শীত আসছে। এ সময় দেশে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ এবার শীতেও থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে
শীত আসছে। এ সময় দেশে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ এবার শীতেও থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে

অভিমত

বাজারের কম্বলে সব শীত ঢাকা যায় না

গ্রীষ্ম মৌসুম শেষেও এবার বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে এবার শীতের তীব্রতা কম হতে পারে। বাজারে কম্বল বা শীতবস্ত্রের চাহিদা কম থাকতে পারে। কিন্তু শীত কম হলেও বিপদ। বৃষ্টিপাতের কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ডেঙ্গুর প্রকোপ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকতে পারে। চীনের নতুন ধরনের নিউমোনিয়াও আশঙ্কা জাগাচ্ছে। 

আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিচ্ছেন, এবার নাকি শীত তেমন কনকনে হবে না।  আবহাওয়া অফিসের লোকজন অনেক আঁকিবুকি কষে শীত নিয়ে যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, তা অবশ্য অনেক আগেই খনা বলে গেছেন। প্রায় হাজার–বারো শ বছর আগে জিব কেটে দেওয়া এক মহীয়সী নারী খনা বলেছিলেন, ‘ঊন বর্ষায় দুনো শীত’ আর ‘দুনো বর্ষায় ঊন শীত’।

মনে করা হয়, ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল। কিংবদন্তি অনুসারে, তিনি বাস করতেন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাত মহকুমার বেড়াচাঁপার দেউলিয়া গ্রামে (বর্তমান চন্দ্রকেতুগড় প্রত্নস্থল, যেটি খনামিহিরের ঢিবি নামে পরিচিত)।

খনা বলেছিলেন, বড় বর্ষা হলে শীত কম হয় আর বর্ষা কম হলে শীত কড়া হয়। এবার  আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের (খনা অবশ্য ঘটা করে নাম রাখা কার্তিকের এসব ঝড়বৃষ্টিকে কাইতান বলেই সম্বোধন করতেন) সঙ্গে আসা জলীয় বাষ্পের কারণে বেড়েছে উষ্ণতা। তাই শীত কম পড়তে পারে।

গত বছরও শীত তেমন জমকালো হয়নি। গত বছরের ২০ জানুয়ারি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। কিন্তু পরের মাসে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত বছর শীতকালে তাপমাত্রার গড় স্বাভাবিকের চেয়ে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। তবে এবার শীতকালে উষ্ণতা গত বছরের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। গত ১২ নভেম্বর রাজধানীর একটি তারকা হোটেলে দেশের নেতৃস্থানীয় আবহাওয়াবিদেরা এবার শীত কেমন হবে—সে বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন।

আমরা দেখছি, ঘূর্ণিঝড়ের হাঁকডাক নিয়ে ছুটে আসা দু–দুটো ‘কাইতান’–এর (কার্তিকের ঝড়বাদল) পরেও শীত ঝেড়ে কাশেনি। চাদর কম্বলের বিক্রিবাট্টাও বাড়েনি। শীত এলেই চারদিকে কম্বল কম্বল রব পড়ে যায়। কোন সংস্থা কাকে কত কম্বল দিয়ে সামাজিক দায়িত্ব পালন করল, তার একটা নিকাশ চলে। খবর ছাপা হতে থাকে কম্বল নিয়ে কে মেয়র, মন্ত্রী  কিংবা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন। কাগজের পাতায় আবার কেউ প্রশ্ন করেন, কেন দিতে দেরি হলো? সংবাদের শিরোনাম হয়, ‘কোথায় গেল আমার কম্বল’ অথবা ‘কালোবাজারে সাদা কম্বল!’

কম্বল নিয়ে নানা মান–অভিমান, সেই সঙ্গে কম্বল বিতরণের ছবি ছাপা হতে থাকে পাতার পর পাতা। ছবিতে দেখা যায় ২০–২২ জন ধরে আছেন একটা কম্বল। ছবি ছাপার জন্যই যেন দান। এসব কাণ্ড এবার কম ঘটবে বলে মনে হচ্ছে। তবে ভোটার আনতে কম্বলের ব্যবহার একেবারে নাকচ করা যাচ্ছে না। কম্বলের মজুত যাঁরা করেছেন, তাঁরা কেউ তেমন বিপদে না–ও পড়তে পারেন।

তবে এ বছরের ‘গরম শীত’ কম্বলে নয়, অন্য কিছু দিয়ে আমাদের ঢাকতে হবে।

ডেঙ্গুর বিপদ কাটছে না

এই শীতেও ডেঙ্গু আমাদের ছাড়ছে না; বরং কাইতান আর অগ্রহায়ণের ঝড়বৃষ্টি আরও কঠিন পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ গত নভেম্বরের শুরুতে এমন আশঙ্কা থেকেই বলেছিলেন, বৃষ্টিপাতের পর দুই থেকে তিন সপ্তাহ ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে। আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ডেঙ্গুর উপস্থিতি আরও অন্তত এক সপ্তাহ থাকে। এই হিসাব অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, আগামী মধ্য ডিসেম্বরের মধ্যে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমে আসতে পারে।

তবে এ সময়ের মধ্যে আবার বৃষ্টিপাত হলে কিংবা ডিসেম্বর নাগাদ শীতের তীব্রতা শুরু না হলে, তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে, ধরে নিতে হবে ডেঙ্গুর বিপদ সহজে কাটছে না। নভেম্বরের পরেও বৃষ্টি হয়েছে বা হচ্ছে। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কোনো নামনিশানা নেই। বৃষ্টিপাতের সঙ্গে মাথাচাড়া দিতে পারে ডেঙ্গুর বিস্তার।

কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেছেন, বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গুর লার্ভা জন্মায়। আমরা জানি, এডিস মশার আয়ুষ্কাল অন্তত ৪০ দিন। সেই হিসাবে ধারণা করা যাচ্ছে, আরও কিছুদিন ডেঙ্গু আমাদের ভোগাবে। চল্লিশ দিনের হিসাব ধরলে, দেশব্যাপী গত তিন দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে ডেঙ্গু জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শক্তভাবেই রাজত্ব করবে।

মাসওয়ারি হিসাব বলছে, জানুয়ারিতে ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ২ জন, মে মাসে ২ জন, জুনে ৩৪ জন, জুলাইয়ে ২০৪ জন, আগস্টে ৩৪২ জন, সেপ্টেম্বরে ৩৯৬ জন, অক্টোবরে ৩৫৯ জন এবং নভেম্বরে ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবার ডিসেম্বরের প্রথম ৮ দিনে ২৮ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এ নিয়ে চলতি বছর দেশে ডেঙ্গু রোগে মারা গেলেন ১ হাজার ৬৫০ জন। হাসপাতালে মোট ভর্তি হয়েছেন ৩ লাখ ১৬ হাজার ৪১১ জন। তাঁদের মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৮ হাজার ৮১৮ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ২ লাখ ৭ হাজার ৫৯৩ জন ভর্তি হন। মনে রাখতে হবে, এবার নভেম্বরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ।

এসব তথ্য একমাত্র তথ্য নয়। আসল চিত্র আরও ভয়াবহ। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেনের কথাতেই সেটা ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা সরকারের দেওয়া হিসাবের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, এখানে কেবল তাদের গণনায় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে আবার সব হাসপাতালের তথ্য নেই।

জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শীতে ডেঙ্গু অন্য চেহারায় আসতে পারে। প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ইতিমধ্যেই চিকিৎসকেরা পরিবর্তিত আলামত লক্ষ্য করেছেন। সেখানকার চিকিত্‍সক অমিতাভ নন্দী বলেন, ডেঙ্গুর কিছু নতুন উপসর্গ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্লাটিলেট তেমন কমছে না। পেট খারাপ হচ্ছে না। র‍্যাশ দেখা যাচ্ছে না।

আরেক চিকিত্‍সক সৌতিক পান্ডা বলেন, গলায় কফ জমার উপসর্গের সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখের স্বাদ পাল্টে যাচ্ছে। কোভিডের মতোই শ্বাসকষ্টের সমস্যা আর যকৃতের জটিলতা দেখা যাচ্ছে। তাই এবার কম্বলের চেয়ে শীতে ডেঙ্গুর চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের বেশি ভাবতে হবে।

নতুন ধরনের নিউমোনিয়ায় উদ্বেগ

গরম কমলেই দেশে নিউমোনিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। শিশু আর বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হন। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি বেশ। তারপরও এখনো পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ নিউমোনিয়া।

কোভিডের সময় থেকে নিউমোনিয়া তার রূপ পাল্টাতে থাকে। সাবেক নিউমোনিয়াকে চেনা যাচ্ছিল না। কোভিডের প্রাদুর্ভাবের আগে ২০১৯ সালে রহস্যজনক নিউমোনিয়ায় অনেক প্রাণহানির খবর পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। গত নভেম্বরের শুরুতে চীনে কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক অচেনা নিউমোনিয়ার সংক্রমণ বেড়েছে।

এই নিউমোনিয়ায় কাশির উপসর্গ নেই বললেই চলে। প্রবল জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের প্রদাহ ও শরীরে ব্যথা হচ্ছে। চীনের রাজধানী বেইজিং ও লিয়াওনিং প্রদেশের শিশু হাসপাতালগুলোতে এই উপসর্গ নিয়ে অনেক শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।

এই নিউমোনিয়া সংক্রামক কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগ সেভাবে ছড়ায়নি। করোনার পর এই রোগ চীনে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বেজিংয়ের প্রশাসন জানিয়েছে, শহরের চিকিৎসাকেন্দ্রে শিশুদের মধ্যে ফ্লু, অ্যাডিনো ভাইরাস, রেসপিরেটরি সিনশিয়াল ভাইরাসের প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। তিয়ানজিন, সাংহাইয়েও শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে।

মধ্য নভেম্বরে চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, শিশুদের ক্ষতি করে, এমন মাইক্রোপ্লাজমার সংখ্যা কমলেও শিশুদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে এমন প্যাথোজেনের আবির্ভাব হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। চলতি শীত মৌসুম থেকে আগামী বসন্ত পর্যন্ত এই আশঙ্কা থেকেই যাবে। কম বয়সী শিশুদের গুরুতর সমস্যা হতে পারে।

চীনের প্রতিবেশী ভারত ইতিমধ্যেই নতুন নিউমোনিয়া নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। চীন–ভারত কোনোটিই আমাদের থেকে দূরে নয়।

উঁকি দিচ্ছে নিপাহ ভাইরাস

শীত ঘন হোক বা পাতলা—নিপাহ সংক্রমণ এখন আমাদের শীতের পিঠাপুলির মতো স্বাভাবিক হয়ে গেছে। গত জানুয়ারিতে রাজশাহী থেকে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্তের খবর আসে। রাজশাহীতে চিকিৎসকেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে পরীক্ষা করেছেন। সেভাবে পরীক্ষা হয়নি অথবা পরীক্ষার সুবিধা নেই বলে অন্য কোথা থেকে হয় তো খবর আসেনি।

দেশে প্রথম ২০০১ সালে নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয় মেহেরপুরে। ২২ বছরে দেশের ৩২টি জেলায় নিপাহ ভাইরাসের প্রায় ৪১টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। নথির বাইরেও ঘটনা থাকতে পারে। ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে সরকারিভাবে ৩২৫ জনের দেহে নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৩০ জনই মারা গেছেন।

উপজেলা এমনকি জেলা পর্যায়েও নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। একজন সদ্য সাবেক সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ‘সন্দেহ হলে বা খেজুরের রস পানের ঘটনা জানলে আমরা দেরি না করে রোগীকে রেফার করে দিই।’

নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণের সঙ্গে অন্যান্য স্নায়ু ও স্নায়বিক রোগের আলামতগত মিল থাকায় মাঠপর্যায়ের অনেক চিকিৎসকের পক্ষে চট করে রোগটি ঠাহর করা সম্ভব হয় না। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে মাথাব্যথা, খিঁচুনি, গা ব্যথা, ঘাড় ও পিঠ শক্ত হওয়া, বমি বমি ভাব এবং গলাব্যথা হতে পারে।

এরপর আক্রান্ত ব্যক্তি প্রলাপ বকতে পারেন। এ ধরনের রোগী আলো সহ্য করতে পারেন না। কখনো কখনো অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। পরিস্থিতির অবনতি হলে হঠাৎ হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া অথবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

আমাদের অনেকের ধারণা, বাদুড়জাতীয় পাখির এঁটো খেজুর বা তালের রস অথবা ফল থেকে  নিপাহ সংক্রমণ ছড়ায়। সুতরাং এগুলো পান বা না খেলেই চলবে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, একজন সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে অন্তত পাঁচভাবে অন্য মানুষের মধ্যে এটি ছড়াতে পারে।

তাই খেজুরের রস থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি চিকিৎসা ও শুশ্রূষার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে মাস্ক পরা ও ব্যক্তিগত হাইজিন বজায় রাখা জরুরি। এ ক্ষেত্রে  সংক্রমিত ব্যক্তির পরিবারের সবাইকে অনেকটা কোভিডকালীন সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন।

নিপাহ ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে হলে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশার ক্ষেত্রে লাগাম টানতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বিকল্প নেই। (সূত্র: ট্রান্সমিশন অব হিউম্যান ইনফেকশন উইথ নিপাহ ভাইরাস, লেখক: স্টিফেন পি লুবি, এমিলি এস গার্লে এবং এম জাহাঙ্গীর হোসেন) ।

শীতকে নিরাপদ করতে হলে এসব তথ্যের কম্বলে দেশটাকে ঢাকার ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষককে খোলাসা করে জানাতে হবে, এ বছর তাপমাত্রার হেরফেরে কৃষির ওপর কী আসর পড়বে। কোন ফসল কেমন হতে পারে। এবার আলুর মড়ক রোগের আশঙ্কা কেমন।

আমের বোল কি সময়মতো আসবে? শজনে ফুলের খবর হবে কী? বালাইনাশকের কী দশা হবে?

তারকাখচিত হোটেল নয়, আবহাওয়াবিজ্ঞানীদের তথ্য খালাসের জায়গা হোক কৃষকের উঠান । সেটিই হবে শীত মোকাবিলার প্রধান কম্বল।

  • গওহার নঈম ওয়ারা লেখক ও গবেষক nayeem5508@gmail.com