ফারাজ আইয়াজ হোসেনের ২৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফারাজের বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন। পাশে শিল্পী প্রশান্ত কর্মকার, তানিয়া হক, মার্কিন দূতাবাসের সহকারী সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা মার্জরি স্টার্ন এবং তাঁর মা ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন রহমান
ফারাজ আইয়াজ হোসেনের ২৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফারাজের বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন। পাশে শিল্পী প্রশান্ত কর্মকার, তানিয়া হক, মার্কিন দূতাবাসের সহকারী সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা মার্জরি স্টার্ন এবং তাঁর মা ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন রহমান

ফারাজ সবাইকে গর্বিত করেছেন, দিয়েছেন শান্তির বার্তা

ফারাজ আইয়াজ হোসেন যখন নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হন, তখন তিনি ছিলেন ২০ বছরের তরুণ। গত সাত বছরে ফারাজ কারও স্মৃতি থেকে মুছে যাননি। তিনি তাঁর পরিবারকে গর্বিত করেছেন, জীবন দিয়ে বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিয়ে গেছেন।

ফারাজের জন্মদিনে তাঁকে এভাবেই স্মরণ করা হলো। আজ ১৫ এপ্রিল। ফারাজের ২৭তম জন্মদিন। রাজধানীর সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে শিল্পী প্রশান্ত কর্মকারের একক চিত্র প্রদর্শনী উৎসর্গ করা হয়েছে ফারাজের নামে।

মোমবাতি প্রজ্জ্বালন করে ও কেক কেটে এই প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন ফারাজের মা ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন রহমান। প্রদর্শনীতে শিল্পী প্রশান্ত কর্মকার ফারাজকে নানাভাবে চিত্রায়িত করেছেন। ফারাজের পাশাপাশি তাঁর নানা ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহামন এবং খালা প্রয়াত শাজনীন তাসনিম রহমানের ছবিও রয়েছে প্রদর্শনীতে।

ট্রান্সকম গ্রুপের স্ট্র্যাটেজি ও ট্রান্সফরমেশন বিভাগের প্রধান ও ফারাজের বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন বলেন, তাঁকে বা তাঁর মাকে (সিমিন রহমান) পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় কে কোন পদে আছেন, সে হিসেবে। কিন্তু তাঁরা পেশাগত দিক থেকে যে পদেই থাকুন না কেন, তাঁদের কাছে যে পরিচয় সবচেয়ে বেশি বিবেচ্য, সেটা হলো তাঁরা ফারাজের মা ও ফারাজের ভাই। এই পরিচয় তাঁদের অত্যন্ত গর্বিত করে।

প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন রহমানসহ অন্যরা

২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ফারাজ। সে বছরই ফারাজ তাঁর শেষ জন্মদিন উদ্‌যাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রে বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেনের সঙ্গে। সেই স্মৃতিচারণা করে যারেফ বলেন, ফারাজকে তো তাঁর পরিবার ভুলতে পারবে না। কিন্তু গত সাত বছরে তাঁরা ভেবেছেন, ফারাজকে মানুষ কীভাবে মনে রাখবে, ফারাজকে কেউ ভুলে যাবে কি না। এ ভয় কাজ করত। কিন্তু এই বছরগুলোতে তা হয়নি। প্রশান্ত কর্মকারসহ অনেকেই নানাভাবে ফারাজকে মনে রেখেছে। এটা তাঁদের জন্য অনেক বড় উপহার। গত সাত বছরে ফারাজ তাঁদের আরও গর্বিত করেছেন।

মার্কিন দূতাবাসের সহকারী সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা মার্জরি স্টার্ন বলেন, ফারাজের সাহসিকতার কথা সবাই জানে। সন্তান হারানোর বেদনা অনেক। প্রদর্শনীর বিষয়ে তিনি বলেন, মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মসূচিতে অংশ নেন শিল্পী প্রশান্ত কর্মকার। সেই কর্মসূচির একটি অংশ ছিল শান্তি ও নিরাপত্তা। তিনি আজ এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে সেই শান্তিকে তুলে ধরেছেন।

ফারাজকে নিয়ে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান। তিনি বলেন, ফারাজ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শান্তি দিয়ে গেছেন। ফারাজের কাজ সবাই মনে রাখবে।

ফারাজ আইয়াজ হোসেনের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়। আজ ১৫ এপ্রিল তাঁর ২৭তম জন্মদিন

সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শিল্পী প্রশান্ত কর্মকার বলেন, এই প্রদর্শনী তিনি ফারাজকে উৎসর্গ করেছেন। ফারাজের কাছ থেকে শিখেছেন, কীভাবে বন্ধুদের ভালোবাসতে হয়। ফারাজ বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিয়ে গেছেন।

প্রদর্শনী উদ্বোধন আয়োজনের শুরুতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি গান পরিবেশন করেন শিল্পী শহিদুল হক।