দেশজুড়ে বিভিন্ন দেয়ালে ছড়িয়ে থাকা আঁকা, লেখা ও ছবি নিয়ে এক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। রাজধানীর পান্থপথের দৃক পাঠভবনে শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় তরুণ প্রজন্মের উচ্চারণ করা ক্ষোভ, ক্রোধ, পরিকল্পনা ও প্রত্যাশার কথা। যার মাধ্যমে তাঁরা নতুন বাংলাদেশের রূপকল্প তৈরি করেছে।
বিশ্ব ব্যাংকের আয়োজনে সাজানো এ প্রদর্শনীতে আছে আপনজন হারানোর বেদনার কথাও। আছে সাম্য ও ন্যায়ের জোরালো বক্তব্য।
আজ শনিবার সকালে ‘পেইন্ট দ্য স্কাই, মেক ইট ইওরস’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, শিল্পমাধ্যম মানুষের মনের অভিব্যক্তি প্রকাশের শক্তিশালী ভাষা। ছবি কতটা ক্ষমতা রাখে এর উদাহরণ দিতে তিনি দুর্ভিক্ষ নিয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের, গ্রাম্য জীবন নিয়ে এস এম সুলতানের, স্পেনের গৃহযুদ্ধ নিয়ে পাবলো পিকাসোর শিল্পকর্মের উদাহরণ তুলে ধরেন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের দেয়ালে দেয়ালে যে ছবিগুলো তরুণেরা এঁকেছেন, তা অনেক বেশি শক্তিশালী। স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি করার সময় আমরা দেয়ালে লিখতাম। তখন বলা হতো “চিকা মারা”।’
দেয়ালে তরুণদের আঁকা ছবি নিয়ে প্রদর্শনীর পাশাপাশি এসব ছবির সংগ্রহ দিয়ে একটি বইও প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক তাঁর বক্তব্যের শুরুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণেরা অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তাঁরা নতুন বাংলাদেশের রূপকল্প তৈরি করেছেন। আবদুলায়ে সেক বলেন, প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘পেইন্ট ইওর স্কাই, মেক ইট ইওরস’–এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রতিরোধ ও আশার কথা।
আবদুলায়ে সেক জানান, বিশ্বব্যাংক অনেক দিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার (পার্টনারশিপ) হয়ে কাজ করছে। বিশ্বব্যাংক সব সময়ই তরুণদের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এখন দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।
প্রদর্শনীর কিউরেটর রেজাউর রহমান প্রথম আলোকে জানান, প্রদর্শনীতে ৬৪টি ছবি আছে। তবে দেয়াল লিখন ও দেয়ালের ছবি নিয়ে যে বইগুলো প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে স্থান পেয়েছে কয়েক শ ছবি। ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের ১১টি শহরের বিভিন্ন দেয়ালে আঁকা চিত্র ও লেখার ছবি তুলে বাঁধাই করে আয়োজন করা হয়েছে এ প্রদর্শনীর।
৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।