মহানগর

ট্রেন্ড এখন হাঁসের মাংস

শীতের হিমেল হাওয়া বইছে। এ সময়টায় নানা পদের পিঠাপুলির কদর বাড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় আরেকটা খাবারের চল বেড়েছে, আর তা হলো হাঁসের মাংস বা হাঁসভুনা। তেলে–ঝালে ভরপুর হাঁসের মাংস খেতে শুধু তরুণেরা নন, পরিবার–পরিজন নিয়েও অনেকে ছুটে যান বিভিন্ন রেস্তোরাঁয়। অবশ্য মাটির চুলায় ধোঁয়া ওঠা মাংসের স্বাদ নিতে যেতে হবে রাজধানীর পূর্বাচলে। শুধু মাংস খেলে কি চলে! সঙ্গে ছিটা রুটি, চাপটি, চিতই থাকা চাই। এর সবই পাবেন রাজধানীর ৩০০ ফিট সড়কের ময়েজ উদ্দিন চত্বর ও নীলা মার্কেটে। সঙ্গে বন্ধুবান্ধব, পরিবার নিয়ে ঘোরাঘুরিটাও সেরে আসা যাবে।

পূর্বাচল:

দোকানের নাম: জামাই-বউ পিঠাঘর, নীলা মার্কেট, সেক্টর-১, পূর্বাচল, ঢাকা।

দরদাম: এখানে মাটির চুলায় হাঁসের মাংস রান্না করা হয়। প্রতি বাটির দাম ২৫০ টাকা; ৫ টুকরা মাংস থাকে। ঝোল নেওয়া যাবে ইচ্ছেমতো।

মাংসের সঙ্গে কী খায়: রুমালি রুটি ৩০ টাকা, চাপটি রুটি ২০ টাকা, চিতই ২০ টাকা, চালের রুটি ৩০ টাকা।

পার্সেল নেওয়া যায়: দোকানে দোকানে আছে ওয়ানটাইম পাত্র। সেখানে বক্সও আছে। পার্সেল নেওয়া যাবে। আলাদা দাম রাখা হয় না। পরিমাণে বেশি নিতে হলে আগাম অর্ডার করা যাবে।

মাটির চুলায় রান্না হয় তেলেঝালে ভরপুর হাঁসভুনা। রাজধানীর ৩০০ ফিট সড়কের নীলা মার্কেটে

আর কী আছে: হাঁসের মাংস ছাড়াও মুরগি দেশি বা লেয়ার ভুনা। গরুর কালাভুনা আছে। এ ছাড়া ধনিয়া, শর্ষে, শুঁটকি, চিংড়ির মাথা, টাকি, আলু, পটোলভর্তা পাওয়া যাবে।

খোলা-বন্ধ: সপ্তাহের সাত দিনই খোলা থাকে। হাঁসের মাংস বিকেলে বেচাকেনা শুরু হয়। অন্য খাবার সারা দিনই পাওয়া যায়। সন্ধ্যার পর লোকসমাগম হয় বেশি। পূর্বাচল খোলা জায়গা, শীত আছে; সঙ্গে শীতের হালকা পোশাক নেওয়া ভালো।

যাবেন কীভাবে: রাজধানী থেকে যেতে প্রথমে কুড়িল বিশ্বরোডে যেতে হবে। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি দোতলা বিআরটিসিসহ বেশ কিছু বাস কুড়িল বিশ্বরোডে যায়। কুড়িল বিশ্বরোডে নেমে রিকশা বা অটোরিকশায় চড়ে সরাসরি যাওয়া যাবে।

যোগাযোগ: ০১৬১৩-৬৭০৯০৩

গরম গরম মিষ্টি: নীলা মার্কেটে ছোট ছোট ছাউনির নিচে কিছুদূর পরপরই দেখা মেলে গরম মিষ্টির দোকানের। চমচম, রসগোল্লা, বালিশ মিষ্টি, মালাই চপ, সন্দেশ, লেংচা, রাজভোগ—সবকিছুই আছে। দেড় কেজির বালিশ মিষ্টিও পাবেন এখানে। এখানে অনেকে শুধু মিষ্টি খেতেই আসেন।

আশপাশে বেড়ানো: নীলা মার্কেটের আশপাশে এখনো সেভাবে নগরায়ণ শুরু হয়নি বলে খোলা জায়গা অনেক। এখানে অনেকটা সময় কাটিয়ে আসতে পারেন। বিকেলে গেলে সড়কের পাশে লেকের ধারে বসতে পারেন। এ ছাড়া পাখির কিচিরমিচির, সবুজ গাছগাছালি ভালো লাগবে। আছে চায়ের দোকান। মাটির ভাঁড়ের চা ৫০ টাকা থেকে শুরু। 

দোকানের নাম: দি বাকের ভাই ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, নীলা মার্কেট, পূর্বাচল, ঢাকা।

দরদাম: মাটির চুলায় রান্না হয়। হাঁসের মাংস প্রতি বাটি ২৫০ টাকা। ৫ টুকরা মাংস থাকে।

সঙ্গে কী আছে: রুমালি রুটি ৩০ টাকা, চাপটি রুটি ২০ টাকা, চিতই ২০ টাকা, চালের রুটি ৩০ টাকা। এ ছাড়া সামুদ্রিক খাবার ও বাংলা খাবারও পাওয়া যাবে।

ভর্তা: ধনিয়া, শর্ষে, শুঁটকি, চিংড়ির মাথা, টাকি, আলু, পটোলভর্তা পাওয়া যায়।

মিষ্টি: নীলা মার্কেটে ২০-২৫টি মিষ্টির দোকান আছে। ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজির মিষ্টি এখানে বিক্রি হয়।

পার্সেল নেওয়া যায়: দোকানে দোকানে আছে ওয়ানটাইম পাত্র। সেখানে বক্সও আছে। পার্সেল নেওয়া যাবে।

আর কোথায় পাওয়া যায়: নীলা মার্কেটের উল্টো দিকে জয়বাংলা চত্বর ও ময়েজউদ্দিন চত্বরেও হাঁসের মাংসের দোকান আছে।

মিরপুর:

দোকানের নাম: দেশী আহার, মিরপুর-১০, ব্লক-বি, লেন-১৯।

মাংসের সঙ্গে খাবার: চালের গুঁড়ার ছিট রুটি, পরোটা।

দরদাম: রাজহাঁস, দেশি হাঁস ভুনা গ্যাসের চুলায় রান্না হয়। চার টুকরার দাম ১৫০ টাকা। ছিট রুটি ১০ টাকা।

অন্য খাবার: হাঁসের মাংস ও রুটি ছাড়াও এখানে চিকেন চাপ ১৩০ টাকা, প্যাচ পরোটা ২০ টাকা, সাধারণ পরোটা ১৫ টাকা ও আচারি খিচুড়ি ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে খিচুড়ি আর হাঁসের মাংসের প্যাকেজ ২০০ টাকা।

বন্ধ-খোলা: বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সপ্তাহের সাত দিনই খোলা থাকে।

যাবেন কীভাবে: মিরপুর-১০ নম্বর থেকে রিকশায় হোপ স্কুলের গলি বললেই নিয়ে যাবে।

যোগাযোগ: ০১৯৯৮-৬৩৯৭৫৫

আশপাশে আছে: বেশ কিছু ফাস্ট ফুড, ক্যাফে, রেস্তোরাঁ আছে। এসব দোকানে শাহি মুড়িভর্তা, মোমোসহ নানা রকম ফাস্ট ফুড পাওয়া যায়।

দোকানের নাম: হাসান মামার বিরিয়ানি হাউস, মিরপুর-২ থেকে ১০ নম্বর গোলচত্বরে যেতে রাস্তার পাশের ফুটপাতে।

কীভাবে রান্না হয়: হাঁসের মাংস চুই আর রসুন দিয়ে রান্না করা হয়। সঙ্গে সাদা ভাত, পোলাও আর ভুনা খিচুড়ি থাকে। পাঁচ পদের ভর্তা ফ্রি পাওয়া যাবে।

দরদাম: ভাত, পোলাও ও খিচুড়ির সঙ্গে ভর্তাসহ সব কটির প্যাকেজ মাত্র ২০০ টাকা।

আর কী পাওয়া যায়: হাঁসের মাংস ছাড়াও ভাত-পোলাও-খিচুড়ির সঙ্গে হান্ডি গরু ও গরুর কালাভুনা ২০০ টাকা, গরুর চুইঝাল ১৫০ টাকা, খাসির চুইঝাল ২০০ টাকা, গরুর লেজ-কলিজা ভুনা ২০০ টাকা, মুরগির রোস্ট ১২০ টাকা।

বন্ধ-খোলা: সপ্তাহের সব দিনই খোলা থাকে, রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৩টা-৪টা পর্যন্ত।

যাবেন কীভাবে: মিরপুর-২ শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ৪ নম্বর গেটের পাশে।

যোগাযোগ: ০১৬৪৮-১৫৬৩৩৭

মোহাম্মদপুর

দোকানের নাম: ক্যাফে ঝাল, নূরজাহান রোড (মোহাম্মদপুর গার্লস স্কুলের পাশের গলি)।

কী পাওয়া যায়: ২৫০ টাকায় হাঁসের মাংসের প্যাকেজ। এতে থাকে তিন–চার টুকরা মাংস আর তিনটি ছিট রুটি। মাটির পাত্রে হাঁসের মাংস দিয়ে ছিট রুটি পরিবেশন করা হয়। আলাদা করে ছিট রুটি ১৫ টাকা। চাইলে পার্সেল নেওয়া যাবে। এ ছাড়া ফুড অ্যাপে অর্ডার করা যাবে।

ফেসবুক: https://www.facebook.com/cafejhall/

যোগাযোগ: ০১৬৮৯–৪৩৫২৪৬

অনলাইনে হাঁসের মাংস, কলাই রুটি

হংস মাংস

কী কী পাওয়া যাবে: বাসায় রান্না করা দেশি পাতিহাঁস, বেইজিং হাঁস। ১ কেজির বক্সে ৯০০ গ্রামের মতো। ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে উবার কিংবা পাঠাওয়ের মাধ্যমে। ডেলিভারি চার্জ উবার-পাঠাওয়ে যা আসবে, তা-ই। অর্ডার নেওয়া হয় ডেলিভারির সময়ের ৬ থেকে ২৪ ঘণ্টা আগে। রান্না করা খাবার ডেলিভারি দেওয়া হয় ঢাকা সিটির ভেতরে।

দরদাম: এই অনলাইন কিচেনের উদ্যোক্তা লিজা আক্তার বলেন, ‘আমাদের দেশি হাঁসের মাংস ভুনা ১ হাজার ৪৮০ টাকা ১ কেজির বক্স। বেইজিং হাঁসের মাংস ভুনা ১ হাজার ১৮৫ টাকা ১ কেজির বক্স। প্রিমিয়াম প্যাকেজ মাথা, গলা, পা, পাখনা ছাড়া ২ কেজির বক্স ২ হাজার ৭৮০ টাকা।’

ফেসবুক: https://www.facebook.com/hongsomangso

যোগাযোগ: ০১৩৩৪-৩৩৪৪০২

হাঁস খাদক

ঘরোয়া উপায়ে বাটা মসলায় রান্না করা হাঁস ভুনা, সঙ্গে চালের রুটি।

দরদাম: প্যাকেজ ১-এ থাকবে বেইজিং হাঁসের মাংস ভুনা। হাড়-চামড়াসহ ৯০০ গ্রাম, ১ কেজির বক্সে, চালের রুটি ১০টি, দাম পড়বে ১ হাজার ৩৮০ টাকা।

প্যাকেজ ২-এ থাকবে দেশি হাঁসের মাংস ভুনা। হাড়-চামড়াসহ ৯০০ গ্রাম, ১ কেজির বক্সে, চালের রুটি ১০টি, দাম পড়বে ১ হাজার ৪৮০ টাকা

ফেসবুক: https://www.facebook.com/p/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%B8-%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%95-61568654050222/

যোগাযোগ: ০১৫৭১-৭০৮৩১৯

রিভার ফিস

দেশি পাতিহাঁস, রাজহাঁস, চীনাহাঁস জবাই করে, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করে ডেলিভারি দেওয়া হয়। ঢাকা নগরের ভেতরে ক্যাশ অন ডেলিভারি। ঢাকার বাইরে বাংলাদেশের যেকোন স্থানে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়। দেশি পাতিহাঁস পরিচ্ছন্ন করার পর প্রতিকেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় দেন তাঁরা। অবশ্য দাম উঠানামা করে।

ফেসবুক: https://www.facebook.com/123riverfish

যোগাযোগ: ০১৭১২–৮৯৮৭৩৬

কলাই রুটির আড্ডা

স্থান: ৩৯, পীরেরবাগ, মাইকের মোড়, ছাপড়া মসজিদের আগে, ৬০ ফিট, মিরপুর।

অনলাইন অর্ডার: কলাই রুটি বা চাপটি বা ছিট রুটির সঙ্গে হাঁসের যে প্লেটটি আপনার পছন্দ সেটি বেছে নিয়ে অনলাইনে অর্ডার করা যাবে।

ফেসবুক লিংক: https://www.facebook.com/profile.php?id=100064938964297

মোবাইল: ০১৬০১-৬০৫০৬১

পরামর্শ:

মাংস বেশি খাওয়া নয়

ইসরাত জাহান, পুষ্টিবিদ, স্পেশালাইজড গ্যাস্ট্রোলিভার কেয়ার, ধানমন্ডি

হাঁসের মাংসে প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এ ছাড়া সেলেনিয়াম, আয়রন, নিয়াসিনসহ অনেক খনিজ পদার্থ আছে। হাঁসের মাংস মাংসপেশির কর্মক্ষমতা ঠিক রাখতে সহায়তা করে, রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে। এই মাংস ত্বক ও চুল ভালো রাখে। স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। একসঙ্গে বেশি হাঁসের মাংস খেলে সমস্যা হতে পারে। হাঁসের মাংস চর্বিসমৃদ্ধ। এতে কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি ঘটতে পারে। যে কারণে হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই হাঁসের মাংস পরিমাণ মেনেই খেতে হবে।

জীবিত হাঁসও কেনা যাবে:

ময়মনসিংহ, শেরপুর, সিলেট ও কিশোরগঞ্জের হাঁস আসে পূর্বাচলের এই নীলা মার্কেটে। প্রতিটি বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। হাঁস চাইলে পরিষ্কার করে নেওয়া যাবে। সে জন্য প্রতিটি হাঁস পরিষ্কার করতে খরচ পড়বে ৫০ টাকা।

গন্ধ তাড়াতে:

পূর্বাচলে জামাই-বউ পিঠাঘরের মালিক গিয়াস উদ্দিন। ভাতিজা সেলিম মিয়া, ভাই পেয়ার আলী, শেলিনা আক্তারকে নিয়ে তাঁর ব্যবসা। তিনি জানান, শীতে হাঁসের তেল বেড়ে যায়। নাদুসনুদুস হয়। খেতেও ভালো হয়। তবে দেশি হাঁসের মজা বেশি। এখন যে চাষের হাঁস বা ফার্মের হাঁস, সেগুলোর স্বাদ কম। হাঁসের মাংসে গন্ধ থাকে, তাই আদা আর রসুন বাড়িয়ে দিতে হয়। তাহলে গন্ধ হয় না। এক থেকে দেড় ঘণ্টা কষাতে হয়।

রাজশাহী ও সিলেটে হাঁসের মাংস

রাজশাহী:

স্থানের নাম: রাজশাহী নগরের উপশহর এলাকায় একসঙ্গে তিনটি কালাই রুটির দোকান গড়ে উঠেছে। সারা বছরই ব্যবসা হয় এখানে। দোকানগুলো হলো কালাই হাউস, কালাই বাড়ি ও কালাই ঘর।

মাংসের সঙ্গে থাকে: এখানে হাঁসের মাংসের কালাভুনা, বেগুনভর্তা, ঝাল চাটনি দিয়ে কালাইরুটি পরিবেশন করা হয়। আবার নগরের তালাইমারী ফাতেমা রান্নাঘর, চাঁপাই হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টেও কালাইরুটি বিক্রি হয়। তবে এখানে কালাইরুটির চেয়ে অন্যান্য খাবার বেশি বিক্রি হয়। হাঁসের মাংস দিয়েই চলে দোকান।

দামদর: কালাইরুটি সাধারণত ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। ঝাল চাটনি ও বেগুনভর্তা ১০ টাকা করে; আবার কোথাও ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হয়। এক বাটি হাঁসের মাংস ১০০ টাকা, আধা বাটি ৬০ টাকায় বিক্রি হয়।

খোলা ও বন্ধ: সপ্তাহের সব দিনই খোলা থাকে। শুক্র, শনিসহ ছুটির দিনগুলোতে ভিড় থাকে বেশি। এসব দোকানে বিকেল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খাবার পাওয়া যায়।

যাবেন কীভাবে: রাজশাহী নগরের সাহেববাজার থেকে পিএন স্কুলের সামনে দু-তিন মিনিট হেঁটেই যাওয়া যাবে। তবে তালাইমারীতে যেতে ৩০-৪০ টাকা রিকশাভাড়া লাগবে। একই জায়গা থেকে উপশহরে গেলেও ভাড়া একই পরিমাণ লাগবে।

যোগাযোগ:

কালাই হাউস-০১৯৫৫-১০৪১৪০, চাঁপাই হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট-০১৭৬৪-৭৪৫২০৩,

চাঁপাইয়ের কালাই হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট-০১৭৭৫-১৮১১৫০, ফাতেমার রান্নাঘর-০১৭৯৬-০৩৬৭২৮।

রান্নার উপকরণ: হাঁসের মাংস ছোট ছোট টুকরা করে কেটে ধুয়ে রাখতে হয়। কেউ কেউ লেবু দিয়ে মেরিনেট করে রাখেন। হাঁসের মাংস রান্নায় একটু বেশিই মসলা দেওয়া হয়। আর শুকনা মরিচের ঝালও বেশি থাকে। চুলায় উপর্যুপরি তাপ দিয়ে রান্না করা হয়। এটিই রেখে রেখে জ্বাল দিলে কালাভুনায় পরিণত হয়।

আর কালাইরুটি তৈরিতে মাষকলাইয়ের প্রয়োজন হয়। সঙ্গে চাল বা গমের আটা পরিমাপমতো মিশিয়ে খামির তৈরি করা হয়। পরে ছোট ছোট বল করে পানি দিয়ে হাতের দুই তালুতে রেখে সেটি প্রসারিত করতে হয়। শেষে মাটি অথবা গ্যাসের চুলায় রেখে তাপ দেওয়া হয়। তবে রাজশাহীতে বেশির ভাগ জায়গায় কালাইরুটি করা হয় মাটির চুলায়। এটি গরম গরম খেতে ভালো।

সিলেট:

স্থানের নাম: সিলেট নগরের বিমানবন্দর সড়কের চৌকিদেখী এলাকার অরুনী কিচেন।

কী দিয়ে রাঁধে: এখানে হাঁসের মাংস ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী রান্না করে দেওয়া হয়। আলু, রসুন, চুইঝাল দিয়ে রান্না করা হয়। ব্যবহার করা হয় শর্ষের তেল।

মাংসের সঙ্গে খাবার কী থাকে: চাপটি রুটি, চালের রুটি, ভুনা খিচুড়ি, সাদা ভাত, সেদ্ধ রুটি, খিচুড়ি, পোলাও।

দাম: একটি পাতিলে সাধারণত ২০ টুকরা মাংস থাকে, দাম ১ হাজার ৪০০ টাকা। ১৬ টুকরা মাংস নিলে দাম ১ হাজার ১৫০ টাকা। ১০ টুকরা নিলে ৭২০ টাকা, ৩ টুকরা মাংস নিলে দাম পড়বে ২২০ টাকা। চুইঝাল মটকা হাঁস ১০ টুকরা মাংসের দাম ৯৫০ টাকা, রাজহাঁস ৪০ পিস ৩ হাজার ৪৫০। রাজহাঁসের ২০ টুকরা, ১০ ও ৩ টুকরা মাংসও পাওয়া যায়। মাংস রান্না হয় গ্যাসের চুলায়।

খোলা ও বন্ধ: সপ্তাহে সাত দিনই খোলা থাকে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত। করপোরেট অর্ডারের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড় আছে।

যাতায়াত: সিলেট রেলস্টেশন কিংবা কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সরাসরি চৌকিদেখী এলাকায় যাওয়া যায়। ভাড়া প্রায় ২০০ টাকা।

যোগাযোগ: অরুনী কিচেন, বিমানবন্দর রোড, চৌকিদেখী (উত্তরা পেট্রলপাম্পের বিপরীতে)।

ফোন: ০১৭১১২৭৩৮৯৬, ০১৩১১১৪২৩৯০

আশপাশে ঘোরাঘুরি: রেস্তোরাঁয় খাওয়ার আগে বা পরে পাশেই লাক্কাতুরা ও মালনীছড়া চা-বাগান ঘুরে আসা যাবে। পাশে রয়েছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। সেখানেও ঘুরতে যান অনেকে।

স্থানের নাম: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সারিঘাট এলাকার ‘সুরুচি ভাতের হোটেল’।

কী দিয়ে রাঁধে: হাঁসের মাংস আলু, রসুন, পেঁয়াজ দিয়ে রান্না করা হয়। মাংস রান্না হয় মাটির চুলায়।

মাংসের সঙ্গে থাকে: সাদা ভাত। যাওয়ার আগে যোগাযোগ করলে পোলাও রান্না করে দেবে।

দরদাম: এক প্লেটে তিন থেকে চার টুকরা দেশি হাঁসের মাংসের দাম পড়বে ১৭০ টাকা। আস্ত হাঁস ১ হাজার ২৫০ টাকা। আর দুই প্লেট ভাত, এক প্লেট হাঁসের মাংস, ডাল ও সালাদ মিলিয়ে ২০০ টাকা পড়বে।

আশপাশে আর কী পাওয়া যায়: ওই দোকানের পাশে হরিপুর বাজারে আরও কয়েকটি রেস্তোরাঁ আছে। সেখানে সাদা ভাত ও রুটি পাওয়া যায়। আশপাশের রেস্তোরাঁ এবং সুরুচি রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন ধরনের মাছ, সবজি, দেশি ও ব্রয়লার মুরগি, রাজহাঁসের মাংসও পাওয়া যায়।

খোলা ও বন্ধ: সপ্তাহে সাত দিনই সকাল ৯ থেকে রাত ২টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

যাতায়াত: সিলেট রেলস্টেশন কিংবা কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে অটোরিকশায় করে প্রথমে ধোপাদীঘির পাড় এলাকায় পৌঁছাতে হবে। অটোরিকশার ভাড়া নেবে ১২০ টাকার মতো। সেখান থেকে আবার অটোরিকশা কিংবা লেগুনায় করে সারিঘাট। ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা। অথবা সোবহানীঘাট এলাকা থেকে বাসেও যাওয়া যাবে সারিঘাট। ভাড়া পড়বে ৫০ টাকা।

যোগাযোগ: সুরুচি ভাতের হোটেল। সিলেট-তামাবিল রোড, জৈন্তাপুর সারিঘাট (সারিঘাট ব্রিজের আগে)।

ফোন: ০১৭২২-৬২৫০৮৬

আশপাশে দেখার কী আছে: সুরুচি রেস্তোরাঁর সঙ্গেই সারি নদ। নদের একটি ঘাটও রয়েছে রেস্তোরাঁ লাগোয়া। এ ছাড়া পাশেই লালাখাল। রেস্তোরাঁয় খাওয়া সেরে যাওয়া যাবে লালাখালে। এ ছাড়া জৈন্তাপুর ডিবির হাওর লাল শাপলা বিলেও যাওয়া যাবে এখান থেকে।

তথ্য দিয়েছেন: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং, ঢাকা; শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী ও মানাউবী সিংহ, সিলেট