ক্যানসারের আধুনিক রোগনির্ণয়ের সুবিধা ও চিকিৎসাসেবা চালু হলো বারডেম হাসপাতালে। ‘নেক্সট জেনারেশন সিকুয়েন্সিং’ বা এনজিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্যানসারের ডিএনএ এবং আরএনএ বিশ্লেষণ করে প্রথমে রোগনির্ণয় এবং পরে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে বারডেমে সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রথমবারের মতো ক্যানসার ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীতে বারডেম মিলনায়তনে (৩য় তলা) এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সহসভাপতি আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক এম এ হাই ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক এমকেআই কাইয়ুম চৌধুরী। ক্যানসার চিকিৎসায় এনজিএস সম্পর্কে বক্তব্য দেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ল্যাবরেটরি সায়েন্স ডিভিশনের পরিচালক অধ্যাপক এম শওকত হাসান এবং ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান ও চিফ রিসার্চ অফিসার মো. সোহরাব আলম। অনুষ্ঠানে দেশের ক্যানসার–বিশেষজ্ঞসহ দেশের খ্যাতনামা চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।
বারডেমে এনজিএস-ভিত্তিক বিআরসিএ-১ ও বিআরসিএ-২-এর মাধ্যমে স্তন ক্যানসার ও ডিম্বাশয় ক্যানসারের চিকিৎসা চালু রয়েছে। আন্তর্জাতিক নির্দেশিকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বর্তমানে ফুসফুস, কোলন ও প্রোস্টেটের মতো সলিড টিউমারের ক্ষেত্রে এনজিএস-ভিত্তিক ক্যানসার জিন প্যানেল পরীক্ষার প্রবর্তন করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ পরিস্থিতিতে লিকুইড বায়োপসির মতো অত্যাধুনিক পরীক্ষাও অবিলম্বে শুরু হবে। বারডেমে অত্যাধুনিক ক্যানসার চিকিৎসা ও রোগনির্ণয়ের সুবিধা থাকায় রোগীরা দেশেই উন্নত ক্যানসার চিকিৎসার সুবিধা পাবেন। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বর্তমানে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৩ থেকে ১৫ লাখ, যার মধ্যে প্রতিবছর প্রায় দুই লাখ নতুন ক্যানসার রোগী শনাক্ত হয়। পুরুষদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার এবং হেড-নেক ক্যানসার রয়েছে শীর্ষ স্থানে। মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসার ও জরায়ুর ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। দুঃখজনকভাবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্যানসার শনাক্ত হয় দেরিতে। এর মূল কারণ, দেশে উপযুক্ত রোগনির্ণয়ের সুবিধা না থাকা।