মুন্সিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের কর্মী তারেক রহমান (২০), মুক্তারপুর ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী শাওন খান (২২) ও বিএনপি সমর্থক জাহাঙ্গীর মাদবর (৩৮)।
এঁদের মধ্যে জাহাঙ্গীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাঁর একটি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরের পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে মিছিল নিয়ে ওই এলাকায় যান। এ সময় পুলিশ তাঁদের সেখানে অবস্থান করতে নিষেধ করে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৮০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মিনহাজ উল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান ও পরিদর্শক মোজাম্মেল হক রয়েছেন। সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি কাজী সাব্বির আহমেদ এবং দৈনিক দিনকালের জেলা প্রতিনিধি গুলজার হোসেন আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে পাঁচ-সাতজনকে আটক করে পুলিশ।
বিএনপি নেতাদের দাবি, পুলিশের এক কর্মকর্তা তাঁদের কর্মসূচির ব্যানার ছিঁড়ে ফেলায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। মুহুর্মুহু ছোড়া কাঁদানে গ্যাস, গুলি ও রাবার বুলেটে তাঁদের ৫০-৬০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তবে পুলিশ দাবি করেছে, বিএনপি নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছে। এতে পুলিশের ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় বিএনপি কর্মীরা ইট ছুড়লে পুলিশ তাঁদের ওপর পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেলে আহত শাওনের বন্ধু নাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে শাওন অটোরিকশায় যাত্রী নিয়ে মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় যাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ চলছিল। একপর্যায়ে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট শাওনের মাথায় লাগে। প্রথমে তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতাল নেওয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে এখানে স্থানান্তর করা হয়।
ঢাকা মেডিকেলের আবাসিক চিকিৎসক রেজাউল করিম সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জাহাঙ্গীর মাতবরের নাকের হাড় ও দাঁত ভেঙে গেছে। এ ছাড়া তাঁর ডান চোখটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।