জামুকার সভায় অভিযোগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে
জামুকার সভায় অভিযোগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে

এক শিক্ষককে রাজাকার বানানোর চেষ্টা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার

ব্যক্তিগত কারণে ও সন্তানের পদোন্নতি ঠেকাতে বগুড়ার শিক্ষক প্রয়াত মতিয়র রহমানের বিরুদ্ধে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির অপচেষ্টা করেছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ওরফে মজনু।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) অনুসন্ধানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

প্রয়াত মতিয়র রহমানের সন্তান এ বি এম আরিফুর রহমান বর্তমানে মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যবস্থাপক।

গত ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত জামুকার ৮৬তম বৈঠকে অভিযোগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সম্মানী ভাতা প্রদান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি জামুকায় গিয়েছিলাম। তারা কীভাবে এমন মিথ্যা কথা বলল? আমি এখনো বলছি, মতিয়র রহমান স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন। এ বিষয়ে আমার কাছে তথ্য–প্রমাণ আছে।’

মুক্তিযোদ্ধা আজিজুলের অভিযোগের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি ও জামুকার সদস্য শাজাহান খান তদন্ত করেন। তদন্তের পর তিনি জানান, অভিযোগকারী আজিজুল ইসলামকে একাধিকবার নোটিশ ও খুদে বার্তা দিলেও তিনি শুনানিতে হাজির হননি। জমিজমার বিরোধের জের ধরে অসত্য অভিযোগ দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে শিক্ষক মতিয়র রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁকে রাজাকার বানানোর অপচেষ্টা করেছেন। উদ্দেশ্য প্রয়াত মতিয়রের ছেলের সরকারি চাকরিতে পদোন্নতি যেন না হয়।

শাজাহান খান বলেন, মতিয়র রহমানের বিরুদ্ধে আজিজুলের আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। বরং অভিযোগকারী হীন উদ্দেশ্যে গর্হিত অপরাধ করেছেন। মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের জন্য এবং সম্মানিত শিক্ষকের চাকরিজীবী সন্তানকে হয়রানি করায় তদন্ত কমিটি আজিজুলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একই সঙ্গে মতিয়রের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁর সম্মানী ভাতা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রয়াত মতিয়র রহমানের ছেলে এ বি এম আরিফুর রহমান সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা রাজাকার নন, স্বনামধন্য শিক্ষক। আমাকেও জামুকায় ডাকা হয়েছিল। আমাদের পরিবারের প্রতি হিংসামূলক ও আমাদের জমি অবৈধভাবে দখলের জন্য মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার পিতা মতিয়র রহমানকে রাজাকার বানানোর অপচেষ্টা এবং আমার চাকুরিতে পদোন্নতি বাধাগ্রস্ত করতে ভূমিদস্যু এই অপচেষ্টার আশ্রয় নেয়।’