কেকের বাজারেও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা প্রতিযোগিতা

বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পতাকার রঙের কেক তৈরি করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান
ছবি: সৌরভ দাশ

কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের এক সপ্তাহ কেটে গেছে। নিজেদের দল না খেললেও পুরো দেশ এখন বিশ্বকাপ-জ্বরে আক্রান্ত। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মেতেছেন ফুটবল নিয়ে।

প্রিয় দলের পতাকা তোলা, জার্সি পরার ধুম লেগেছে। কে কত বড় পতাকা তুলতে পারেন, তা নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা। একই উন্মাদনা কেক পেস্ট্রিতেও দেখা যাচ্ছে।

বিভিন্ন দলের পতাকা, জার্সি বা তারকা খেলোয়াড় অঙ্কিত কেকের কদর দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রাম নগরের বাজারে। আর এখানেও চলছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার প্রতিযোগিতা।

চট্টগ্রাম নগরের কিংস কনফেকশনারি, ওয়েল ফুডসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের পতাকার রঙের কেক তৈরি করছে। সাধারণত কার্যাদেশ নিয়ে এসব কেক তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি কার্যাদেশ ছাড়াও কেক বানিয়ে দোকানে বিক্রির জন্য রাখা হচ্ছে।

কিংস কনফেকশনারি ইতিমধ্যে ১৫টির মতো এমন কেক বিক্রি করেছে। বেশির ভাগ কেক ছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পতাকা-সংবলিত।

মো. হাসান ২০০৮ সাল থেকে কিংস চট্টগ্রাম শাখায় কর্মরত। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল থেকে প্রিয় দলের পতাকার রঙের কেকে বিক্রির প্রচলন শুরু করেন তাঁরা। তখন থেকেই তিনি দেখছেন, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার কেকের চাহিদা বেশি। গত দুই দিনে এমন পাঁচটি কেক বিক্রি হয়েছে। অন্য দলের পতাকার রঙের কেকেরও চাহিদা আছে। তাঁরা কার্যাদেশ নিয়ে একটি দুই কেজি ওজনের স্পেনের ও একটি পর্তুগালের পতাকার রঙের কেক তৈরি করেছেন।

কয়েকজন বিক্রেতা ও ফুটবলপ্রেমীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, নিজেদের পছন্দের দলের পতাকার রঙের কেক নিয়ে কেউ কেউ প্রিয়জনের জন্মদিন পালন করছেন। আবার অনেকে প্রিয় দলের খেলার দিন কেক নিয়ে যাচ্ছেন।

নগরের এম এম আলি সড়কের মুখের কিংস কনফেকশনারিতে গতকাল রোববার রাতে গিয়ে দেখা যায়, শো কেসে পাশাপাশি আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের দুটি কেক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটেও এই দুই দলের কেকের ছবি দেওয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই কেক নতুন এসেছে।

কিংসের চট্টগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক এনামুল হক বলেন, বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনা মাথায় রেখে তাঁরা বিভিন্ন দলের পতাকার রঙের কেক তৈরি করেন। পতাকার রং ছাড়াও লিওনেল মেসি, নেইমারের মতো তারকা ফুটবলারদের ছবিসংবলিত কেক তাঁরা তৈরি করেন।

সাধারণত কার্যাদেশের ভিত্তিতে তাঁরা এ ধরনের কেক সরবরাহ করেন। সাধারণ কেকের কেজি ২ হাজার টাকা। কিন্তু এ ধরনের নকশাসংবলিত কেকের কেজি পড়ছে ২ হাজার ৪০০ টাকা করে।

জিইসি মোড়ের ওয়েল ফুডও একই ধরনের কেক তৈরি করছে। ২২ নভেম্বর সৌদি আরবের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার প্রথম খেলার দিন প্রতিষ্ঠানটি পাঁচ কেজি ওজনের একটি আকাশি সাদা রঙের কেক সরবরাহ করে। একইভাবে তারা ব্রাজিলের পতাকার রঙের তিন থেকে চারটি কেক বিক্রি করেছে।

প্রতিষ্ঠানটির কোষাধ্যক্ষ মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, এখানেও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার প্রতিযোগিতা দেখছেন তাঁরা। এই দুই দলের কেকই বেশি চলছে। ওয়েল ফুডের এই ধরনের প্রতি কেজি কেক ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা করে পড়ছে।

কাতার বিশ্বকাপে যত দিন ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থাকবে, তত দিন এই দুই দলের কেকের কদর থাকবে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা।