রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তার অনুসন্ধানে নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব–বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের ওঠা অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ববি হাজ্জাজ গত সেপ্টেম্বরে রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাহেদুল আজম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. ওমর শরীফ। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী চৌধুরী নাসিমা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ ও শফিকুর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইনজীবী চৌধুরী নাসিমা প্রথম আলোকে বলেন, ওই বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে দুদক। কার্যক্রম শুরু করেছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন। শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়েছেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব–বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান রিট আবেদনকারীর অন্যতম আইনজীবী মো. ওমর শরীফ।
গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামের একটি ওয়েবসাইটে গত ১৭ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রিটে বলা হয়, এতে অভিযোগ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকসহ পাঁচ বিবাদীর বিরুদ্ধে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কথিত আত্মসাতের।
রিটে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রকল্প পরিচালক, শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৪ জনকে বিবাদী করা হয়।
গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামের ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে গত আগস্টে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছিল, এমন খবরকে ‘গুজব’ ও ‘মিথ্যা’ বলে গত ২৫ আগস্ট মন্তব্য করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সেদিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি বলেছিলেন, ‘নির্দ্বিধায় বলতে পারি, এটি গুজব ও মিথ্যা। এ বিষয়ে আমাদের কোম্পানি রোসাটম (রূপপুর প্রকল্পে কাজ করছে) ইতিমধ্যে বিবৃতি দিয়েছে।’