সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট

দুই আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে চার সপ্তাহ মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না

বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি, অবস্থান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা ‘অবমাননাকর বক্তব্যের’ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুই আইনজীবীকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এই সময়ে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের কোনো বেঞ্চে (আদালতে) মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যদের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আদালত আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য দুই আইনজীবী হলেন মোহাম্মদ মহসীন রশিদ ও শাহ আহমেদ বাদল। দুই আইনজীবীকে ওই দিন আদালতে হাজির হতে হবে।

গত ২৭ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে ১ থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। আইনজীবীদের এই কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে ওই দুই আইনজীবীর ১ জানুয়ারি দেওয়া চিঠি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় গ্রহণ করে। পরদিন চিঠিটি প্রধান বিচারপতির সামনে উপস্থাপন করা হয়। চিঠিতে মহসীন রশিদ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও শাহ আহমেদ বাদল সদস্যসচিব বলে উল্লেখ করেন। চিঠির বিষয়টি উত্থাপিত হলে ৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আইনজীবীকে ওই বিষয়ে নিজেদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দিতে ১১ জানুয়ারি সকাল ৯টায় আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।

আদেশে বলা হয়, চিঠিতে কিছু অবমাননাকর স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) রয়েছে, যা রাষ্ট্রবিরোধী এবং সামগ্রিকভাবে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি, অবস্থান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।

আদেশ অনুসারে আজ সকালে আপিল বিভাগে হাজির হন দুই আইনজীবী। তাঁদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী সময়ের আরজি জানান। আদালত বলেন, সময় দেওয়া হবে।

এরপর আইনজীবী শাহ আহমেদ বাদলের উদ্দেশে আদালত বলেন, চিঠিটা পড়েন। এরপর চিঠি পড়া শুরু করেন তিনি। চিঠিতে লেখা কয়েকটি বাক্যের অর্থসহ ব্যাখ্যা জানতে চান আদালত। তিনি তাৎক্ষণিক সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। চিঠির অংশবিশেষ তুলে ধরে আদালত বলেন, মামলা মুলতবি করবেন, আইনজীবী অনুপস্থিত থাকলে মামলা খারিজ করবেন না। এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে—লিখেছেন। এভাবে বলতে পারেন? এগুলোরও ব্যাখ্যা দেবেন।

এরপর প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বেসরকারি একটি টেলিভিশনে ‘আদালত বর্জন’ নিয়ে মহসীন রশিদের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও বড় পর্দায় আদালত কক্ষে দেখানো হয়। আদালত বলেন, এ বিষয়েও ব্যাখ্যা দেবেন। পরে চার সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করে আদেশ দেওয়া হয়।