বিদ্যুৎ খাতে আদানি ‘একতরফা’ চুক্তির সুযোগ নিচ্ছে

ভারতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা চুক্তি নিয়ে জটিলতা কাটছে না। গত জুলাই থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার বাড়তি দাম ধরে বিদ্যুৎ বিল করছে আদানি। বকেয়া বিল পরিশোধে বাংলাদেশকে চাপও দিচ্ছে। ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে অর্ধেকের নিচে নামিয়েছে তারা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ‘একতরফা’ চুক্তির সুযোগ নিচ্ছে আদানি।

আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় নির্মিত। গত বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর আগেই কয়লার দাম নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। কয়লার চড়া দাম দিতে অস্বীকৃতি জানায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এরপর দাম কমাতে রাজি হয় আদানি। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম দামে কয়লা সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেয় তারা। তবে এক বছর পর এখন আবার ২২ শতাংশ বাড়তি দাম চাইছে আদানি।

বাড়তি দাম নিয়ে বিরোধ ও বকেয়া পরিশোধের তাগিদের মধ্যে সর্বশেষ গত ২৮ অক্টোবর পিডিবিকে চিঠি দেয় আদানি। এতে বলা হয়, পিডিবি যাতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা নেয়, নইলে আদানি ক্রয়চুক্তি অনুযায়ী ৩১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে বাধ্য হবে। কারণ, আদানি চলতি মূলধনের সংকটে রয়েছে।

বকেয়া বিল পরিশোধে বাংলাদেশকে চাপও দিচ্ছে। ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে অর্ধেকের নিচে নামিয়েছে তারা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ‘একতরফা’ চুক্তির সুযোগ নিচ্ছে আদানি।

পিডিবি সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ আমদানিতে আদানির নামে ঋণপত্র (এলসি) খোলার কথা ছিল ৩০ অক্টোবরের মধ্যে। এই ঋণপত্র খোলার কথা ছিল কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে; কিন্তু সেটা হয়নি। পিডিবি আরও সময় চেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে একটি ইউনিট বন্ধ করে দিয়েছে আদানি। ৭৫০ মেগাওয়াট সক্ষমতার চালু ইউনিট থেকেও উৎপাদন হচ্ছে ৫০০ মেগাওয়াটের একটু বেশি। একই সময়ে কয়লার অভাবে বন্ধ রয়েছে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র। বকেয়া জটিলতায় উৎপাদন কমেছে রামপাল ও বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এতে গতকাল ঘণ্টায় দেড় হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে।

পিডিবি সূত্র বলছে, পটুয়াখালীর পায়রায় নির্মিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতি টন কয়লার দাম নিচ্ছে ৭৫ মার্কিন ডলার। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস এস পাওয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি টন কয়লার দাম ৮০ ডলারের কম। আর আদানি প্রতি টন কয়লার দাম চাইছে ৯৬ ডলার। তার মানে প্রতি টন কয়লায় পায়রা ও রামপালের চেয়ে ২১-১৬ ডলার বাড়তি চাইছে তারা।

কয়লাভিত্তিক আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। এতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় গত বছরের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিটে শুরু হয় একই বছরের জুনে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে পিডিবির সঙ্গে বৈঠক করে কয়লার দামের বিষয়টি সুরাহা করেছিল আদানির প্রতিনিধিদল। এর পরিপ্রেক্ষিতে এক বছরের জন্য কয়লার প্রকৃত দামে বিল করেছে তারা। গত জুলাই থেকে চুক্তি অনুসারে কয়লার বিল করছে আদানি।

৭৫০ মেগাওয়াট সক্ষমতার চালু ইউনিট থেকেও উৎপাদন হচ্ছে ৫০০ মেগাওয়াটের একটু বেশি। একই সময়ে কয়লার অভাবে বন্ধ রয়েছে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র। বকেয়া জটিলতায় উৎপাদন কমেছে রামপাল ও বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এতে গতকাল ঘণ্টায় দেড় হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকায় আদানি গ্রুপের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে লিখিত উত্তর পাঠিয়েছে আদানি। এতে বলা হয়, জুলাই থেকে কয়লার ‘প্রাইস ইনডেক্স’ বা মূল্যসূচক অনুসারে বিল জমা দিচ্ছে আদানি। কোনো কিছু পরিবর্তন করা হয়নি। তাই কয়লার দাম বেশি ধরে বিল জমা দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।

বিদ্যুৎ বিভাগ ও আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি সূত্র বলছে, প্রতি সপ্তাহে আদানির বিল পাওনা হচ্ছে ২ কোটি ২০ লাখ থেকে আড়াই কোটি ডলার। এর বিপরীতে পিডিবি তাদের পরিশোধ করছে ১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের মতো। আগে পরিশোধের পরিমাণ আরও কম ছিল। এতে অক্টোবর পর্যন্ত তাদের পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৫ কোটি ডলার।

এর আগে ফেব্রুয়ারিতে পিডিবির সঙ্গে বৈঠক করে কয়লার দামের বিষয়টি সুরাহা করেছিল আদানির প্রতিনিধিদল। এর পরিপ্রেক্ষিতে এক বছরের জন্য কয়লার প্রকৃত দামে বিল করেছে তারা। গত জুলাই থেকে চুক্তি অনুসারে কয়লার বিল করছে আদানি।

পিডিবির দুজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আদানিসহ ভারতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের বকেয়া বিল পরিশোধে ব্যাংকে এক হাজার কোটি টাকা জমা দিয়ে রেখেছে পিডিবি। ডলারের সংকট থাকায় ব্যাংক নিয়মিত বিল পরিশোধ করতে পারছে না; আর আদানি কয়লার বাড়তি দাম ধরে বিল জমা দিলেও তারা সেটি এখন পর্যন্ত আমলে নিচ্ছে না। প্রয়োজনে চুক্তি সংশোধন করার ব্যবস্থা করতে হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, আদানি বিল জমা দিলেই হবে না। বাড়তি দাম দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কয়লার বাড়তি দামের বিষয়টি পিডিবি দেখবে। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে পেশাদারির সঙ্গে নিরপেক্ষতা বজায় রেখেই চুক্তির বিষয়গুলো দেখা হবে। ইতিমধ্যে চুক্তি পর্যালোচনা কমিটি এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

চুক্তিতেই বাড়তি সুবিধা আদানির

কয়লার দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া (নিউক্যাসল ইনডেক্স) ও ইন্দোনেশিয়ার ইনডেক্স (সূচক) বিবেচনায় নেওয়া হয়। এ দেশ দুটি বিশ্বে কয়লার বড় রপ্তানিকারক। তাদের কয়লার দাম নিয়মিত অনলাইন সূচকে প্রকাশ করা হয়। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ঘোষিত দামের আড়ালে বিশেষ ছাড় থাকে। কয়লা কেনার সময় সমঝোতার ওপর ছাড়ের বিষয়টি নির্ভর করে। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়লা কেনে বিশেষ ছাড়ে।

বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবির দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, অন্য সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা কেনার বিল ধরেই খরচ হিসাব করা হয়। তবে আদানির সঙ্গে পিডিবির বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি অনুসারে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার সূচকের মধ্যে গড় করে মূল্য হিসাব করা হবে। গড় দাম ধরার কারণে আদানির বিলে বাড়তি দাম আসছে। আদানি বিশেষ ছাড়ে কয়লা কিনলেও সেই সুবিধা পাবে না পিডিবি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আরও বলছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনায় আদানির সঙ্গে তাড়াহুড়া করে ২০১৭ সালে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি হয়। ওই সময় দেশে আমদানি করা কয়লানির্ভর কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়নি। তাই কয়লার দামের বিষয়টি নিয়ে তখন পিডিবি ভালো করে যাচাই-বাছাই করতে পারেনি। আদানির নিজস্ব কয়লাখনি ও ভারতে বড় একাধিক কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা করতে হয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রভাব কাজে লাগিয়ে পিডিবির অনভিজ্ঞতার সুযোগটা নিয়েছে আদানি। পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসার পর কয়লার দামের বিষয়টি পিডিবির নজরে আসে।

গড় দাম ধরার কারণে আদানির বিলে বাড়তি দাম আসছে। আদানি বিশেষ ছাড়ে কয়লা কিনলেও সেই সুবিধা পাবে না পিডিবি।

পিডিবির দাবি, আন্তর্জাতিক দুই সূচকে বিভিন্ন মানের (ক্যালরিফিক ভ্যালু) কয়লার দাম প্রকাশ করা হয়। দুই সূচকে উন্নতমানের কয়লার দাম ধরে তার গড় হিসাব করছে আদানি। তারা যে মানের কয়লা ব্যবহার করছে, তার দাম হিসাব করা হলে প্রতি টনে ২০ থেকে ২৫ ডলার দাম কমে যাবে।

এ বিষয়ে আদানি কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোকে বলেছে, তারা ক্যালরিফিক ভ্যালু অনুযায়ী দাম ধরছে। একটি ক্যালরিফিক ভ্যালুর কয়লা ব্যবহার করে অন্য আরেকটি উচ্চ ক্যালরিফিক ভ্যালুর কয়লার দাম ধরে হিসাব করার কোনো সুযোগ নেই।

আদানির এ বক্তব্য মানতে নারাজ পিডিবির একজন কর্মকর্তা। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাজারে এক কেজি আকারের ইলিশ মাছের দাম দুই হাজার টাকা; আর ৭০০ গ্রাম আকারের ইলিশ মাছের দাম ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা; কিন্তু এক কেজি আকারের বাজারদর ধরে ৭০০ গ্রামের মাছের দাম হিসাব করা হলে এটি হবে ১ হাজার ৪০০ টাকা। কয়লার ক্ষেত্রে এমনটাই করছে আদানি।

আদানি বিল জমা দিলেই হবে না। বাড়তি দাম দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কয়লার বাড়তি দামের বিষয়টি পিডিবি দেখবে। আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে পেশাদারির সঙ্গে নিরপেক্ষতা বজায় রেখেই চুক্তির বিষয়গুলো দেখা হবে। ইতিমধ্যে চুক্তি পর্যালোচনা কমিটি এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান

আরও কিছু সুবিধা নিয়েছে আদানি

বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, আদানির বকেয়া জমছিল অনেক দিন ধরেই। তবে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আদানি বকেয়া আদায়ে চাপ বাড়িয়েছে। বকেয়া পরিশোধে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে আদানি। পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা চিঠির জবাবও দিয়েছেন। এ ছাড়া গত আগস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক সপ্তাহের মাথায় বিদ্যুৎ বিক্রির বিকল্প বাজার তৈরি করে আদানি। ভারতে চুক্তি সংশোধন করে বিদ্যুৎ বিক্রির সুযোগ তৈরি করেছে তারা।

চুক্তি অনুসারে সব বিদ্যুৎকেন্দ্রেরই ক্যাপাসিটি চার্জ বা কেন্দ্রভাড়া আছে। যেটি বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও দিতে হয়, না করলেও দিতে হয়। প্রথম কয়েক বছর এটি বেশি থাকে, ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আদানির চুক্তিতে প্রথম সাত বছর এটি একই ধরা আছে। এরপর ধীরে ধীরে এটি কমতে থাকবে। এ পর্যায়ে চুক্তি বাতিল করলে তাতে পিডিবির লোকসান হবে।

আদানি ও পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে পিডিবির করা বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে মিলে পর্যালোচনা করে দেখেছে প্রথম আলো। এতে দেখা যায়, অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আদানি তার সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করেছে চুক্তিতে। দেরিতে বিল পরিশোধের জন্য বছরে ১৫ শতাংশের চড়া সুদ ধরা আছে আদানির চুক্তিতে, যা পায়রায় নেই। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রে সব খরচের দায় পিডিবির। আদানির কেন্দ্রে বিনিয়োগের বিপরীতে সব সুদের হার ভারত নির্ধারণ করবে, বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেই। পানি ব্যবহারেরও খরচ দিতে হবে, যা পায়রায় নেই। এ ছাড়া কয়লা আমদানি, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও পরিবহনে আদানি গ্রুপের নিজেদের অন্য দুটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে। সব তাদের নিজস্ব কোম্পানি হওয়ায় পুরো বিষয়টিতে অস্বচ্ছতা আছে। জাতীয় স্বার্থে এ চুক্তি পর্যালোচনা করা উচিত বলে মত দিয়েছেন বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞরা।

আদানির সঙ্গে চুক্তিতে অনেক ধরনের বাড়তি খরচ ধরা হয়েছে। পদে পদে সুবিধা নিয়েছে তারা। এর ফলে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার নিয়ে যাচ্ছে আদানি। এটি একটি একতরফা চুক্তি, সেই সুযোগটাই নিচ্ছে আদানি। তাই এ চুক্তি থেকে অবিলম্বে সরে আসা দরকার সরকারের। সরকার বাতিল করতে না পারলে আদালতে যাবে ক্যাব।
জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম

চুক্তি পর্যালোচনা করছে কমিটি

গত আওয়ামী লীগ সরকার দরপত্র ছাড়া চুক্তি করতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১) করেছিল। এই আইনের অধীন নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতে যাওয়া যাবে না। এ কারণে এটি দায়মুক্তি আইন হিসেবে পরিচিতি পায়। এই আইনের অধীন করা চুক্তি পর্যালোচনা করতে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পর্যালোচনা কমিটির সভায় ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত ও নথি কমিটিকে সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে ভারতের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র। কমিটিকে সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করতে নির্দেশনা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, আদানির সঙ্গে চুক্তিতে অনেক ধরনের বাড়তি খরচ ধরা হয়েছে। পদে পদে সুবিধা নিয়েছে তারা। এর ফলে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার নিয়ে যাচ্ছে আদানি। এটি একটি একতরফা চুক্তি, সেই সুযোগটাই নিচ্ছে আদানি। তাই এ চুক্তি থেকে অবিলম্বে সরে আসা দরকার সরকারের। সরকার বাতিল করতে না পারলে আদালতে যাবে ক্যাব।