নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হতে পারে আগামী নভেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে। নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পূর্ণ সহযোগিতা করবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তারা।
আজ বুধবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ আলোচনা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সভায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ কয়েকজন মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের কাছে সভার সিদ্ধান্ত জানান।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুসারে দেশের সাধারণ নির্বাচন আসন্ন। নির্বাচন কমিশন তফসিলের একটি সম্ভাব্য সময় বলেছে, সেটি হলো নভেম্বরের মাঝামাঝিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। তফসিল ঘোষণার পর সরকার নতুন কোনো পরিকল্পনা নিতে পারে না, নতুন কোনো উদ্বোধনও হয় না। অর্থাৎ শুধু রুটিন কাজ করে সরকার। এটি অনেকটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মতো, যদিও শব্দটি এ রকম করে লেখা নেই। তখন মূলত নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে সবকিছু থাকে।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, সেই দায়িত্ব সাংবিধানিকভাবে তাদের (ইসি) ওপর ন্যস্ত আছে। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের যা যা সহযোগিতা করার প্রয়োজন, সেটি সংবিধানেই বলা আছে। সে বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তা যাঁরা দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন, তাঁরা সেভাবেই কাজ করবেন। যাতে সুষ্ঠুভাবে, নিরপেক্ষভাবে ও সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন হতে পারে। সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য যা দায়িত্ব পালন করার কথা, সেটি পালন করবেন, সেটিও আলোচনা হয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ যাতে সুষ্ঠু থাকে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য সচেতন থাকতে হবে। যাতে মানুষের মৌলিক ভোটাধিকার প্রয়োগ বাধাগ্রস্ত না হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, অবৈধ অস্ত্র, নাকশতামূলক কাজ, ধর্মীয় উসকানি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি করার জন্য একটু প্রবণতা কিছু রাজনৈতিক দলের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। সেই ব্যাপারে যাতে সব সময় সতর্ক থাকা যায়, এ রকম কোনো অঘটন যাতে না ঘটে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় সতর্ক থাকে, সে জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের নেতৃত্বে আন্তসমন্বয় করা হবে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানেরা থাকবেন। তবে এটি কোনো আনুষ্ঠানিক কমিটি নয় বলে জানান মন্ত্রী।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, তাঁরা আরেকটি ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, সেটি হলো দ্রব্যমূল্য। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি কিছু সিদ্ধান্ত এখনো সঠিকভাবে কার্যকর হয়নি। নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার যেসব সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সে বিষয়ে সরকারি যেসব সংস্থা আছে, তারা যেন মনিটরিং করে, সেভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সরকারি চাকরিতে যেকোনো সময় কাউকে সন্দেহ হলে মাদকের বিষয়ে পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।