ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা শাখা থেকে গতকাল রোববার তাঁকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জিসানুল হকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন তিনি বাংলাদেশ সার্ভিস রুল অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সম্প্রতি সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। সেখানে আছাদুজ্জামান মিয়ার ‘ইএসএএফ’ ছড়িয়ে পড়ে। ইএসএএফ হলো, ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রাইবার অ্যাপ্লিকেশন ফরম, যা মূলত মুঠোফোন গ্রাহকেরা পূরণ করে থাকেন। এই ফরমে একজন ফোন গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, আঙুলের ছাপসহ বিস্তারিত তথ্য থাকে। এ তথ্য কীভাবে অনলাইনে গেল, সেটি নিয়ে তদন্ত করে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমদ এ ঘটনার তদন্ত করেন। ইএসএএফ ফরমটিতে থাকা কিউআর কোড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগর পুলিশের বৈধ আড়ি পাতা শাখার এক সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার থেকে এটি ডাউনলোড করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার পদের এক কর্মকর্তা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আছাদুজ্জামান মিয়ার তথ্য চেয়ে বৈধ আড়ি পাতা শাখার এক এসআইকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দেন। সেই বার্তার ভিত্তিতে তিনি অন্য একজন এএসআইকে সেটা ডাউনলোড করতে বলেন। পরে সেটা ওই কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়।
তদন্ত শেষে ১৯ জুন জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্তসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।