নতুন সাংবিধানিক যাত্রায় সমাধানটা জনগণের ভেতর থেকেই আসতে হবে। রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সবার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে। সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন সংবিধান হতে হবে।
আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন’ আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সংবিধান ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এবারের বিজয় ধরে রাখতে হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আমাদের বিজয় আমাদের হাতে থাকে না। ...এবার আপনারা আন্দোলন করে ক্ষমতার একধরনের পাহারাদার আছেন, আমরা মনে করি, এই ক্যাপাসিটি বাড়ানো দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিটা জায়গায় স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, স্টুডেন্ট কাউন্সিল হওয়া দরকার। এই পাহারা যদি আপনারা না দিতে পারেন, এবারের আন্দোলনও ব্যর্থ হয়ে যাবে। বারবার এভাবে বিজয় হাতছাড়া হোক এটা আমরা চাই না।
সংবিধান সংস্কারের পথটি কেমন হবে তার একটি দিকনির্দেশনা দেন হাসনাত কাইয়ুম। তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের জন্য সংস্কারকারীদের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের আলোচনা দরকার, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে জানতে হবে তারা কীভাবে পরিবর্তন চায়, কী কী পরিবর্তন চায়। রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে যে সংগঠনগুলো আছে, তাদের সঙ্গেও গণ–আলোচনা করা দরকার। এর বাইরে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে, তাদের সঙ্গে বসতে হবে।
জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা এই সরকারের দায়িত্ব উল্লেখ করে হাসনাত কাইয়ুম বলেন, এটা করতে এ সরকারকে বাধ্য করতে হবে। তাই এ সরকারকে টিকিয়েও রাখতে হবে। সংবিধান সংস্কারসহ জনগণের আকাঙ্ক্ষার এই কাজগুলো করতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ বা সময়ের অপচয় যেন না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
সেমিনারে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশনা ইমাম বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখের যে যতগুলো সংশোধন হয়েছে আমাদের সংবিধানের, প্রতিটাই পলিটিক্যালি মোটিভেটেড ছিল। যাঁরাই ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁদের স্বার্থের জন্য এই সংশোধনগুলো করা হয়েছে। সংবিধানকে যেন নিজেদের স্বার্থে ইচ্ছেমতো সংশোধন না করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী মো. মনযুর রাব্বি বলেন, ‘আমাদের নতুন সাংবিধানিক যাত্রায় যেটাই আমরা চিন্তা করি না কেন, সমাধানটা আমাদের ভেতর থেকেই আসতে হবে। আপনাদের সবার কাছ থেকে আসতে হবে, কৃষকের থেকে আসতে হবে। এ জন্য আমার মতে সংবিধান নিয়ে জনগণের সঙ্গে যে ডায়ালগ (সংলাপ) দরকার তা অন্ততপক্ষে এক বছর হওয়া উচিত ছিল।’