আদিলুরের মুক্তি চেয়ে অ্যামনেস্টিসহ ৭২ মানবাধিকার সংগঠনের বিবৃতি

আদালতের রায়ের পর মানবাধিবার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর
ছবি: প্রথম আলো

মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ বাতিল করে তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছে ৭২টি মানবাধিকার সংগঠন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন দেশের এই সংগঠনগুলো আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তাঁদের মুক্তি দিতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানায়।

এর আগে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার মামলায় আদিলুর রহমান খানকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় নাসিরুদ্দিনকেও দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

৭২টি মানবাধিকার সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের উচিত আদিলুর ও নাসিরুদ্দিন যাতে কোনো ধরনের প্রতিহিংসা ছাড়াই মানবাধিকার নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করা। বিবৃতিটি মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে ২০১৩ সালের ১০ জুন অধিকার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ৬১ জন নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। ওই সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর রহমান খান ও নাসিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনার পরে নিবন্ধন নবায়নের জন্য ২০১৪ সালে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোতে আবেদন করে অধিকার। তবে সংস্থাটির নিবন্ধন নবায়ন করা হয়নি। মানবাধিকার সংস্থাটির নেতাদের ওপর বিভিন্নভাবে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করে সরকার। পাশাপাশি অর্থের উৎস বন্ধ করে তাদের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এবং এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে অধিকারের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরের বছর ২০২২ সালে অধিকারের নিবন্ধন নবায়নের আবেদন নামঞ্জুর করে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো।

কোনো ধরনের ভয়ভীতি, হয়রানি ও প্রতিহিংসা ছাড়াই মানবাধিকারকর্মীদের প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য প্রকাশ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা ও শাস্তি না দিয়ে, বরং যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় ৭২ সংগঠনের বিবৃতিতে।

বিবৃতিদাতা সংগঠনগুলো হলো— অ্যাডভোকেসি ফোরাম নেপাল, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়ান নেটওয়ার্ক (এডিপিএএন), এশিয়া অ্যালায়েন্স অ্যাগেইনস্ট টর্চার, এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস (এএফএডি), এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া), এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইল), অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যামিলি মেম্বারস অব দ্য ডিসঅ্যাপিয়ারড, শ্রীলঙ্কা; অ্যাসোসিয়েশন প্রো বুসকেদা দে নিনাস ওয়াই নিনোস ডিসঅ্যাপিয়ারসিদোস, এল সালভেদর; আওয়াজসিডিএস–পাকিস্তান; বালাওদ মিন্দানাও; বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (এমএএসইউএম); বেলারুশিয়ান সলিডারিটি ফাউন্ডেশন; বীর দুইনো, কিরগিজস্তান; কম্বোডিয়ান হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এডিএইচওসি), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট , অস্ট্রেলিয়া; সেন্টার ফর দ্য সাসটেইনেবল ইউজ অব ন্যাচারাল অ্যান্ড সোশ্যাল রিসোর্সেস (সিএসএনআর), ভুবনেশ্বর, ভারত; সিটিজেনস’ অ্যালায়েন্স ফর নর্থ কোরিয়ান হিউম্যান রাইটস (এনকেএইচআর); সিভিকাস: ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন; সিভিল সোসাইটি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক (সিএসএইচআরএন); কালেকটিফস দেস ফ্যামিলিস দে দিসপারাস ইন আলজেরি; ডিফেন্স ফর হিউম্যান রাইটস পাকিস্তান (ডিএইচআর); ডেসপ্যারেসিদস –ফিলিপিনস; ইলোস জাস্টিস, মোনাশ ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়া; ইউরো-মেডিটারেনিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিআরেন্সেস (এফইএমইডি), ফ্রান্স; ফ্যামিলিস অব দ্য ডিজঅ্যাপিয়ার্ড (এফওডি), শ্রীলঙ্কা; ফ্যামিলিস অব ভিকটিমস অব ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিআরেন্স (এফআইএনডি); এফআইডিএইচ (ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস) উইদিন দ্য ফ্রেমওয়ার্ক অব দ্য অবজারভেটরি ফর দ্য প্রটেকশন অব হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস; ফোরাম ওএনজি তিমুল–লেস্তে; ফ্রি জোনাস বার্গোস মুভমেন্ট; এইচএকে অ্যাসোসিয়েশন, তিমুর–লেস্তে; হিউম্যান রাইটস অ্যালার্ট, মণিপুর, ভারত; হিউম্যান রাইটস ফার্স্ট; হিউম্যান রাইটস হাব, শ্রীলঙ্কা; হিউম্যান রাইটস ওয়াচ; ইন্দোনেশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যামিলিস অব দ্য ডিসঅ্যাপিয়ার্ড ফ্যামিলিস (আইকেওএইচআই); ইন্দোনেশিয়ান লিগ্যাল এইড অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশন (পিবিএইচআই–ইন্দোনেশিয়া); ইন্দোনেশিয়া লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন (ওয়াইএলবিএইচআই); ইন্দোনেশিয়ান’স এনজিও কোয়ালিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অ্যাডভোকেসি (এইচআরডাব্লিউজি); ইনফর্ম হিউম্যান রাইটস ডকুমেন্টেশন সেন্টার, শ্রীলঙ্কা; ইনস্টিটিউট ফর পলিসি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি (ইএলএসএএম)– ইন্দোনেশিয়া; ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিআরেন্সেস (আইসিএইডি); ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাটস (এফআইএসিএটি); ইন্টারন্যাশনাল লিগ্যাল ইনিশিয়েটিভ (আইএলআই)–কাজাখস্তান; ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস ফর হিউম্যান রাইটস (আইএসএইচআর); জাওয়াবোদা কেন্দ্রয়া (জে কে), শ্রীলঙ্কা; কারাপাতান অ্যালায়েন্স ফিলিপিনস (কারাপাতান); করনালি ইনটিগ্রেটেড রুলাল ডেভেপলমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (কেআইআরডিএআরসি) নেপাল; লাতিন আমেরিকান ফেডারেশন অব অ্যাসোসিয়েশনস অব রিলেটিভস অব ডিসঅ্যাপিয়ার্ড-ডিটেইনিস (এফইডিইএফএএম); লিগ্যাল লিটারেসি–নেপাল; লিগা গুয়েতেমালতিকা দে হাইজিনি মেন্টাল; মাদ্রেস দে প্লাজা দে মায়ো-লিনিয়া ফানদাদোরা, আর্জেন্টিনা; মালদিভিয়ান ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্ক (এমডিএন); মার্টিন এনালস ফাউন্ডেশন; ন্যাশনাল ফিশারিজ সলিডারিটি অর্গানাইজেশন, শ্রীলঙ্কা; নেমঙ্গো সিটিজেনস’ কমিটি; ননভায়োলেন্স ইন্টারন্যাশনাল কানাডা; পাকিস্তান ডেভেলপমেন্ট অ্যালায়েন্স; পিপল’স সলিডারিটি ফর পার্টিসিপেটরি ডেমোক্রেসি(পিএসপিডি); প্রোগ্রাম অ্যাগেইনস্ট কাস্টডিয়াল টর্চার অ্যান্ড ইমপিউনিটি (পিএসিটিআই), পাবলিক অ্যাসোসিয়েশন “ডিগনিটি”, কাজাখস্তান, আস্তানা; পুসাট কোমাস, মালয়েশিয়া; রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস; সিন্ধি ফাউন্ডেশন; টাস্ক ফোর্স ডিটেইনিস অব দ্য ফিলিপিনস; দ্য অ্যাওয়াকেনিং, পাকিস্তান; দ্য কমিশন ফর ডিসঅ্যাপিয়ার্ড অ্যান্ড ভিকটিমস অব ভায়োলেন্স (কন্ট্রাএস); দ্য ইন্দোনেশিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর (ইমপারসিয়াল); টর্চার অ্যাবোলিশন অ্যান্ড সারভাইভারস সাপোর্ট কোয়ালিশন, ওয়াশিংটন ডিসি; উই রিমেম্বার–বেলারুশ; ওমেন’স রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার (ডাব্লিউওআরইসি), ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার (ওএমসিটি), উইদিন দ্য ফ্রেমওয়ার্ক অব দ্য অবজারভেটরি ফর দ্য প্রটেকশন অব হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস।