উপহার দেওয়া—সর্বজনীন বিষয়, যা সব সংস্কৃতি ও ঋতুতেই বিদ্যমান। তবু বিশেষ দিবস বা উৎসব উপলক্ষে নারী-পুরুষ, মা-বাবা, বন্ধু-সহকর্মীরা পরস্পরকে নানা ধরনের উপহার দেন। আর উপহার হিসেবে ‘জুতা’ বাছাইয়ের পরিকল্পনা করলে ‘বাটা’ হতে পারে আস্থার জায়গা। কারণ, ব্যক্তির শখ ও আগ্রহকে প্রাধান্য দিয়ে বাটায় রয়েছে সমৃদ্ধ উপহারের কালেকশন। আসুন, উপহারের নানা বিষয়ে আলোকপাত করার পাশাপাশি কীভাবে যেকোনো উৎসবের জন্য আদর্শ উপহার নির্বাচন করা যায়, তা জানি।
উপহার হিসেবে জুতা কেন ব্যতিক্রম
জুতা উপহার মানে ভালোবাসা এবং যত্নের নিদর্শন, যা নির্ভর করবে দুটি জিনিসের ওপর। যাকে উপহার দেওয়া হচ্ছে, তিনি কতটা প্রিয় এবং জুতা পাওয়ার পর তিনি কতটা আনন্দিত হবেন। এবার দেখা যাক, জুতা কেন সব সময়ের জন্য ব্যতিক্রমী উপহার—
বাস্তবসম্মত
সব বয়সী এবং পেশার মানুষের জন্য জুতা পছন্দের এবং প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। এটি এমন এক উপহার, যা প্রায় প্রতিদিন ব্যবহার করা হয়। তাই প্রিয়জন থেকে প্রাপ্ত জুতা পায়ে থাকা মানে প্রতিটি পদক্ষেপে উপহারদাতার নামটি মনে করিয়ে দেওয়া।
স্টাইল বৃদ্ধিকরণ
সঠিকভাবে নির্বাচিত এক জোড়া জুতা ব্যক্তির স্টাইলকে করে উন্নত এবং বাড়ায় আত্মবিশ্বাস।
সেরা উপহারের ধারণা
প্রাত্যহিক অনুষঙ্গ হিসেবে জুতার বিকল্প হয় না। তাই বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা উৎসবে প্রিয়জনকে দেওয়ার জন্য পছন্দ আর বাজেটের সমন্বয়ে আদর্শ উপহার পাবেন বাটায়।
এখন জানা যাক, বাটার বাছাইকৃত কিছু কালেকশন সম্পর্কে—
প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য
প্রিয়জন যদি হয় প্রকৃতিপ্রেমী, যাঁর ভ্রমণের প্রতি প্রচুর আগ্রহ এবং ঘুরতে পছন্দ করেন, তাঁর অ্যাডভেঞ্চারগুলোকে উৎসাহ দিতে উপহার দিতে পারেন এক জোড়া হাইকিং জুতা। যেমন দুর্দান্ত বৈশিষ্ট্যসহ ‘বাটার ওয়েইনব্রেনার’ হাইকার বা ক্যাম্পপ্রেমীদের জন্য একটি অনবদ্য উপহার। এ ছাড়া ভ্রমণপ্রেমীদের উপহার হিসেবে দেওয়া যেতে পারে ব্যাকপ্যাক, সান প্রটেকটিভ হ্যাট, সব ঋতুতে উপযোগী সানস্ক্রিন, স্টাইলিস্ট সানগ্লাস, থার্মাল মগ, টাচস্ক্রিন গ্লাভস ইত্যাদি।
জিম বা ফিটনেসপ্রেমীদের জন্য
প্রিয়জন যদি শারীরিক ফিটনেস ধরে রাখতে পছন্দ করেন, তাঁর জন্য জগিং শু বা জিমের শু উপহার দিতে পারেন। এ ছাড়া দিতে পারেন স্পোর্টস শর্টস, টি-শার্ট, ফিটনেস এক্সপেন্ডার ব্যান্ড, স্পোর্টস ওয়াটার বোতল ইত্যাদি।
ফ্যাশনপ্রেমীদের জন্য
বাটায় বিকল্প অনেক উপহার আছে ফ্যাশনপ্রেমীদের জন্য। সেগুলোর মধ্যে ‘রেড লেবেল’ জুতা অন্যতম, যা প্রিয়জনকে উপহার দিলে তিনি আপনাকে মনে রাখতে বাধ্য। জুতা ছাড়াও যে উপহারগুলো দিতে পারেন—মধুর স্মৃতি সংরক্ষণে ফটো অ্যালবাম, ড্রাই ক্লিনিংয়ের জন্য ভাউচার, অবকাশযাপনের জন্য অভিজাত রিসোর্টে থাকার প্যাকেজ। এ ছাড়া বিউটি স্যালন বা প্যাম্পারিং দিয়ে প্রিয়জনের ফ্যাশন যাত্রাকে আরও উন্নত করতে পারেন।
স্নিকারহেড
এর বিশেষত্বের কারণে উপহারটা হতে পারে চমৎকার। বাটা স্নিকার শ্যাম্পু, ক্লিন ওয়াইপস, ওয়াটার রিপেলিং স্প্রে, জুতার ডিওডোরেন্ট, চামড়া এবং সোয়েড/নবাক পরিষ্কারের জন্য ক্লিনিং ব্লক ইত্যাদি উপহার হিসেবে বেশ প্রয়োজনীয়।
সঠিক জুতা বাছাইকরণ
প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার জন্য যদি জুতা বাছাই করেন, সে ক্ষেত্রে এই টিপসগুলো বিবেচনায় রাখা দরকার—
প্রিয়জনের স্টাইল ও সাইজ
প্রিয়জনকে জুতা উপহার দিতে দুটি জিনিস বিবেচনায় রাখতে হবে। প্রথমত, উপহারগ্রহীতা কোন ধরনের স্টাইল পছন্দ করেন। এ স্টাইলের মধ্যে রয়েছে জুতার রং, ডিজাইন, চামড়া না অন্য ধরনের জুতা পছন্দ ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, কোন সাইজের জুতা তাঁর জন্য ফিট করবে, সেটাও নিশ্চিত হতে হবে।
বিভিন্ন বয়সীর উপহার
ভিন্ন বয়সের কারও জন্য উপহার হিসেবে জুতা নির্বাচন করার সময় তাঁর বয়স বিবেচনা করতে ভুলবেন না। যেমন শিশুদের জন্য প্রাণবন্ত এবং আরামদায়ক জুতা আর কিশোর-কিশোরীদের জন্য ট্রেন্ডি, সাম্প্রতিক ফ্যাশন প্রবণতা এবং তাঁদের পছন্দের স্টাইল। আর এমন ডিজাইন করা জুতার কালেকশন রয়েছে বাটায়।
সঠিক জুতা চেনার উপায়
জুতা হলো ‘অ্যাঙ্করিং ডিভাইস’, যা আপনার পুরো ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করে। ভালো পোশাকের সঙ্গে সঠিক জুতা বাছাইয়ের অভাব ব্যক্তির বাহ্যিক সৌন্দর্যকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
যেকোনো পোশাকের জন্য উপযুক্ত স্টাইল, রং এবং জুতার আকৃতি সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে কিছু নীতি রয়েছে—
দেহের আকৃতি অনুসারে জুতা নির্ধারণ
দেহের আকৃতির ওপর নির্ভর করে জুতার বাছাইপ্রক্রিয়া। মনে রাখা জরুরি, পাতলা আউটসোলযুক্ত জুতা হালকা ফিগারের সঙ্গে ভালো মানায়। খণ্ড বা ভারী জুতাগুলো বড় ফিগারের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ।
সঠিক রং নির্ধারণ
জুতার ধরন নির্বাচন করার পর পরবর্তী পদক্ষেপটি হলো রং বাছাই করা। তাই সহজ নিয়ম হলো পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে জুতার রং বাছাই। আর জুতার রং মাঝেমধ্যে পোশাকের ধরন ও ঋতুর ওপরও নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, পেটেন্ট লেদার বা ডেনিমের সঙ্গে সোয়েড, শীতের পোশাকের সঙ্গে মখমল এবং গ্রীষ্মকালীন শর্টস এবং পোশাকের সঙ্গে স্ট্র্যাপি কিছু রঙের জুতা বাছাই করতে পারেন। যদি শৌখিন পোশাক পরে থাকেন, তাহলে এক জোড়া চামড়ার ফ্ল্যাট বা অক্সফোর্ড, পায়ের আঙুলের হিল বা লোফারের একটি মসৃণ জুতাসহ পরিমার্জিত জুতা পছন্দ করতে পারেন।
অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিল রেখে জুতা
উপলক্ষের ওপর নির্ভর করেও জুতা বাছাই করতে পারেন। সঙ্গে নজর দিতে হবে আউটলুকের দিকে। যদি পোশাক হয় ফরমাল, জুতা যেন ক্যাজুয়াল না হয়। আর কোনো অনুষ্ঠান যত বেশি আনুষ্ঠানিক, পুরুষদের জুতা হবে তত মসৃণ। আর নারীদের ক্ষেত্রে যাঁরা হিলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না, তাঁদের জন্য পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে ব্যালেরিনা এবং লোফার হতে পারে সঠিক বাছাই।
নির্দিষ্ট ড্রেস কোডের সঙ্গে জুতা
নির্দিষ্ট ড্রেস কোডের সঙ্গে পরতে হবে প্রতিষ্ঠানের নির্দেশিত জুতা। উদাহরণস্বরূপ, স্পোর্টস ট্রেইনার হলে স্মার্ট ড্রেস কোডের সঙ্গে সাদা চামড়া স্নিকার হবে স্মার্ট বিকল্প।
আরামের প্রতি প্রাধান্য
সবকিছুর মূলে রয়েছে ভালো লাগা। জুতাটি পরে পায়ে আরামবোধ করাটাই মুখ্য। অনেকের ক্ষেত্রে হাই হিলের জুতা পরে আরামদায়কভাবে হাঁটতে সমস্যা হয়। তাই নিচু হিল ব্যবহার করে দেখুন, যা আপনাকে হাঁটার আরামকে নিশ্চিত করবে।
ব্যক্তিগত স্টাইল অনুযায়ী জুতা বাছাই
ব্যক্তিগত ফ্যাশন ও স্টাইলকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে সঠিক জুতা বাছাই করতে হবে। তাই প্রচলিত ট্রেন্ডের সঙ্গে নিজের পছন্দগুলোর সংমিশ্রণ জুতা পরার অভিজ্ঞতাকে সবার সামনে অনুকরণীয় হিসেবে উপস্থাপন করতে পারে।
নিয়ম হয় পরিমার্জনের জন্য
দিন শেষে এক জোড়া আরামদায়ক জুতাই সঠিক বাছাই। তাই উপরিউক্ত নিয়মগুলো যে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই।
সুতরাং ফ্যাশন, সমসাময়িক ট্রেন্ড এবং ব্যক্তিগত রুচির সংমিশ্রণেই পছন্দ করা উচিত জুতা। সেটা হোক নিজের জন্য বা প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার জন্য।