রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ সোমবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন হাজি সেলিমের আইনজীবী প্রাণ নাথ।
আইনজীবী প্রাণ নাথ প্রথম আলোকে বলেন, চকবাজার থানায় করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় হাজি সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে তিনি জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমকে পুরান ঢাকার বংশাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাঁকে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যার ঘটনায় লালবাগ থানায় করা মামলায় আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর বাইরে গত ৩০ অক্টোবর চকবাজার থানার একটি হত্যা মামলায় হাজি সেলিমের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
পুরান ঢাকার লালবাগ ও চকবাজার এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিম দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি ১৯৯৬ সালে ঢাকা-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর কাছে হেরে যান।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন হাজি সেলিম। ওই নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাজি সেলিম প্রার্থী হননি। তাঁর বদলে ছেলে সোলায়মান মোহাম্মদ সেলিমকে ঢাকা-৭ আসন থেকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। তিনি নির্বাচিতও হয়েছিলেন।
হাজি সেলিম ও তাঁর স্ত্রী গুলশান আরার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদক। বিচারিক আদালত ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল ওই মামলায় রায় দেন। রায়ে তাঁর ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়। ২০২২ সালে ওই মামলায় হাজি সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। কিছুদিন কারাভোগের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে উচ্চ আদালত তাঁকে জামিন দেন।