খাসজমি, জলাশয় ও ছাদে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় সুযোগ দেখা গেছে গবেষণায়। এক গবেষণা বলছে, বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা মাত্র ৩ শতাংশ। খাসজমি, জলাশয় ও বহুতল ভবনের ছাদ ব্যবহার করে দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব। ঢাকা বিভাগের ১০ শতাংশ ছাদে ১০ হাজার ৭৭৯ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।
আজ বুধবার ‘বাংলাদেশে সৌরশক্তির সম্ভাবনা ও ভূমি প্রাপ্যতার বাস্তবতা’ শীর্ষক সেমিনারে এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। রাজধানীর ওয়াইডব্লিউসিএ মিলনায়তনে যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন)। এতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
বেলার প্রধান নির্বাহী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃত্ব নিয়ে বলতে পারে নদী বা জলাশয়ে কোন প্রকার ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের জন্য তাদের অনুমোদন প্রয়োজন। একইভাবে বিদ্যুৎ বিভাগকেও কর্তৃত্বের জায়গা থেকে বিভিন্ন বহুতল ভবনে নির্দিষ্ট হারে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে মোট খাসজমির ৩ হাজার ৩৮৮ একর অবরাদ্দকৃত পতিত জমি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ১ হাজার ৩৬৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এটি ঢাকা বিভাগের মোট বিদ্যুতের চাহিদার (৫ হাজার ২৭৬ মেগাওয়াট) ২৬ শতাংশ পূরণ করবে। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগের ১ লাখ ৪৮ হাজার ২৩৫ একর জলাশয়ের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে ৫ হাজার ৯৮৫ মেগাওয়াটের ভাসমান সৌরশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করা যায়। গবেষণা উপস্থাপনা করেন ক্লিনের গবেষণা কর্মকর্তা শারমিন আক্তার।
খাসজমি, জলাশয় ও বহুতল ভবনের ছাদ ব্যবহার করে সৌরশক্তি উৎপাদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সেমিনারে বক্তারা বলেন, সৌরশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জায়গাস্বল্পতার প্রচলিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা হলে ২০৫০ সালের মধ্যে ১০০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। জলাশয়ে সৌরশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। তবে দেশের সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোকে ক্ষমতায়ন করলে তা অনেকাংশেই মোকাবিলা করা সম্ভব। সৌরশক্তির পাশাপাশি বায়ুশক্তির সম্ভাবনা বিষয়েও আলোচনা করেন বক্তারা।