রাজধানীর নয়াপল্টনে গতকাল বুধবার পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সেখানে ২ লাখ বোতল পানি, ২৮০ বস্তা চাল, কত কিছু নিয়ে গেছে। যাতে দিনের পর দিন সেখানে থাকবে, খিচুড়ি পাক হবে এবং দেশ পাল্টে দেবে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা আবার ক্ষমতা নেবে, এ ধরনের স্বপ্ন তাদের ছিল।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল আওয়ামী লীগের এক প্রতিনিধি সভায় তিনি এ কথা বলেন। ১৩ ডিসেম্বর বাণিজ্য মেলার পুরোনো মাঠে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল সফল করতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে।
গতকালের ঘটনায় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে লাঠিপেটা করেছে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ শুনি বিএনপির পার্টি অফিস থেকে ককটেল ছোড়া হচ্ছে, ইটপাটকেল ছোড়া হচ্ছে। আমাদের পুলিশ আহত হচ্ছে, পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করছে। পুলিশ বাধ্য হয়েই আত্মরক্ষার্থে লাঠিপেটা করেছে, টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। এ সময় একজন পথচারী আহত হয়েছিলেন, পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মেডিকেলে মারা যান।’
পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, তারা যথাযথভাবেই বিএনপির কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে ১৫টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছে। আর ককটেলের আঘাতে অনেকের হাতে, পায়ে, মাথায়, চোখে স্প্লিন্টার ঢুকেছে। অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বিএনপির সমাবেশস্থল হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘মনে করছিলাম, বিএনপি সোহরাওয়ার্দীর বড় জায়গায়, বিশাল জায়গায়, লাখো লাখো লোকের সমাবেশ ঘটাবে। তাদের মনের কথা বলবে, তাদের দলের কথা বলবে, যা খুশি তাদের বলবে। কিন্তু সেখানে না গিয়ে মনে মনে চিন্তা করছে এবং বলাবলি করছে যে তারা আমাদের নেত্রীকে নাকি ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে (নয়াপল্টনে) বসে পড়বে। আর খালেদা জিয়া দেশ চালাবে কিংবা তারেক জিয়া। এটা অত্যন্ত হাস্যকর।’
গণমাধ্যম প্রসঙ্গে মন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘হাজার হাজার সংবাদপত্র প্রতিদিন ছাপা হচ্ছে, কোনোটিকেই আমরা গলা চেপে ধরি নাই। তারা যা ইচ্ছে লিখছে, আমরা কোনোটাই সেন্সর করি না। পৃথিবীর অনেক দেশ কিন্তু সেন্সর করে, আমরা করি না।’
বিজয়ের মাসে মানুষ স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদরদের উত্থান চায় না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ আর কোনো দিন অন্ধকারে ফিরে যাবে না। সবাই এখন আলোকিত বাংলাদেশ দেখতে চায়। দেশের মানুষের একটাই চাওয়া—শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনাই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপিকে জনগণের কাছে গিয়ে তাদের জন্য কাজ করার পরামর্শ দেন। তাহলে হয়তো জনগণ কোনো দিন তাদের ভোট দিতে পারে বলে তিনি মনে করেন।