প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ। আজ ১০ আগস্ট
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ। আজ ১০ আগস্ট

প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিক্ষোভ

প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলকারীরা। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

‘দফা এক দাবি এক, বিচারপতির পদত্যাগ’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘সংস্কার সংস্কার’ ও ‘বিচার বিভাগ বিচার বিভাগ, পুনর্গঠন পুনর্গঠন’ এমন নানা স্লোগান উচ্চারণ করেছেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পরপর মিছিল নিয়ে তাঁরা বর্ধিত ভবনের সামনে জড়ো হন। এ সময় নানা স্লোগান দেন তাঁরা। এর মধ্যে বৃষ্টি শুরু হলে ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বৃষ্টি থামলে বর্ধিত ভবনের সামনের প্রাঙ্গণে আসেন। ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’ এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভকালে এক শিক্ষার্থী হ্যান্ডমাইকে বলেন, ‘আমরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করছি।’ দুপুর ১২টার দিকে একই স্থানে আরেক শিক্ষার্থী হ্যান্ডমাইকে বলেন, ‘এটি গণভবন নয়, সুপ্রিম কোর্ট। এখানে কেউ কোনো ধরনের ভাঙচুর, কোনো ধরনের জ্বালাও-পোড়াও করব না। আমরা শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতিকে একটা পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়েছি। তাঁদের বেলা একটার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। যদি না করেন, তাহলে...কঠোর কর্মসুচি দিতে বাধ্য হব।’

এরপর ছোট ছোট দলে মিছিল ও স্লোগান নিয়ে শিক্ষার্থীরা বর্ধিত ভবনের সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করেন। বর্ধিত ভবনের সামনে সেনাসদস্যদের গাড়ি দেখা যায়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গাড়িতে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডমাইকে একজন সেনাসদস্য বলেন, অনলাইন মিটিং (ফুল কোর্ট সভা) বাতিল করা হয়েছে।

সেনাসদস্য বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেন। সরকারের সম্পদ কেউ নষ্ট করবেন না। সরকারি সম্পদ আপনার সম্পদ, আমার সম্পদ। সেনাবাহিনী আপনাদের সার্বিক সহযোগিতায় নিয়োজিত রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের সহযোগিতার জন্য আপনারা সেনাবাহিনীর শরণাপন্ন হতে পারেন।

সেনাসদস্য একাধিকবার হ্যান্ডমাইকে এ ধরনের ঘোষণা দেন।

হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী নানা স্লোগান দেন। এর মধ্যে ছিল—‘সারা বাংলায় আওয়াজ তোলো, বিচার বিভাগ স্বাধীন করো’, ‘বীর বাঙালি আওয়াজ তোলো, বিচার বিভাগ স্বাধীন করো’, ‘সংস্কার সংস্কার, বিচার বিভাগ সংস্কার’, ‘সংস্কার সংস্কার, বাংলাদেশ সংস্কার’, ‘স্বৈরাচারের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ এবং ‘শহীদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’।

পরে বেলা দেড়টার দিকে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানানো হয়। বেলা দুইটার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান। বেলা আড়াইটার দিকে আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, পদত্যাগ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।