উড়োজাহাজ
উড়োজাহাজ

টিকিটের চড়া দামের পর যাত্রীসংকটে উড়োজাহাজ

গত সোমবার থেকে যাত্রীর চাপ কম। সোমবার প্রায় অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সংঘর্ষ ও দেশজুড়ে কারফিউ জারির প্রভাবে উড়োজাহাজে যাত্রীর চাপ বেড়ে যায়। এ সুযোগে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো টিকিটের বাড়তি দাম নিয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। এখন আবার যাত্রীসংকটে ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে কোনো কোনো উড়োজাহাজ সংস্থাকে।

তিন দিন ধরেই যাত্রীরা টিকিটের বাড়তি দামের অভিযোগ করে আসছিলেন। কোনো কোনো যাত্রী বলেছেন, দেশের ভেতরে বিভিন্ন গন্তব্যে তাঁদের কাছ থেকে টিকিটের দাম ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা পর্যন্ত রাখা হয়েছে।

অবশ্য উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, নির্ধারিত ফ্লাইটের অধিকাংশ টিকিট সাধারণত আগাম বিক্রি হয়ে যায়। শেষের দিকে যেসব টিকিট থাকে, তার দাম বেশি হয়। এর মধ্যে কক্সবাজারে আটকে পড়া পর্যটকদের আনতে সব সংস্থা বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এসব ফ্লাইট ঢাকা থেকে খালি গেছে। বাড়তি খরচ করেও আসার সময় ১১ হাজার ৫০০ টাকা করে টিকিটের দাম রাখা হয়েছিল। অথচ আসা-যাওয়ার খরচ তুললে আরও বেশি হতো টিকিটের দাম।

কক্সবাজার ও সৈয়দপুরে টিকিটের দাম সর্বোচ্চ সাত হাজার টাকা। বরিশালের ক্ষেত্রে টিকিটের সর্বোচ্চ দাম সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। কোথাও বাড়তি দাম নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোশরা ইসলাম

উড়োজাহাজ সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, গত সোমবার থেকে যাত্রীর চাপ কমে এসেছে। এখন উল্টো যাত্রীসংকট দেখা দিয়েছে। সোমবার প্রায় অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হয়েছে।

এখন কক্সবাজারে টিকিটের দাম আট হাজার ও চট্টগ্রামের টিকিট ছয় হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে এয়ার অ্যাস্ট্রা। দিনে দেশের মধ্যে মোট ১৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করে বেসরকারি এ উড়োজাহাজ সংস্থা। যাত্রীস্বল্পতায় গতকাল মঙ্গলবার তারা পরিচালনা করেছে মাত্র তিনটি। আজ বুধবার পাঁচ থেকে ছয়টি ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারে তারা।

এয়ার অ্যাস্ট্রার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, সময়ের সুযোগ নিয়ে কোনো বাড়তি দাম নেওয়া হয়নি। জরুরি পরিস্থিতিতে বিশেষ ফ্লাইটে টিকিটের যে দাম নেওয়া হয়েছে, তাতেও লোকসান হয়েছে। আর এখন যাত্রীস্বল্পতায় ফ্লাইট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ইউএস–বাংলা বলছে, দেশের মধ্যে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে ব্যবহৃত উড়োজাহাজের টিকিটের ১০ থেকে ১১টি স্তর আছে। এসব স্তরভেদে টিকিটের দাম ৫ হাজার ২০০ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। তাই শেষ সময়ে টিকিট নিশ্চিত করলে সর্বোচ্চ দামে কিনতে হয়।

ইউএস–বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি বুঝে টিকিটের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এটি আগে থেকেই নির্ধারণ করা আছে। আগাম টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকায় যাত্রী পেতে এখন সমস্যা হচ্ছে। সোমবার কোনো কোনো ফ্লাইট ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে গেছে। গতকাল যাত্রীস্বল্পতায় দেশের মধ্যে চারটি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে।

বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা নভোএয়ার বলছে, সোমবার থেকে চাহিদা কমে গেছে টিকিটের। সংস্থাটির হেড অব মার্কেটিং মেসবাহ উল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজার টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের সামনে সর্বোচ্চ আট হাজার টাকা টিকিটের দাম লিখে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। এর চেয়ে বেশি দাম কেউ নিতে পারবে না। এখন যাত্রী কম, ফ্লাইট খালি যেতে পারে।

অবশ্য গতকাল পর্যন্ত শতভাগ টিকিট বিক্রি করেই ফ্লাইট পরিচালনা করছে বাংলাদেশ বিমান। দেশের মধ্যে বিভিন্ন গন্তব্যে তাদের ফ্লাইটের টিকিটের দাম ৩ হাজার ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকা।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোশরা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজার ও সৈয়দপুরে টিকিটের দাম সর্বোচ্চ সাত হাজার টাকা। বরিশালের ক্ষেত্রে টিকিটের সর্বোচ্চ দাম সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। কোথাও বাড়তি দাম নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ইউএস–বাংলা বলছে, দেশের মধ্যে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে ব্যবহৃত উড়োজাহাজের টিকিটের ১০ থেকে ১১টি স্তর আছে। এসব স্তরভেদে টিকিটের দাম ৫ হাজার ২০০ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। তাই শেষ সময়ে টিকিট নিশ্চিত করলে সর্বোচ্চ দামে কিনতে হয়।