স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহিমা খানমের। পেয়েছিলেন বিবাহবিচ্ছেদের চিঠি। তারপর ঢাকার গুলশানের নিকেতনে স্বামী জোবায়ের হোসেনের কর্মস্থলে গিয়ে কাচের বোতল ভেঙে নিজের পেটেই ঢুকিয়ে দেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শুক্রবার রাত নয়টায় গুলশানের নিকেতন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। মাহিমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় রাত ১১টার দিকে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানিয়েছেন মাহিমার স্বামী জোবায়ের হোসেন। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা তাঁকে আটক করেছে।
পুলিশ বলছে, মাহিমার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলশান থানা-পুলিশের একটি দল যাচ্ছে। মাহিমার মা সেলিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মেয়েকে জোবায়ের হত্যা করেছেন।
আটক হওয়ার আগে জোবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চতুর্থ বর্ষে পড়েন।
পাশাপাশি গুলশানের নিকেতনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তবে তাঁর স্ত্রী মাহিমা গৃহিণী। গত মে মাসে তাঁরা বিয়ে করেন। থাকতেন উত্তর বাড্ডা এলাকায়।
বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। এ কারণে তিনি ৬ ডিসেম্বর বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। ওই সময় মাহিমা নিজের হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সবকিছু বিবেচনা করে তিনি ২৬ ডিসেম্বর তিনি বিবাহবিচ্ছেদের চিঠি পাঠান।
জোবায়েরের ভাষ্য, মাহিমা শুক্রবার রাতে নিকেতনের কর্মস্থলের সামনে গিয়ে মুঠোফোনে কল করেন। তখন তিনি কার্যালয়ে ছিলেন না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি সেখানে কাচের বোতল ভেঙে নিজের পেটে আঘাত করেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি মাহিমাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
মাহিমার মা সেলিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, জোবায়ের তাঁর মেয়েকে ধারালো কিছু দিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচার করতেই হাসপাতালে নেওয়ার নাটক করছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মাহিমা খানমের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামী জোবায়েরকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি গুলশান থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে। থানা-পুলিশের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করা হবে।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ শাহানুর রহমান মধ্যরাতে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে হাসপাতালে পুলিশের একটি দল গিয়েছে। এখনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।