ডিজিটাল উদ্যোগ

শিক্ষা ও জ্ঞানের তলানিতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’

‘ডিজিটাল যুগে উদ্যোগ’ শীর্ষক এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক–এর প্রতিবেদনে ডিজিটাল প্রযুক্তি কেমন করে উদ্যোগ ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিচ্ছে, সেটা উঠে এসেছে।

করোনা মহামারির মধ্যে বিশ্ব নতুন করে তথ্য তথা ডিজিটাল প্রযুক্তির শক্তিমত্তা টের পেয়েছে। দেশে দেশে বিধিনিষেধের সময় কমবেশি অর্থনীতি সচল থাকার মূল চালিকা শক্তিই ছিল ডিজিটাল প্রযুক্তি।

আবার করোনার প্রকোপ থেকে বের হয়ে আসার জন্য টিকার গণপ্রয়োগেও আমরা এ প্রযুক্তির সক্ষমতা দেখেছি। প্রথমবারের মতো কোনো টিকা মাত্র এক বছরের মধ্যে মাঠে আসতে পেরেছে। এর অন্যতম কারণ, কম্পিউটার সিমুলেশন ও জিনোম সিকোয়েন্সিং। এ দুইয়ের সমন্বয়ে আমরা সময়মতো টিকা পেয়েছি।

শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের মতো দেশেও এ টিকা সফলভাবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুরক্ষা ওয়েবসাইটের যথাযথ ব্যবহার আমরা দেখেছি। শুধু জনজীবনে নয়, বিশ্বের ৩২টি অর্থনীতির ২৮টি খাতের ১২ হাজার ৯৯০টি প্রতিষ্ঠানের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডিজিটাল প্রযুক্তি করোনা মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইতিবাচকভাবে সহায়তা দিয়েছে।

এসব কথা আবার নতুন করে উঠে এসেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০২২ প্রতিবেদনে। এ প্রতিবেদনের নাম দেওয়া হয়েছে ডিজিটাল যুগে উদ্যোগ (এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ইন দ্য ডিজিটাল এজ)। এখানে ডিজিটাল প্রযুক্তি কেমন করে উদ্যোগ ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিচ্ছে, সেটাই তুলে ধরা হয়েছে।

আমরা অবশ্য আগে থেকেই জানি, প্রতি ১ হাজার নতুন ব্রডব্র্যান্ড সংযোগ ৮টি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। বিশ্বে এ সময়ের ট্রিলিয়ন ডলারের ৫ কোম্পানি অ্যাপল, মাইক্রোসফট, অ্যালফাবেট (গুগলের মূল কোম্পানি), অ্যামাজন ও টেসলার মধ্যে চারটিই সরাসরি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি। বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি টেসলার মূল শক্তি তার সফটওয়্যারে। কাজেই প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায়, যারা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তারাই এগিয়ে থাকে।

দেখা গেছে, ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবন কেবল তাদের প্রতিযোগিতায় শুধু টিকিয়ে রাখে না, বরং সেটি নিজ নিজ দেশকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে, উদ্যোগের প্রসার ঘটিয়েছে। কারণ, ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে ব্যবসায় প্রবেশের বাধা কমে এসেছে।

এ প্রতিবেদনে এডিবির সদস্য ২১টি দেশসহ মোট ১১৩টি দেশের ডিজিটাল উদ্যোগের একটি নতুন সূচক প্রকাশ করেছে। এ সূচকের নাম দেওয়া হয়েছে দ্য গ্লোবাল ইনডেক্স অব ডিজিটাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সিস্টেম (জিইডিইএস)। এ প্রতিবেদনে দেখা হয়েছে, ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের জন্য জাতীয় কাঠামোগুলো কেমন এবং সেগুলো অন্যদের তুলনায় কীভাবে নতুন যুগের উদ্যোক্তাদের জন্য পথচলাকে নির্বিঘ্ন করছে। এ সূচকে ১১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশর অবস্থান ৯৬তম। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কেবল নেপাল ও পাকিস্তানের ওপরে রয়েছি আমরা। ভারত ও বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার চেয়ে আমরা যথাক্রমে ২১ ও ১৪ ধাপ পেছনে।

এ সূচকে মোট আটটি আলাদা বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিষয়ে আলাদা করে ১০০-তে নম্বর দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো অপ্রাতিষ্ঠানিক সংস্থা ও চর্চা; প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো, আইনি কাঠামো ও করব্যবস্থা; বাজার পরিস্থিতি; ভৌত অবকাঠামো; মানবপুঁজি; জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ; আর্থিক ব্যবস্থা এবং নেটওয়ার্কিং ও সহায়তা। এর বেশির ভাগেই আমাদের অবস্থা দুর্বল।

আমাদের স্কোর হলো অপ্রাতিষ্ঠানিক সংস্থা ও চর্চা (২.১); প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো, আইনি কাঠামো ও করব্যবস্থা (১০.০); বাজার পরিস্থিতি (৭.৮); ভৌত অবকাঠামো (৩২.১); মানবসম্পদ (৮.৫); জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ (১৪.৫); আর্থিক ব্যবস্থা (২০.১) এবং নেটওয়ার্কিং ও সহায়তা (১৪.৬)।

বড় দুর্বলতা যেখানে

আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে অপ্রাতিষ্ঠানিক সংস্থা ও চর্চার ক্ষেত্রে। এ অংশে গবেষকেরা জোর দিয়েছেন আইনি কাঠামোর দক্ষতা, যেমন সমস্যা সমাধান, দুর্নীতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা (করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স), করপোরেট সুশাসন, উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি নিয়ে সামাজিক ভাবনা, পেশাদারি ব্যবস্থাপনা এবং কার্যভার হস্তান্তর করার প্রবণতা। বলা বাহুল্য, এগুলোর কোনোটিতেই আমাদের ভালো করার কথা নয়। এ দেশে এখনো উদ্যোগ ও বাণিজ্যকে ভালো চেখে দেখা হয় না। কোনো একটি বিষয় খারাপ বোঝানোর জন্য এর সঙ্গে বাণিজ্য শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়, যেমন গ্রেপ্তার-বাণিজ্য, ঘুষ-বাণিজ্য। আবার করপোরেট সুশাসনের অভাবও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অনেকখানি পিছিয়ে দেয়।

অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের সরবরাহকারীকে পণ্য বা সেবা সরবরাহের ৪৫ দিনের মধ্যেও মূল্য পরিশোধ করে না। অনেকে এটিকে তিন মাস বা পরবর্তী কার্যাদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত করে ফেলে। আমি ব্যক্তিগতভাবে যেসব উদ্যোক্তাকে চিনি, তাঁদের অনেকের করপোরেট অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।

সমাজে দুর্নীতি সম্পর্কে ধারণা সর্বব্যাপী। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে আমাদের অবস্থান ১৪৭। দেশের প্রায় সবাই মনে করে, দুর্নীতির সঙ্গে সখ্য না করলে কোনো কাজই করা যায় না। কাজেই সূচকের এ অংশে আমাদের ২.১-এর বেশি অর্জন কঠিনই। এডিবির সদস্যদেশগুলোর এ বিষয়ের গড় ২১.৬!

প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো, আইনি কাঠামো ও করকাঠামো অংশে বিবেচনা করা হয়েছে সম্পত্তির মালিকানাপদ্ধতি, আইন প্রয়োগের দক্ষতা, করকাঠামোর বিকৃত প্রভাব ও প্রতিযোগিতার জন্য ভর্তুকি, করহার এবং আইনি কাঠামোর মধ্যে (নিবর্তনমূলক) নীতিমালাকে চ্যালেঞ্জ করার দক্ষতা। বলা বাহুল্য, দেশে সবচেয়ে বেশি মামলা হয় জমির মালিকানাকে ঘিরে। ক্ষমতাশালী, তস্করেরা প্রতিনিয়ত অন্যের জমি দখল করে নেয়, যা উদ্ধার করা প্রায়ই সম্ভব হয় না।

অন্যদিকে করব্যবস্থার নানা প্রতিকূলতা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে উঠে আসছে। কয়েক বছর আগে একজন ভ্যাট পরিদর্শক একটি সরবরাহকারী ট্রাক আটকে দেয় রাত সাড়ে ১২টার দিকে। পরিদর্শকের বক্তব্য ভ্যাট চালানটি আগের দিনের, এখন কার্যকর নয়। গাড়িচালক জানান, তিনি তিনটি চালান নিয়ে আগের দিন কারখানা থেকে বের হয়েছেন। যানজট ঠেলে তৃতীয় স্থানে যেতে তাঁর রাত ১২টা বেজে গেছে।

কিন্তু কোনোভাবেই ভ্যাট পরিদর্শককে এটা বোঝানো সম্ভব হয়নি। পরে তাঁকে ‘ম্যানেজ’ করতে হয়েছে। ব্যবসাবান্ধব নীতিমালার মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাসের নমুনা হলো সাম্প্রতিক কালে উদ্ভাবিত ‘ডিজিটাল বিজনেস আইডি’।

এ আইডি পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গে সেসব কাজগপত্রও দিতে হয়, যা তাঁকে ট্রেড লাইসেন্স পেতে দিতে হয়েছে! ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরও সব ডিজিটাল উদ্যোগের ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য অফিস ভাড়ার চুক্তিপত্র দিতে হয়। অথচ এখন ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে এমনকি বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিও গড়ে তোলা যায়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক অনলাইন ইভেন্ট হোস্ট করার প্ল্যাটফর্ম হপিনের স্থায়ী কোনো অফিস নেই, এর ২৫ জন স্থায়ী কর্মী ও অসংখ্য অস্থায়ী কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কাজ করেন। সর্বশেষ বিনিয়োগ রাউন্ডে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দামি স্টার্টআপ হয়েছে ৫৬৫ কোটি ডলারের মূল্যমানে। এ প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে ৭০ কোটি ডলারের ব্যবসা করেছে। ভুয়া কাগজপত্র ছাড়া বাংলাদেশে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের কোনো লাইসেন্স করা সম্ভব হবে না।

মানবপুঁজিতে পিছিয়ে

মানবপুঁজিতে আমাদের স্কোর মাত্র ৮.৫। এ খাতে এডিবির সদস্যদেশগুলোর গড় হলো ২৬.৫। দেশে মানসম্মত শিক্ষার যে অভাব, এটি তারই প্রকাশ। সূচকের এ অংশে মানসম্মত শিক্ষা, ভবিষ্যতের কর্মী তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তির হার, সেগুলোর আন্তর্জাতিক রেটিং, স্টেম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথমেটিকস) শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নে বরাদ্দ ইত্যাদি। দেশের দেড় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটিও কোনো বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিংয়ে ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জায়গা করে নিতে পারে না।

কিন্তু শিক্ষার্থীদের মধ্যে হানাহানি, রক্তপাত ও শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলিতে সেগুলো বৈশ্বিক তালিকায় একেবারে ওপরেই থাকতে পারবে। দেশের জিডিপির মাত্র ০.৩০ শতাংশ গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যয় হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রকৃত গবেষণায় অর্থায়নের পরিবর্তে অবকাঠামো নির্মাণে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নেই বললেই চলে।

সরকারের আইসিটি বিভাগ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েটে) একটি রোবোটিকস ল্যাব তৈরি করে দিয়েছে, যদিও বুয়েটে আলাদা কোনো রোবোটিকস বিভাগ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস ও মেকাট্রনিকস বিভাগের শিক্ষার্থীদের এ ল্যাব ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই!

বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকদের মান নিয়ে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর আক্ষেপের শেষ নেই। যে কারণে দেশে ৪৭% স্নাতক বেকার। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় সাধারণ মানুষের আগ্রহ কম। সব মিলিয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলায় দক্ষ কর্মশক্তি তৈরিতে বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়ছে।

জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণে মুখ্য ভূমিকা রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক-শিক্ষক, গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত পেশাদার, গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। এসব ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি মনোযোগের তীব্র অভাব রয়েছে। মানসম্মত স্নাতক তৈরি না হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমাগত নাজুক হয়ে পড়ছে।

আবার মেধাবী শিক্ষার্থী ও স্নাতকদের দেশে ধরে রাখতেও পারছে না বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক কালে তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের একাংশকে কম বেতনে ইউরোপের নানা দেশে যেমন জার্মানি, পোল্যান্ড এমনকি এস্তোনিয়ায় চাকরি নিয়ে চলে যেতে দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় মেধা ধরে রাখতে ব্যর্থ দেশীয় আইটি কোম্পানিগুলো তাই পিছিয়ে পড়ছে বৈশ্বিক ও স্থানীয় বাজারে।

দেশের সফটওয়্যার খাতের কাজগুলো বিদেশি কোম্পানির কাছে চলে যাচ্ছে। এ খাতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিল্প-বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া। প্রায় সোয়া শ বছর আগে প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক (পরে আচার্য) প্রফুল্ল চন্দ্র রায় শিল্প ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতার একটি দুর্দান্ত উদাহরণ সৃষ্টি করলেও তাঁর উত্তরসূরিরা এ কাজে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।

আর্থিক সূচকে দেখা গেছে, জিডিপির শতকরা হারের বিবেচনায় বেসরকারি খাতের ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তি, স্টার্টআপদের জন্য ভেঞ্চার কোম্পানির সংখ্যা ও বিনিয়োগ প্রদান এবং শেয়ারবাজারের মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ।

বলা বাহুল্য, দেশীয় ভেঞ্চার কোম্পানির সংখ্যার তুলনায় স্টার্টআপে বিনিয়োগ যত্সামান্য। অথচ দেশের স্টার্টআপগুলো এরই মধ্যে বেশ কিছু বৈদেশিক বিনিয়োগ জোগাড় করতে পেরেছে। কিন্তু এ জন্য তাদের বিদেশে কোম্পানি নিবন্ধন করতে হয়েছে। দেশীয় ভেঞ্চার কোম্পানিগুলোর দেশীয় ফার্মে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা এবং ভেঞ্চার বিনিয়োগকারীদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এলে এ সূচকে আমাদের আরও উন্নতি হতে পারে।

বাংলাদেশ যেখানে ভালো করেছে

বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো করেছে ভৌত অবকাঠামো, যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ও যাতায়াতব্যবস্থাকে বিবেচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে বাজার পরিস্থিতিতে আমাদের স্কোর কেবল নেপালের চেয়ে বেশি। অথচ আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজার নেপালের কয়েক গুণ।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিবেদনের গ্লোবাল ইনডেক্স ফর ডিজিটাল এন্ট্রাপ্রেনিউর সিস্টেমের স্কোর থেকে বোঝা যাচ্ছে, শিক্ষা ও জ্ঞান সৃষ্টিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ আদতে অনেক পিছিয়ে।

দেশে ডিজিটালাইজেশনের অনেক কাজ হলেও সেটি না ডিজিটাল উদ্যোগের প্রসারে কাজে লাগছে, না কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে, না আমাদের সামগ্রিক ডিজিটাল সংস্কৃতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।

অথচ সামান্য নজর দিলেই এ সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার অনেক সুযোগ সৃষ্টি হবে।

মুনির হাসান প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের প্রধান সমন্বয়ক