কেউ কম শুনছেন, কারও কানের পর্দা ফেটে গেছে

প্রথম আলো ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সীমা অক্সিজেন লিমিটেড কারখানায় বিস্ফোরণে আহত ব্যক্তিদের অনেকে কানে ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছেন না। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কারও শ্রবণেন্দ্রিয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারও কানের পর্দা ফেটে গেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন লিমিটেড কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। এতে সাতজন নিহত এবং ২৫ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে এখন ১৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে বর্তমানে চারজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনেরই কানে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

মো. ফোরকান (৩৩) নামের এক রোগীর দুই কানের পর্দা ফেটে গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর মাথায়ও আঘাত রয়েছে।

ফোরকানের ছোট ভাই আইনুল হোসেন জানান, তাঁর ক্ষতগুলো শুকিয়ে আসছে এখন। তবে কানে কম শুনতে পান তিনি। দুই কানের পর্দা ফেটে গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এ জন্য নাক, কান, গলা বিভাগের চিকিৎসক দেখাতে বলেছেন।

একই বিভাগে চিকিৎসাধীন নারায়ণ ধর (৬৫) বেশি আঘাত পেয়েছেন মাথায়। এ ছাড়া সারা গায়ে ক্ষত রয়েছে। তাঁর কানসহ চোয়ালও ভারী হয়ে রয়েছে বলে জানান ছেলে শুভ ধর। তিনি বলেন, বাবার চোয়ালে প্রচণ্ড ব্যথা। কান ভারী হয়ে আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে শুভ বলেন, ‘হাসপাতালে যত দিন আছি, তত দিন সীমা অক্সিজেন লিমিটেড থেকে ওষুধপত্র ও খাবার দাবার দিচ্ছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের বলা হচ্ছে বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করতে। কিন্তু ওখানে গেলে তো আর খরচ দেবে না। তখন আমরা কী করব।’

মো. আরাফাত (২২) সীমা অক্সিজেনে কাজ করেছিলেন দুই বছর। তিনিও বাম কানে কম শুনছেন। ক্যাজুয়ালটি বিভাগে চিকিৎসাধীন আরাফাতের ডান হাত কেটে গেছে। গলায়ও ক্ষত রয়েছে। তাঁর ভাই জাহিদ হাসান বলেন, হাত ও গলার চিকিৎসার পর কানের চিকিৎসা করানো হবে তাঁর।

এ ছাড়া অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন রিপন মারাকও কানে শুনছেন না। তাঁকে ইতিমধ্যে হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়। একইভাবে শ্রবণশক্তি কমে গেছে আজাদ ও মোতালেবেরও।

মোতালেবের ভাইপো ফরিদুল ইসলাম বলেন, কোমরে বেশি ব্যথা পেয়েছে। এক কানেও কম শুনছেন। ওটার আলাদা করে চিকিৎসা করাতে হবে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের মধ্যে অনেকের কানে সমস্যা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।