ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক্-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল আজ রোববার তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। সফরের দ্বিতীয় দিনে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর সঙ্গে আলাদা একাধিক বৈঠক করেছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ এবং নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ইইউর নির্বাচনসংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধানী দলটি গতকাল শনিবার ১৬ দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছায়। প্রতিনিধিদলটির মূল কাজ হবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয় মূল্যায়ন করা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, আজ ইইউর গণতন্ত্র ও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা রিকার্ডো শেলেরির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় ২৭ সদস্যদেশভুক্ত ইইউর আটটি দেশের দূতাবাস, যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচটি দেশের কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর সঙ্গে আলাদা মতবিনিময় করে। ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলির বাসায় এবং ইইউ দূতাবাসে এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে এসব বৈঠকের ব্যাপারে কূটনীতিকেরা কিছু বলতে রাজি হননি।
ইইউর প্রাক্-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের বৈঠকগুলোতে ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ইতালি, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্কসহ ইইউর ঢাকায় কর্মরত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীও বৈঠকে অংশ নেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ইইউর প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলটি সফরের তৃতীয় দিনে আগামীকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।
সফররত ইইউর প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবে। যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় রয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও ইইউ প্রতিনিধিদলের কয়েক দফা বৈঠকের কথা রয়েছে। ঢাকা সফরের পর প্রতিনিধিদলটি যে প্রতিবেদন দেবে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইইউ পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেল আগামী সেপ্টেম্বরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।
প্রসঙ্গত, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও সব অংশীজনের সঙ্গে ইইউ এবং সদস্যদেশগুলো নিবিড়ভাবে কাজ করছে। ইইউ বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের রাজনৈতিক অধিকারচর্চা এবং সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করছে।