চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত অধ্যাপককে স্থায়ীভাবে অব্যাহতির দাবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত রসায়ন বিভাগের এক অধ্যাপককে স্থায়ীভাবে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবি নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রসায়ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী।

রোববার সকাল ১০টায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। শেষ হয় বেলা তিনটায়। অভিযুক্ত ওই অধ্যাপককে স্থায়ী অব্যাহতি না দেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর এক সহপাঠী প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে বিভাগের সাবেক ছাত্রীরা জানিয়েছেন। এসব অভিযোগ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এই শিক্ষককে তাঁরা আর বিভাগের দেখতে চান না। তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ক্লাসে ফিরবেন না।

গত ৩১ জানুয়ারি রসায়ন বিভাগের ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেন এক ছাত্রী। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যোগ দিচ্ছেন। প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনও। অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচি

অভিযুক্ত ওই অধ্যাপকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্যাম্পাসে নারীদের নিরাপত্তা জোরদারের দাবিতে আলাদাভাবে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা–কর্মীরা। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। ছাত্র ইউনিয়নের ব্যানারে হওয়া এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) নেতা–কর্মীরা।

আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে সামনে এ কর্মসূচি হয়। এতে ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি প্রত্যয় নাফাকের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন আহমদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পিসিপির সাধারণ সম্পাদক অন্তর চাকমা, ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সুদীপ্ত চাকমা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সোহেল রানা প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে প্রত্যয় নাফাক বলেন, ‘পত্রিকার পাতা খুললে আমরা দেখতে পাই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিয়োগ–বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ। শিক্ষকেরাও নারী নিপীড়নের মতো ঘটনার সঙ্গে জড়িত হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে একটি ভাঙাচোরা গাড়ি নিয়ে ঘোরা ছাড়া আর কিছু করছে না। ক্যাম্পাসে নারীদের নিরাপত্তা দিতে তারা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।’

মানববন্ধন শেষে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেন নেতা–কর্মীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ও প্রশাসনিক ভবন হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।