সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রেখে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এর পাশাপাশি উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা ও জনদুর্ভোগ নিরসনের উদ্দেশ্যে ধৈর্য ধারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। কোটাবিষয়ক চলমান আন্দোলন নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
মানবাধিকার কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের চলমান কোটাবিষয়ক আন্দোলন জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংসতামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ হওয়ায় কমিশন সাধুবাদ জানায় এবং একই সঙ্গে কোটাবিষয়ক সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে শিক্ষার্থীদের আন্তরিক আহ্বান জানানো হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা ১ জুলাই থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন। এ বিষয়ে মানবাধিকার কমিশন জানায়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। চরম বিঘ্ন ঘটছে পণ্য পরিবহন ও রোগীদের চিকিৎসায়। যার ফলে জনদুর্ভোগ চরম অবস্থায় পৌঁছেছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সকলের অধিকার এবং অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে মেধাভিত্তিক জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোটা–সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ের যথার্থ সমন্বয় ও সামঞ্জস্য বিধান করা গুরুত্বপূর্ণ।’
মানবাধিকার কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টির প্রচেষ্টায় মেধার যথাযথ মূল্যায়ন আবশ্যক। অপর দিকে কোটাব্যবস্থার সঙ্গে কর্মসংস্থানের অধিকার, প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার ও জাতীয় চেতনার সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে। কমিশন মনে করে, ২০১৮ সালের পরিপত্র বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিক সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে স্থায়িত্বশীল সমাধান আসতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তা সৃষ্ট সংকট সমাধানে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। এ অবস্থায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে অপেক্ষা করা এবং দায়িত্বশীল আচরণ করা সমীচীন। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখার প্রয়াসে সব পক্ষকে আন্তরিক, সুবিবেচনাপ্রসূত এবং কল্যাণমূলক অবস্থান গ্রহণের জন্য আন্দোলনকারী ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানায় কমিশন। কমিশন বিশ্বাস করে, দ্রুতই শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে এবং ক্লাস-পরীক্ষা নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হবে।