দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার ঠেকাতে চায় সরকার। এ নিয়ে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকে। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে পররাস্ট্রসচিব সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গাদের যেন কেউ কোনোভাবেই আসন্ন নির্বাচনে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে সরকার। তাছাড়া মিয়ানমারে বিদ্যমান পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রাখছে বাংলাদেশ। রাখাইনে অস্থির পরিবেশের কারণে বাংলাদেশে যেন কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সীমান্তে সতর্ক পাহারা দিচ্ছে বিজিবি।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমরা ১৩ নভেম্বর থেকে রাখাইনে কিছু নিরাপত্তা সমস্যার খবর পাচ্ছি। সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির শব্দ বা মর্টার শেলের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুধু রোহিঙ্গা নয়, অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোক—যারা হয়তো এই গোলাগুলি বা এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছে, তারাও বিক্ষিপ্তভাবে বা বিচ্ছিন্নভাবে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের বিজিবিকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছি। অনুপ্রবেশ যেন না হয়, সে বিষয়ে তারা সজাগ দৃষ্টি রেখেছে এবং এটি চলমান থাকবে।’
এ মুহূর্তে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো জানিয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, রাখাইন প্রদেশে আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর একটি সমঝোতা আছে, ফলে সেখানে যুদ্ধবিরতি ছিল; কিন্তু যে কারণেই হোক, ছোটখাটো কিছু দুর্ঘটনা হয়েছে, যেটি আগে ছিল না।
নির্বাচনের সময় রোহিঙ্গাদের ভিন্ন কাজে ব্যবহারের আশঙ্কার বিষয়ে সচিব বলেন, ‘আমরা অবশ্যই নজর রাখছি এবং এটাও নজর রাখছি সেখানকার কেউ বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে আর কোনো ধরনের সুযোগ যেন না নিতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স রয়েছে।’
রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতরে যে গ্রুপ আছে, সেগুলো কোনো আদর্শভিত্তিক নয় জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এগুলোর বেশির ভাগই চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে। ক্যাম্পের ভেতরে এপিবিএনের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রত্যাবাসনের বিষয়ে প্রস্তুতির জারি প্রচেষ্টা রয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আজকে এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। আশা আছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসে, তাহলে দ্রুতই যেন প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারি। আমাদের প্রস্তুতির যেন কোনও ঘাটতি না থাকে।’