রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় প্রাইভেট কার আরোহী শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ মামুনকে (৫৪) লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমনের হাত রয়েছে বলে ধারণা করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ।
আজ মঙ্গলবার মিন্টো রোডে ডিবির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ ধারণার কথা জানান ডিবিপ্রধান।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সোমবার রাত ১০টার দিকে তারিক সাঈদ মামুনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। তিনি প্রাইভেট কার থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাঁকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তিনি বর্তমানে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এলোপাতাড়ি গুলিতে দুজন আহত হন, যাঁরা মূলত ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও তারিক সাঈদ মামুন একসময় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার আতঙ্ক ছিলেন। তাঁদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। তাঁরা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি।
ইমন কারাগারে থাকলেও সম্প্রতি মামুন জামিনে বের হন। মামুনের বরাত দিয়ে পুলিশ সূত্র বলছে, কারাগারে থাকা অবস্থাতেই দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এই বিরোধের জের ধরেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা মামুনের।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ বলেন, ইমন জেলে মামুনকে হুমকি দিয়েছিলেন। সন্ত্রাসী ইমনের লোকজন মামুনের ওপর হামলা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তে সবকিছুই বেরিয়ে আসবে।
মামুনকে লক্ষ্য করে ছোড়া গুলিতে আহত ব্যক্তিরা হলেন আরিফুল হক (৩০) ও ভুবন চন্দ্র শীল (৫২)। ভুবন চন্দ্র শীল মোটরসাইকেলে করে তখন ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছে। সোমবার রাতেই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভুবন চন্দ্র শীলের এক স্বজন প্রথম আলোকে জানান, তাঁর (ভুবন) অবস্থা গুরুতর।
পুলিশ জানায়, মগবাজার এলাকার পিয়াসী বার থেকে বের হয়ে মামুন, খোকন ও মিঠু নামের তিনজন প্রাইভেট কারে শুক্রাবাদের বাসায় যাচ্ছিলেন। সিটি পেট্রলপাম্প ও বাংলাদেশ সরকারী মুদ্রণালয়ের (বিজি প্রেস) মাঝামাঝি রাস্তায় চারটি মোটরসাইকেলে সাত-আটজন সন্ত্রাসী মামুনকে লক্ষ্য করে গুলি করে। তাৎক্ষণিক প্রাইভেট কার থেকে মামুন, মিঠু ও খোকন নেমে পড়েন। এ সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মামুনের পিঠ ও ঘাড়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।