আদালতের রায়

তিন মামলায় মহিলা দলের নেত্রীসহ ৭৩ জনের সাজা

আদালত
প্রতীকী ছবি

এক দিনে তিন মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৭৩ জনের সাজা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিয়া আলমও রয়েছেন।

গতকাল রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা তিনটির রায় হয়। ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৮ সালে করা মামলা তিনটির বাদী পুলিশ। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিতদের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

এ নিয়ে গত সাড়ে চার মাসে ঢাকায় অন্তত ৫৮টি মামলার রায়ের খবর পাওয়া গেল। এসব মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত নেতা-কর্মীর সংখ্যা ৯১৮। এর মধ্যে একাধিক মামলায় সাজা হয়েছে, এমন অনেকে আছেন। দণ্ডিতদের মধ্যে বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান, একজন যুগ্ম মহাসচিব এবং যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাও রয়েছেন। বাকিরা ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মী।

গতকাল যে তিন মামলার রায় হয়েছে, তার মধ্যে কলাবাগান থানার মামলায় ৪০ জনের দেড় বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রবিউল ইসলামও (নয়ন) রয়েছেন। খালাস পেয়েছেন ২৪ জন। ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হায়দার এ রায় দেন।

পুলিশের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর কলাবাগান থানা এলাকায় ইস্টার্ন প্লাজার সামনে বিএনপি-জামায়াতসহ ১৮-দলীয় জোটের ৫০ থেকে ৬০ জন নেতা-কর্মী জড়ো হন। পূর্বানুমতি না নিয়ে তাঁরা লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল, ককটেল নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে হাতিরপুলের দিকে যেতে থাকেন। পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে তাঁরা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এ মামলায় পরের বছর ৩০ নভেম্বর ৬৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ছয়জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন পুলিশ সাক্ষী।

গতকাল আরেকটি মামলার রায় দেন ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী। বংশাল থানার এ মামলায় মহিলা দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিয়া আলমসহ ২৫ জনকে তিন বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে করা এই মামলার বাদীও পুলিশ। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে বংশালের আরমানিটোলা এলাকায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা যান চলাচলে বাধা দেন ও গাড়ি ভাঙচুর করেন। লোকজনকে ভয়ভীতি দেখায়। মামলায় ২৬ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৯ সালের ৩০ জুন ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালত অভিযোগ গঠন করেন। ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তিনজনকে হাজির করে। আসামিপক্ষ থেকে একজন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

গতকাল অপর মামলাটির রায় দিয়েছেন ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী। এ মামলায় কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজীমসহ আটজনকে দেড় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। খালাস পেয়েছেন ১০ জন।

কোতোয়ালি থানার এ মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি বাবুবাজার এলাকায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেন। মামলায় ১৬ জনকে আসামি করা হয়। ওই বছরের ২০ অক্টোবর ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামালের দাবি, বিএনপির নেতা-কর্মীরা আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চাইছে।