দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, স্বতঃপ্রণোদিত রুল খারিজ হলেও ওই অভিযোগ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান করতে আইনগত কোনো বাধা নেই।