হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ

এবার সংসদে রাজাকার নেই, ‘সাম্প্রদায়িকতাপুষ্ট’ সংসদ সদস্য রয়েছেন

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ

এবার জাতীয় সংসদে রাজাকার বা স্বাধীনতাবিরোধীরা না থাকলেও ‘ধর্মাশ্রয়ী ও সাম্প্রদায়িকতাপুষ্ট’ সংসদ সদস্য রয়েছেন—এমন দাবি করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঐক্য পরিষদ বলেছে, ‘এবারের পার্লামেন্টে (সংসদে) রাজাকার বা স্বাধীনতাবিরোধীরা না থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামাবলি গায়ে দিয়ে ধর্মাশ্রয়ী ও সাম্প্রদায়িকতাপুষ্ট সংসদ সদস্যরা রয়েছেন, যা গভীর উদ্বেগজনক।’

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা হয় গতকাল। রাজধানীর পল্টনে পরিষদের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পরিষদের কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের (পর্যবেক্ষণ কমিটি) পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। সভায় গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও আলোচনার বিষয়বস্তু পরে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে জানিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বক্তব্য দেন পরিষদের আরেক সভাপতি নির্মল রোজারিও, সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, সাবেক সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, পরিষদের নেতা সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, মিলন কান্তি দত্ত প্রমুখ।

সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে বলা হয়, গত নির্বাচনে সরকারবিরোধী দলগুলো অংশ না নিলেও নির্বাচনের পূর্বাপর সহিংসতা ‘ব্যাপক’ হয়নি। তবে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুরা দেশের নানা স্থানে এখনও হামলার শিকার হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা ছিলেন তবে পৃথক পৃথক প্রতীকে তাঁরা ভোটে অংশ নিয়েছেন। প্রাথীদের একাংশ নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার করেছেন এবং ভোট দেওয়া ও না দেওয়ার উছিলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করছে বলেও সভার সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয়।

সভায় নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর ঐক্য পরিষদ তাদের মতামতে বলেছে, কালোটাকা, পেশিশক্তি ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক প্রচারণার কারণে ভবিষ্যতে বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদে সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারত্ব সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংসদে ৬০টি আসন সংরক্ষণের দাবি জোরালোভাবে উত্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। সংরক্ষিত এসব আসনে ‘যুক্ত নির্বাচনের’ (সংখ্যালঘু প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে ভোটের ব্যবস্থা, যেখানে সব ভোটার ভোট দেবে) ব্যবস্থা রাখার কথাও সভায় উল্লেখ করেছে ঐক্য পরিষদ।

এ ছাড়া জাতীয় সংসদ অধিবেশনসহ সরকারি অনুষ্ঠানের শুরুতে সব ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের পদক্ষেপ নিতে সরকারপ্রধান ও স্পিকারের প্রতি এই সভা থেকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।